রাজ্যে আধার-পর্ব সারতে সময়সীমা ফেব্রুয়ারি
ধার কার্ডের জন্য পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত নাগরিকের নাম নথিভুক্তির প্রক্রিয়া আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেরে ফেলতে চায় কেন্দ্রীয় জনগণনা দফতর। তিন দফায় ওই কাজ করা হবে। বুধবার রাজ্য সরকার, জেলা প্রশাসন ও কলকাতা-হাওড়া পুরসভার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে দফতরের তরফে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বছরের শেষে রাজ্যের কয়েকটি জেলায় রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি সরাসরি গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করতে চায় কেন্দ্র। সেটা করা হবে আধার নম্বরের ভিত্তিতে। কিন্তু এখনও রাজ্যের বহু নাগরিকের আধার নম্বর তো দূর, শিবিরে নাম নথিভুক্তিই হয়নি। কিছু জায়গায় স্রেফ প্রযুক্তিগত বিভ্রাটে বায়োমেট্রিক তথ্য (মুখের ছবি, দশ আঙুলের ছাপ ও চোখের মণির ছবি) সংগ্রহ থমকে আছে। অনেকের অভিযোগ, তথ্য সংগ্রহের জন্য শিবির (ক্যাম্প) প্রয়োজনের তুলনায় কম হয়েছে। অনেকে আবার শিবিরে গিয়ে কর্মীর দেখা পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে নাম নথিভুক্তির নথিপত্র থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আধারের ওয়েবসাইটে পাওয়া পরিচয়পত্র যে অবস্থায় আছে, সেই অবস্থাতেই ডাউনলোড করে প্রিন্ট নিতে পারেন। এ ভাবে পাওয়া আধার কার্ড সর্বত্র গ্রাহ্য হবে বলে জানিয়েছে যোজনা কমিশন।
বস্তুত আধার-প্রক্রিয়াটির দায়িত্ব বণ্টন নিয়ে যোজনা কমিশনের অধীনস্থ ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (ইউআইডিএআই) ও কেন্দ্রীয় জনগণনা দফতরের দ্বন্দ্ব থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। পরে রফাসূত্র হিসেবে কিছু রাজ্যে সম্পূর্ণ দায়িত্ব পায় ইউআইডিএআই। আর পশ্চিমবঙ্গের মতো কিছু রাজ্যে দায়িত্ব বর্তেছে জনগণনা দফতরের উপরে। সংগৃহীত তথ্য তারা পাঠিয়ে দিচ্ছে ইউআইডিএআই-কে, যার ভিত্তিতে আধার পরিচয়পত্র তৈরি হওয়ার কথা।
কেন্দ্রীয় জনগণনা দফতরের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য পশ্চিমবঙ্গে আধার কার্ডের নাম নথিভুক্তি ও বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া কিছু দিন বন্ধ ছিল। তা ফের শুরু হয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর: অগস্ট পর্যন্ত রাজ্যের প্রায় ৩ কোটি ৪১ লক্ষ নাগরিকের নাম নথিভুক্তি ও তথ্য সংগৃহীত হলেও আধার নম্বর হয়েছে ২ কোটি ১৫ লক্ষের। কিন্তু তাঁদের অনেকে কার্ড হাতে পাননি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, কার্ড সাধারণ ডাকে পাঠানো হচ্ছে বলেই এই দেরি। পুরো প্রক্রিয়ায় গতি আনতে এ দিন মহাকরণে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র-সচিব তথা আধার-প্রকল্পের নোডাল অফিসার বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে কলকাতা-হাওড়া পুরসভার কমিশনার, অন্যান্য জেলার ডিএম ও ডাক-কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন আঞ্চলিক সেন্সাস অফিসারেরা। ডাক-কর্তারা এ দিনের বৈঠকে দাবি করেন, যা যা অসুবিধে ছিল, তার অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা গিয়েছে।
বৈঠকে স্থির হয়েছে, তিন দফায় পশ্চিমবঙ্গে আধার পর্ব শেষ করা হবে। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়িতে। এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বর্ধমান, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, ও দার্জিলিঙে আধার-প্রক্রিয়া শেষ করার সময়সীমা ধার্য হয়েছে।
আঞ্চলিক জনগণনা দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা প্রণবকুমার মজুমদার এ দিন জানান, নির্বাচনজনিত নানা কারণে ২৮ ফেব্রুয়ারির সময়সীমা নির্ধারণের প্রস্তাব রাজ্য সরকারের তরফেই আগে তাঁদের কাছে এসেছিল। এ দিনের বৈঠকে তা কার্যকর করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তথ্য সংগ্রহের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইলেকট্রনিক কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিয়ান টেলিফোন ইন্ডাস্ট্রিজ-কেও এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে শিবিরের সংখ্যাও বাড়বে। তবে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে রান্নার গ্যাসের ভর্তুকির টাকা সরাসরি জমা করার ব্যাপারে রাজ্য এখনও কিছুটা সংশয়ে। এ জন্য বাড়তি সময় চেয়ে দিল্লিকে চিঠি দেওয়ার কথা জানান স্বরাষ্ট্র-সচিব।
দফতরের হিসেবে আগস্টের শেষ পর্যন্ত বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ ও নাম নথিভুক্তির ক্ষেত্রে রাজ্যের প্রথম তিনটি জেলা হল: হাওড়া (৮৩.৯%), কোচবিহার (৭৭%) ও কলকাতা (৬৬.৩%)। সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা তিনটি জেলা হল: উত্তর দিনাজপুর (৮.৩%), পুরুলিয়া (১৩.১%) ও বাঁকুড়া (১৩.৯%)। ইউআইডিএআইয়ের আঞ্চলিক কর্তারা এ দিনের বৈঠকে থাকতে পারেননি। তবে অথরিটির এডিজি ভিপি পাণ্ডে রাঁচি থেকে এ দিন জানান, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর তাঁরা শহরে আসছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.