কুড়ি বছর আগের খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল ১৮ জনের। বুধবার কালনা আদালত এই সাজা ঘোষণা করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৩ সালের ২২ এপ্রিল সারবানু বিবি নামে এক মহিলা মন্তেশ্বর থানায় অভিযোগ করেন, মাঝ রাতে বাড়িতে ঢুকে বেশ কিছু দুষ্কৃতী তাঁর স্বামী হাজি সবুর আলি শেখকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। তার পরে তাঁর মুণ্ডু কেটে নিয়ে বোমা ফাটাতে ফাটাতে পালিয়ে যায়।
তদন্তে নেমে পুলিশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে। নিহতের স্ত্রী অভিযোগে ১৩ জনের নাম জানালেও পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার সঙ্গে আরও ন’জন জড়িত। মোট ২২ জনের নামে আদালতে চার্জশিট পেশ করেছিল পুলিশ। মামলা চলাকালীন ২১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। তার মধ্যে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ছিলেন নিহতের স্ত্রী-সহ ৬ জন। মৃত্যু হওয়ায় ও পলাতক থাকায় তিন অভিযুক্তের ট্রায়াল হয়নি। বাকি ১৯ জনের মধ্যে নাসু মল্লিককে বেকসুর খালাস ঘোষণা করে আদালত। |
ঘটনার প্রায় কুড়ি বছর পরে কালনা ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক অখিলেশ পাণ্ডে মঙ্গলবার ১৮ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। বুধবার সাজা ঘোষণা হল। কী সাজা হয়, তা জানার জন্য আদালত চত্বরে ভিড় করেন অভিযুক্তদের আত্মীয়েরা। মোতায়েন ছিল প্রচুর পুলিশ। এ দিন রায়ের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে বিচারক সাজাপ্রাপ্তদের কাছে জানতে চান, তাদের কিছু বলার আছে কি না। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে কেউ জানান, তাঁর বয়স হয়েছে। কেউ জানান, পরিবারে তিনিই একমাত্র রোজগার করেন। সাজাপ্রাপ্তদের বক্তব্য শোনার পরে বিচারক সরকারি আইনজীবী ও আসামিদের আইনজীবীদের বক্তব্য জানতে চান। এর পরে ঘণ্টা দেড়েকের জন্য বন্ধ থাকে বিচারপর্ব।
বিচারের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় বেলা আড়াইটে নাগাদ। বিচারক ১৮ জনেরই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। রায় শোনার পরে সাজাপ্রাপ্তদের আত্মীয়েরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সরকারি আইনজীবী বিকাশ রায় জানান, জেরা চলাকালীন সাক্ষীরা জানিয়েছে, হাজি সবুর আলি খুন হওয়ার আগে তাঁর ভাইপো খুন হন। তার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন হাজি। তাই তাঁকে খুন হতে হয়। সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবী অক্ষয় মণ্ডল বলেন, “উচ্চ আদালতে যাব আমরা।” |