ভোট যায়, ভোট আসে কিন্তু এলাকাবাসীদের দাবি আর পূরণ হয় না। স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে চূর্ণি নদীর মামজোয়ান ঘেরাঘাটের উপর ব্রিজ তৈরির দাবি জানিয়ে আসছেন। প্রতিবার ভোটের আগে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের মুখে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছোটে। আর নির্বাচন কাবার হয়ে গেলে ব্রিজ তৈরির কথা কারও মনে থাকে না।
হাঁসখালি ব্লকের মামজোয়ান ফেরিঘাটের দৈর্ঘ্য মেরেকেটে ৮০ মিটার। গুরুত্বপূর্ণ ওই ঘাটের ওপারের খান দশেক গ্রামের লোকজনকে বাজার-ঘাট করতে নদী পেরিয়ে বাদকুল্লায় যেতে হয়। রানাঘাট বা কৃষ্ণনগরে যেতে গেলেও পড়ুয়াদের মামজোয়ান ঘাট উজিয়ে নিকটতম বাদকুল্লা স্টেশনে আসতে হয়। বর্ষার সময় হাঁটু সমান কাদা ভেঙে নৌকায় উঠতে গিয়ে লোকজনের ভোগান্তির সীমা থাকে না। এ সব অনেকটাই গা সওয়া হয়ে গেছে ভুক্তভোগীদের। কিন্তু বাদকুল্লা থেকে মালভর্তি কোনও ট্রাক বা লরি ওপারের কোনও গ্রামে যেতে গেলে সমস্যা তীব্র হয়। কারণ, চূর্ণি নদীর ওই ঘাটে চলা যাত্রীবাহী ছোট নৌকায় মালবোঝাই কোনও ট্রাক তোলা যায় না। ফলে অগত্যা চালককে অন্তত ২৫ কিলোমিটার ঘুরে হাঁসখালি হয়ে ওপারের কোনও গ্রামে ঢুকতে হয়। স্থানীয় ট্রাক চালক সিধু সাঁতরা বলেন, “প্রায়ই মাল নিয়ে ঘাটের ওপারে যেতে হয়। আবার অনেক সময় শস্যে ভরপুর ওপার থেকে ধান, চাল বা ট্রাক ভর্তি সব্জি নিয়ে এপারে আসতে হয়। কিন্তু নৌকায় তো আর গাড়ি তোলা যায় না। তাই বাধ্য হয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে অতিরিক্ত পথ ঘুরতে হয়। ফলে ভাড়া অনেকটা বেশি লেগে যায়। পরিবহন খরচ বেশি লাগায় সব্জি সহ অন্যান্য মালের দাম বেড়ে যায়।” |
ব্রিজ না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীদের ভোগান্তির শেষ না থাকলেও প্রশাসন সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে এক প্রকার উদাসীন। মামজোয়ানের ব্যবসায়ী সমীর ব্যাপারী বলেন, “অনেক দিন ধরে নেতাদের মুখে শুনে আসছি এ বারের ভোটটা মিটলেই নির্ঘাৎ ব্রিজ তৈরি হবে। কিন্তু কত ভোটই তো গেল! ব্রিজের মুখ আর দেখলাম না।” হাঁসখালির বিডিও প্রদ্যুৎ হালদার বলেন, “বছর খানেক আগে ওই নদী-ঘাটে ব্রিজ তৈরীর জন্য সমীক্ষা করা হয়েছিল। তার রিপোর্ট মহকুমা শাসককে দেওয়া হয়। কিন্তু মহকুমা বা জেলা প্রশাসন থেকে তারপর আর কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।” |