বেহাল দশা নিয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে কারণ জানাতে নির্দেশ দিল রাজ্য মানবধিকার কমিশন। কোচবিহার থেকে ফালাকাটা যাওয়ার ৩১-ডি জাতীয় সড়কের একটি বড় অংশ খানাখন্দে ভরা। তা নিয়ে মঙ্গলবার কোচবিহার সার্কিট হাউসে রাজ্য মানবধিকার কমিশনের দুই বিচারপতির কাছে অভিযোগ জমা দেন বিপ্লব কর নামে এক ব্যক্তি। এর পরেই কমিশনের দুই সদস্যের চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন বিচারপতি অশোক কুমার গঙ্গোপাধ্যায় ও নারায়ণ চন্দ্র শীল ওই নির্দেশ দেন। তাঁরা এনএইচ (১০) ডিভিশনের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ারকে তিন সপ্তাহের মধ্যে কেন ওই রাস্তার বেহাল অবস্থা তা নিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ওই রাস্তাটির বেহাল অবস্থা। কোথাও বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে। আবার কোথাও পিচ, পাথর উঠে গিয়েছে। কয়েকমাস আগে বালি, পাথর দিয়ে কিছু গর্ত বন্ধ করে দিলেও কয়েক দিনের মধ্যে ফের পুরনো অবস্থা ফিরে পায় রাস্তাটি। বিপ্লববাবু অভিযোগ করেছেন, ওই রাস্তায় বেশ কয়েকটি স্কুল রয়েছে। দুটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা জীবন হাতে নিয়ে চলাফেরা করেন। ফালাকাটার একটি কলেজের শিক্ষক রঞ্জন রায় বলেন, “আমাদের প্রতিদিন ওই রাস্তা দিয়ে ভয়ে ভয়ে যাতায়াত করতে হয়।” জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বৃষ্টির জন্য এতদিন কাজ হয়নি। শীঘ্রই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হবে।
রাজ্য মানবধিকার কমিশন-এর রেজিস্ট্রার তথা বিচারক রবীন্দ্রনাথ সামন্ত জানান, এ দিন কমিশনে ২৪টি অভিযোগ জমা পড়ে। এর মধ্যে ১০ টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেন দুই চেয়ারম্যান। বাকগুলির বেশ কয়েকটি বাতিল করে দেওয়া হয়।
দিনহাটার বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার গোলাম মোস্তাফা অভিযোগ করেন, ২০১৩ সালের ৪ মার্চ তাঁর ছোট ভাই মজিবর রহমান জমিতে জলসেচের কাজ করছিলেন। সে সময় বিএসএফ এর এক জওয়ান মজিবরবাবুকে গুলি করে খুন করে। দিনহাটা থানায় অভিযোগ জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দুই সদস্যের কমিশন কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবালকে নির্দেশ দিয়েছেন, তিন সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত করে ওই মামলা সংক্রান্ত রিপোর্ট কমিশনে জমা দিতে। আমবাড়ির বাসিন্দা রেখা রায় অভিযোগ করেছেন, তাঁর কিছু জমি দুষ্কৃতীরা দখল করে নিয়েছে। ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরকে জানানোর পরেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। কমিশন ওই ব্যাপারে দফতরের জেলা আধিকারিককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘোড়ামারা-কালীঘাট এলাকার এক প্রতিবন্ধী যুবক আবদুল কাশেম এই প্রসঙ্গে অভিযোগ করে জানিয়েছেন, চলতি বছরের ১৮ জুলাই মাথাভাঙা যাওয়ার জন্য ঘুঘুমারি থেকে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার একটি বাসে তিনি ওঠেন। সেই সময়ে প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র দেখানোর পরেও গাড়িতে থাকা টিকিট পরীক্ষক তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করে পরিচয় পত্র কেড়ে নেন। দুই সদস্যের কমিশন এনবিএসটিসি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে এই দিন নির্দেশ দিয়েছে তিন সপ্তাহের মধ্যে আবদুলকে তাঁর পরিচয়পত্র ফিরিয়ে দিয়ে ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা নিতে। আজ, বুধবার এবং কাল বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে কমিশনের জনশুনানি হবে। |