এক দিনের ক্রিকেটের দলে জায়গাটা তিনি মোটামুটি পাকা করে ফেলেছেন। এ বার রোহিত শর্মার লক্ষ্য, ভারতীয় টেস্ট দলে নিজের জায়গাটা পাকা করার। এবং সে জন্য যেন তিনি আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের চেয়েও বেশি করে তাকিয়ে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের দিকে।
আপনি তো ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছিলেন। আবার কি ও দেশে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন? প্রশ্ন শুনে আনন্দবাজারকে রোহিত শর্মা বললেন, “অবশ্যই। দক্ষিণ আফ্রিকা হল বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম শক্তিশালী দল। ওদের বিরুদ্ধে খেললে আমরা নিজেদের শক্তিটা বুঝতে পারব। ওর পরে আমাদের খেলতে হবে নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। থাকছে বিশ্বকাপও। আমাদের উপর অনেক আশা আছে সবার। সেগুলো পূরণ করা যাবে, যদি সেরা দলগুলোর বিরুদ্ধে খেলে আমরা তৈরি হতে পারি।”
দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় দলের আশেপাশে থাকলেও নিজের জায়গাটা সে ভাবে বানিয়ে নিতে পারেননি রোহিত। এক দিনের দলে মিডল অর্ডারে বার বার সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ওপেন করার পর থেকে ছবিটা বদলে গিয়েছে। আগে রোহিতের বিরুদ্ধে বলা হত, সুযোগ পেয়ে রান পাচ্ছেন না। এখন বলা হচ্ছে, রান পেলেও সেঞ্চুরি আসছে না সে ভাবে। কী বলবেন? “লোকে একটা না একটা খুঁত সব সময়ই বার করবে আপনার সম্পর্কে। আগে বলা হত, আমি রান পাচ্ছি না। এখন বলা হয়, আমি সেঞ্চুরি পাচ্ছি না। সমালোচকরা যা খুশি বলুক, আমি আর পাত্তা দিই না।”
মিডল অর্ডার আর ওপেনিংএই দুই জায়গায় মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়নি? প্রস্তুতিটাই বা কী রকম ছিল? ফোনে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে রোহিত বললেন, “হ্যাঁ, তফাত তো আছেই। তবে হোমওয়ার্কটা ঠিকঠাক করলে, নেট প্র্যাকটিসে সময় দিলে সমস্যা হয় না। আসলে ক্রিকেট এখন অনেক বদলে গিয়েছে। সব ব্যাটসম্যানকে সব জায়গায় খেলার জন্য তৈরি থাকতে হয়।”
রোহিত জানাচ্ছেন, আগে তিনি ওপেন করলেও ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ওপেন করার ব্যাপারটা সর্ম্পূণ আলাদা ছিল। “আমি আগেও ওপেন করেছি। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ব্যাপারটা অন্য রকম ছিল। আসলে একে ইংল্যান্ড, তায় জুন মাস। পরিবেশটা সম্পূর্ণ অন্য রকম। আর ম্যাচের দিন সকালে আমি জানতে পারি যে ওপেন করতে হবে। দলে মুরলী বিজয় এবং শিখর ধবনের মতো নিয়মিত ওপেনাররা ছিল। আমার মনে হয়, টিম ম্যানেজমেন্ট ভেবেছিল, আমাকে দিয়ে ওপেন করালে কম্বিনেশনটা ঠিকঠাক হবে।”
আপনি একশো এক দিনের ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। কিন্তু টেস্ট খেলেননি। হতাশ লাগে না? “অবশ্যই লাগে,” বলছিলেন রোহিত, “কয়েক বার টেস্ট খেলার খুব কাছাকাছি এসেও খেলতে পারিনি। হতাশ তো হবই। তবে আমার হাতে তো কিছু নেই। কিন্তু পাশাপাশি আমি এও মনে করি, আমার কাছে এখনও অনেক সময় আছে। আমি চেষ্টা করে যাব ধারাবাহিক ভাবে রান করতে। এই মরসুমে ভারতের বেশ কিছু টেস্ট সিরিজ আছে। দেখা যাক কী হয়।”
অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এবং কোচ ডানকান ফ্লেচার। এই দু’জন আপনার ক্রিকেট কেরিয়ারে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন? রোহিতের জবাব, “অধিনায়ক হিসাবে ধোনি দুর্দান্ত। ও জানে কী ভাবে এক জন প্লেয়ারের মধ্যে থেকে সেরাটা বার করে আনতে হয়। আর পুরো ব্যাপারটা ও খুব মজাদার ভাবে করে। এই তো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আমরা খুব মজা করেছি। পাশাপাশি আবার আবার নিজেদের সেরাটা দিয়ে চ্যাম্পিয়নও হয়েছি। সব ফর্ম্যাটে ধোনি জিতেছে। ও গ্রেট ক্যাপ্টেন।”
কোচ ফ্লেচার সম্পর্কে রোহিতের মত হল, “বাইরে থেকে মনে হয় টিমের ব্যাপারে ফ্লেচার বিশেষ কথা-টথা বলেন না। উনি মিডিয়াকেও এড়িয়ে চলেন। কিন্তু ফ্লেচার জানেন, কী করে কাজটা করতে হয়। আমাদের পারফরম্যান্সের মানটা বাড়ানোর ক্ষেত্রে ওঁর ভূমিকা অনেক।”
|