পুলিশ সক্রিয় হলে খুন হতেন না ফরাক্কা পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সদস্য হাসমত সেখ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই সিপিএম নেতা খুনের পর মৃতের পরিবারের অভিযোগ এমনটাই। হাসমতের স্ত্রী নাইমা বিবি বলেন, “পুলিশ যদি একটু সক্রিয় হতো তাহলে কিছুতেই এমনটা ঘটত না। দিন দশেক আগে একদল দুষ্কৃতী বাড়িতে চড়াও হয়। বোমা ফাটিয়ে জানিয়ে যায়, যাকে পাবে তাকেই খুন করবে তারা। আমার স্বামী ফরাক্কা থানায় বিষয়টি একাধিকবার জানায়। কিন্তু পুলিশ নিষ্ক্রিয় থাকে।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের গলাতেও শোনা গেল সেই একই সুর। মৃগাঙ্কবাবুর অভিযোগ, “খুনের আশঙ্কার কথা থানায় নিজেই জানিয়ে এসেছিলেন হাসমত। অথচ পুলিশ কিছুই করল না। হাসমত এলাকায় প্রতিবাদী মানুষ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। সেই কারণেই তাঁর উপর রাগ ছিল এলাকার কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীদের।” |
হাসমতের ছেলে আখির সেখ বলেন, “বাবা খুন হওয়ার পরেও পুলিশের কোনো হেলদোল নেই। ঘটনার পরে আমরা যে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি সে কথা পুলিশকে জানিয়েছি। অথচ গ্রামে পুলিশি টহলদারি বা পুলিশ ক্যাম্প কিছুরই ব্যবস্থা করেনি প্রশাসন।”
ফরাক্কার কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন,“ কংগ্রেস কোনওভাবেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। ১৯৯৮ সালের পর ফরাক্কায় কোনও রাজনৈতিক হানাহানি হয়নি।” কংগ্রেস বিধায়কের অভিযোগ,“ ওই সিপিএম নেতা খুনের পরেও দুষ্কৃতীদের ধরার ব্যাপারে পুলিশ সক্রিয় নয়। এলাকায় দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্তের পিছনে পুলিশেরই একাংশের মদত রয়েছে।”
হাসমতের ছেলে আখির মঙ্গলবার রাতেই ফরাক্কা থানায় মোট ছ’জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে। খুনের পর চব্বিশ ঘন্টা কেটে গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “সিপিএমের ওই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে দুষ্কৃতীরা আক্রোশ থেকেই এই খুন করেছে। এনটিপিসি’র ছাই সরবরাহ নিয়ে গ্রামেরই কয়েকজনের সঙ্গে বিবাদ থেকেই এই খুন বলে প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি। স্থানীয় থানার বিরুদ্ধে ওই পরিবারের যে অভিযোগ আছে সেটাও আমরা খতিয়ে দেখছি।” এই খুনের ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার ঘন্টাখানেক ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানোর পর বৃহস্পতিবার ফের ফরাক্কা থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করবে সিপিএম। |