নির্মল ভারত অভিযান প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়িতে বাড়িতে শৌচাগার তৈরির উদ্যোগ দীর্ঘদিনের। উদ্দেশ্য নির্মল গ্রাম গড়ে জল দূষণ আটকানো এবং বাড়ির মহিলাদের সম্ভ্রম বজায় রাখা। তবে দু’ চারটি ব্লক বাদ দিলে বীরভূম জেলায় তেমন আশানুরূপ কাজ হয়েছে এমন দাবি অবশ্য প্রশাসনও করছে না। জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের মতে, এখনও জেলার গ্রামগুলির বহু বাড়িতেই শৌচাগার নেই বললেই চলে।
কিন্তু এ না হয় গ্রামের কথা হল। তবে পুরসভা এলাকার চিত্রটাও কি এক? বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও দুবরাজপুর পুরসভার বাস্তব ছবিটা কিন্তু তাই-ই। শহরের অন্তত ৩০-৩২ শতাংশ বাড়িতেই শৌচাগার নেই। এ কথা বলছেন, খোদ দুবরাজপুর পুরসভার বিদায়ী পুরপ্রধান (বর্তমানে তিনি তৃণমূলে) পীযূষ পাণ্ডে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা ধরলে, শতাংশের হিসাবটা আরও বেশিই হবে। দুবরাজপুর মূলত গ্রাম্য শহর। পুরসভার তকমা পেলেও অনেককিছুই গ্রামের মতোই। যেমন এখানে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া বহু পরিবারেই শৌচাগার নেই। আবার খানিকটা গ্রাম্য মানসিকতার জন্য অনেক পরিবারে শৌচাগার থাকলেও তা কম ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানো বা বাড়িতে বাড়িতে শৌচাগার তৈরির উদ্যোগ গৃহীত হয়নি পুরসভার তরফেও। এমনটাই অভিযোগ করছেন এলাকার মানুষজন।
পুরসভায় এমনটা কেন হবে? কেন বাড়িতে বাড়িতে শৌচাগার থাকবে না? স্বাভাবিক ভাবে দূষণের আশঙ্কাও থেকেই যাচ্ছে। দুবরাজপুর পুরভোটের প্রাক্কালে গত দু’ বার পুর নির্বাচনের পর বিরোধী আসনে বসা সিপিএম এবং এক সময়ের জোট সঙ্গী বিজেপি ও কংগ্রেসের অভিযোগ, এই সমস্যা না মেটার জন্য দায়ী পুরসভা। পুরসভায় বসবাসকারি পরিবারগুলির একটা বড় অংশের বাড়িতে শৌচাগার নেই এটা মেনে নিলেও সব কিছুর পিছনে পুরসভাই দায়ী মানতে নারাজ পীযূষবাবু। তিনি বলেন, “এটা একটা বড় সমস্যা সন্দেহ নেই। কিন্তু নির্মল ভারত অভিযানের মতো কোনও শৌচাগার বানানোর বিশেষ প্রকল্প শহরের জন্য চালু ছিল না। তবে বেশ কিছুদিন আগেই একটি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের মাধ্যমে শহরের ২৩০০টি শৌচাগার নির্মাণের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। ওই শৌচাগার বসাতে যে টাকা খরচ হবে, তার ৭৫ শতাংশ কেন্দ্র, ১৫ শতাংশ রাজ্য এবং ১০ শতাংশ উপভোক্তা দেবেন। পুর ভোটের পরই কাজ শুরু হবে।” |