পঞ্চায়েত সমিতির উদাসীনতায় প্রথমে টাকা পড়ে থেকে ফেরত যাচ্ছিল। হইচই শুরু হতে তড়িঘড়ি শুরু হয় বিষ্ণুপুরে সুইমিং পুল তৈরির কাজ। দেড় বছর পরে এখন বাকি টাকা না মেলায় অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে সেই সুইমিং পুল। কাজ কবে শেষ হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দেওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে বিষ্ণুপুরবাসীর মধ্যে।
এই শহরে একটি সুইমিং পুল তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। এ জন্য টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু বছর চারেক ধরে সেই টাকা পড়ে থাকলেও বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত সমিতি গোড়ায় কাজ শুরু করেনি। বছর দেড়েক আগে সেই টাকা ফেরত যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রশাসনের কর্তাদের ঘটনাটি নজরে আসে। তখনই সুইমিং পুল তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়।
অবশেষে কলেজ রোডে বিষ্ণুপুর পুরপর্যটন আবাস লাগোয়া জমিতে শুরু হয় সুইমিং পুল তৈরির কাজ। বিষ্ণুপুরবাসী আশা করেছিলেন, এত দিনে তাঁদের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। কিন্তু সেই কাজ অনেকটা এগিয়েও এখন টাকার অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিষ্ণুপুরের বিডিও প্রশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, “বছর দেড়েক আগে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রথম পর্যায়ে ওই কাজের জন্য আমাদের বরাদ্দ করা হয়েছিল ৪৬ লক্ষ টাকা। সেই টাকা ফুরিয়ে যাওয়ার পরে বিধায়ক শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এলাকা উন্নয়নের তহবিল থেকে দু’দফায় মোট ১০ লক্ষ টাকা জোগাড় করে দেন। তাতে কাজ কিছুটা এগোলেও সব কাজ করা যায়নি।” তিনি জানান, এখনও পোশাক পাল্টানোর ঘর, সাজসজ্জা-সহ আরও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। সেই কাজ না হওয়ায় চালু করা যাচ্ছে না। |
টাকার অভাবে বন্ধ কাজ। ছবি: শুভ্র মিত্র |
এ দিকে, ওই সুইমিং পুল তৈরি না হওয়ায় পুরবাসীদের একাংশ প্রশাসনিক উদাসীনতা রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের দাবি, রাজ্যের বিভিন্ন শহরে সুইমিং পুল রয়েছে। কিন্তু মন্দিরনগরী বিষ্ণুপুরের বাসিন্দারা সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ওই সুইমিং পুল চালু হলে এলাকার ছোট ছেলেমেয়েদের সাঁতারে উৎসাহ বাড়বে বলে তাঁদের দাবি। তা ছাড়া শরীর সুস্থ রাখতে সাঁতার কাটার উপযোগিতা রয়েছে বলে তাঁদের মত। বিষ্ণুপুর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক বরুণ দে বলেন, “বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত সমিতি একটি সুইমিং পুল তৈরির কাজ শুরু করেছে বলে শুনেছি। কতদূর এগিয়েছে জানি না। ওরা আমাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগও করেনি। আমরা চাই এলাকার সাঁতার শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে কাজটি দ্রুত শেষ করা হোক।”
নির্মীয়মান সুইমিং পুল এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে জলাধার ও তার চারপাশে বসার চেয়ার সাজানো রয়েছে। রঙ করা হয়েছে চারপাশের পাঁচিলের দেওয়ালেও। কিন্তু ভিতরের ড্রেসিংরুমের কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে। বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান তথা রাজ্যের শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা চাই দ্রুত ওই সুইমিং পুল তৈরির কাজ শেষ হোক। আগেও বিধায়ক তহবিল থেকে কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে। ওই খাতে ফের টাকা পাওয়ার চেষ্টা করছি।” |