বামেরা প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোয় মালদহ জেলা পরিষদের দখল পেল কংগ্রেস। মঙ্গলবার ৩৮ আসনের মালদহ জেলা পরিষদে ১৬-৬ ভোটে তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়ে সভাধিপতি হন কংগ্রেসের সরলা মুর্মু। ১৫-৬ ভোটে জিতে সহ-সভাধিপতি হন কংগ্রেসেরই সায়েদ আহমেদ। কংগ্রেস সদস্য মমতাজ বেগম আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ায় সহ-সভাধিপতি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি।
পঞ্চায়েত ভোটে মালদহ জেলা পরিষদে কংগ্রেস ১৬, বামফ্রন্ট ১৬ এবং তৃণমূল ছ’টি আসনে জেতে। ফলে, কোন রাজনৈতিক সমীকরণে কে বা কারা বোর্ড গড়বে, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল।
এ দিন কংগ্রেস বোর্ড গড়ার পরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের কটাক্ষ, “পঞ্চায়েত ভোটের পরেই কলকাতায় ডালুবাবুর (জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী) সঙ্গে বৈঠকে বসে বিমানবাবু (বসু) ঘোষণা করেছিলেন, মালদহ জেলা পরিষদ সিপিএম কংগ্রেসকে ছেড়ে দেবে। সিপিএম কথা রেখেছে। এটা কংগ্রেসের নৈতিক পরাজয়।” |
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরীর দাবি, “মালদহ জেলা পরিষদে কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন করতে গেলে আমরা ছাড়া অন্য কেউ জিতত না। বামফ্রন্ট নিশ্চিত হার বুঝতে পেরেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করে বেরিয়ে গিয়েছে। কেউ যদি বেরিয়ে যায়, আমরা কী করতে পারি!”
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রও বলেন, “কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্রে জেলার সাংসদ, বিধায়ক এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের ভোটও যোগ হবে। সেই নিরিখে জেলা পরিষদে সব কর্মাধ্যক্ষ পদই কংগ্রেসের পাওয়ার কথা। টসে জিতে জেলা সভাধিপতির আসন পেলেও জেলা পরিষদ চালানো সম্ভব হবে না বুঝেই সভাধিপতি নিবার্চনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিনি।” তবে সদ্য নির্বাচিত সভাধিপতি বলেছেন, “সভাধিপতি হওয়ার জন্য বামফ্রন্টকে ১০০ শতাংশ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। মালদহের উন্নয়নের কাজ করব।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য কোনও অবস্থাতেই সিপিএম-কে সাহায্য করার পক্ষপাতী নন বলে তৃণমূল সূত্রের দাবি। দলীয় স্তরে তিনি বার্তা দিয়েছেন, কংগ্রেস নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে যত বিবাদই থাক, সিপিএম-কে পঞ্চায়েতে ক্ষমতা দখল করা থেকে আটকাতে যেখানে প্রয়োজন সেখানে কংগ্রেসকে সমর্থন করতে হবে। ফলে আজ, বুধবার উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদে তৃণমূল শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করা ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। |