|
|
|
|
রাস্তা সংস্কারের দাবিতে ফের অবরোধ আন্দোলন দাসপুরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
রাস্তা সংস্কারের দাবিতে পাঁচ মাসের ব্যবধানে দু’দুবার বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবিকে সমর্থন করল রাজনৈতিক দলগুলিও।
প্রায় ৪ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সুলতাননগর-গোপীগঞ্জ সড়কে পূর্ত দফতরের অধীন দশ কিলোমিটার ওই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল গত বছরের জুন মাসে। কথা ছিল ওই রাস্তা চওড়ায় ১৮ ফুট এবং সড়ক সংলগ্ন একাধিক পুকুর পাথর দিয়ে বাঁধানো হবে। এমনকী রাস্তার দু’পাশে তিন ফুট করে মোরাম দেওয়া হবে। দফতর সূত্রে খবর, বাস্তবে তা হয়নি। অভিযোগ, পূর্ত দফতরেরই একাংশের মদতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থা অত্যন্ত নিম্নমানের কাঁচামাল দিয়ে রাস্তা তৈরি করায় এক বছরের মধ্যেই রাস্তাটির করুণ দশা প্রকট হয়। প্রতিবাদে মাস পাঁচেক আগে রাস্তা কেটে ওই সড়ক দু’দিন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তখন পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা নতুন করে রাস্তা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তখন নামমাত্র দু’এক জায়গায় সংস্কার করেই দায় সারে সংস্থাটি। আর পূর্ত দফতরের আধিকারিকরাও পুরো কাজ শেষ হওয়ার আগেই বরাদ্দ টাকার প্রায় সবই (চার কোটি) দিয়ে দেন। |
|
এমনই বেহাল রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র। |
তারপর থেকে ক্রমশ আরও খারাপ হয়েছে ওই রাস্তা। সংস্কারের দাবি জানালে মিলেছে প্রতিশ্রুতি। বাসিন্দাদের দাবি তাই নিতান্ত বাধ্য হয়ে ফের সুলতাননগর-গোপীগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকার মানুষ। বৃহস্পতিবার ওই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন কংগ্রেস নেতা তারাপদ পাত্র, কৌশিক গোস্বামী। তাঁরা নতুন করে সংস্কারের দাবিতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ দেখান। দাসপুর ২ ব্লকের সদর দফতর সোনাখালি যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম ওই সড়কটি। ওই রাস্তা দিয়ে ব্লকের চাঁইপাট, খেপুত, বেনাই, নিশ্চিন্তপুর-সহ একাধিক পঞ্চায়েত এলাকার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। তা ছাড়া দাসপুর ১ ব্লক-সহ মহকুমার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারাও পেশার তাগিদে ওই সড়ক দিয়ে নিত্য যান। এ ছাড়া দূরপাল্লা ও স্থানীয় রুটের প্রায় গোটা তিরিশেক বাস চলে। যাতায়াত করে অসংখ্য ট্রেকার, অটো। এমনই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বহু আন্দোলনের পর কাজ শুরু হলেও রাস্তাটির বেশির ভাগ যায়গাই এখনই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ঘটনায় যারপরনাই ক্ষুব্ধ কংগ্রেস, তৃণমূল থেকে সিপিএমও। তৃণমূল পরিচালিত দাসপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অরুণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগেও আন্দোলন হয়েছিল। এ দিন ফের আন্দোলন হয়েছে। আমরা পূর্ত দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাস্তাটি সর্ম্পূণ সংস্কারের দাবি জানাব।” কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক তারাপদ পাত্রের কথায়, “পূর্ত দফতরের এক শ্রেণির অফিসার ঠিকাদার সংস্থা থেকে উপঢৌকন নেওয়ার জন্যই রাস্তাটির এই অবস্থা। যদি সংস্কার না হয় তা হলে ফের আন্দোলন শুরু করব।” সিপিএমের ললিতকুমার শী-র কটাক্ষ, “যে দফতরের দেখভালের কথা-সেই দফতরের লোকজনই যদি ঘুমিয়ে থাকে তাহলে আর কী হবে?”
এ দিন রাস্তা অবরোধের পর কংগ্রেসের তরফে বিডিওর কাছে ডেপুটেশও দেওয়া হয়। বিডিও অরূপ মণ্ডল রাস্তাটির বেহাল দশা স্বীকার করে বলেন, “ডেপুটেশন পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখার জন্য বলেছি।” পূর্ত দফতরের সহাকরি বাস্তুকার লক্ষীকান্ত মণ্ডল বলেন, “রাস্তাটি বারবার খারাপ হয়ে যাচ্ছে শুনেছি। খোঁজ নিচ্ছি।” |
|
|
|
|
|