|
|
|
|
২৩ নম্বরে বাংলা |
১০০ দিনের কাজে পিছিয়ে মহিলারা
সঞ্জয় চক্রবর্তী • কলকাতা |
এমনিতেই একশো দিনের কাজে পশ্চিমবঙ্গে সামগ্রিক ছবিটা তেমন উজ্জ্বল নয়। তার উপরে ওই প্রকল্পে মহিলাদের কাজ পাওয়ার নিরিখে এ রাজ্যের ক্রমাবনতি সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
এই ক্ষেত্রে গত বছরের থেকে এক ধাপ নেমে এ বারে সর্বভারতীয় স্তরে দেশের মধ্যে একেবারে ২৩ নম্বরে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।
পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর, চলতি আর্থিক বছরের প্রথম পাঁচ মাসে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ওই প্রকল্পে মহিলাদের কর্মসংস্থানের হার ৫৬.১৭ শতাংশ। কিন্তু এই সময়ে এ রাজ্যে মাত্র ৩৫.২% মহিলা কাজ পেয়েছেন। ওই প্রকল্পে মহিলাদের কাজ পাওয়ার নিরিখে জাতীয় স্তরে এ রাজ্য ২৩ নম্বরে নেমে আসা নিয়ে অবশ্য পঞ্চায়েত দফতরের কর্তাদের একাংশ বিশেষ বিস্মিত নন। কারণ তাঁদের বক্তব্য, গত আর্থিক বছরেও এই ক্ষেত্রে রাজ্যের স্থান ছিল ২২ নম্বরে। কারণ হিসেবে তাঁদের বক্তব্য, এ রাজ্যে বাড়ির পুরুষরা পারতপক্ষে মহিলাদের শ্রমসাধ্য কাজে পাঠাতে চান না। আর ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বেশির ভাগ কাজই করতে হয় মাঠেঘাটে, গায়ে-গতরে খেটে। সেই কারণেই পশ্চিমবঙ্গে ওই প্রকল্পে মহিলাদের যোগদান অতটা আশাব্যঞ্জক নয় বলেই দাবি করলেন পঞ্চায়েত দফতরের কর্তাদের একাংশ।
কেবল মহিলাদের কাজ পাওয়ার ব্যাপারেই নয়, চলতি আর্থিক বছরের প্রথম পাঁচ মাসে শ্রমদিবস সৃষ্টিতেও পিছিয়ে রয়েছে রাজ্য। একই সময়ে তামিলনাড়ু ১৫ কোটি ৫৩ লক্ষ, রাজস্থান ৮ কোটি ৯০ লক্ষ, অন্ধ্রপ্রদেশ ১৫ কোটি ৭৮ লক্ষ শ্রমদিবস সৃষ্টি করলেও পশ্চিমবঙ্গে সৃষ্টি হয়েছে মাত্র ২ কোটি ৩৫ লক্ষ। এ রাজ্যে পাঁচ মাসে মাত্র ৮২ লক্ষ ৫৮ হাজার মহিলা কাজ পেয়েছেন। দফতরের খবর, গত বছর প্রথম পাঁচ মাসে ২০ কোটি ১৩ লক্ষ শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছিল। এর মধ্যে মহিলা কাজ প্রাপকের সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৭৯ লক্ষ।
একশো দিনের প্রকল্পে মহিলাদের কর্মসংস্থান আশাব্যঞ্জক না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে পঞ্চায়েত দফতরের কর্তারা জানান, প্রকল্পের শুরু থেকেই রাজ্যে মহিলাদের কাজ পাওয়ার পরিসংখ্যান ৩৪-৩৫ শতাংশের মধ্যে আটকে রয়েছে। একেবারে নিরুপায় না-হলে এখানে বাড়ির মহিলাদের কাজে নামাতে চান না বাড়ির লোকেরা। জবকার্ড থাকলেও অনেকে কাজ চাইতে যান না। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এর জন্য রাজ্যের সামাজিক পরিস্থিতি এবং কর্মসংস্কৃতিকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “মহিলাদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য চলতি বছরে বিশেষ কিছু কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারকেও মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট ভাবে কিছু প্রকল্প গ্রহণের আর্জি জানিয়েছি।”
একশো দিনের কাজের প্রকল্পের কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার জানিয়েছেন, কমপক্ষে ৫০% মহিলার কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে কাজ শুরুর পরিকল্পনা হয়েছে। তিনি জানান, ওই লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য এখন থেকে একশো দিনের কাজের পরিকল্পনা নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সহায়তা নেওয়া হবে।
এ ছাড়া নির্দিষ্ট কিছু কাজ তদারকের দায়িত্বও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি এমন কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে, যেখানে মহিলাদের যোগদান অনেকটাই সহজ হবে। |
|
|
|
|
|