|
|
|
|
সভাধিপতির শপথ |
গঙ্গাজল ছিটিয়ে জেলা পরিষদে প্রবেশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পূর্ব ঘোষণা মতোই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসেবে নির্বাচিত হলেন তৃণমূলের উত্তরা সিংহ। সহ -সভাধিপতি সমায় মাণ্ডি। মঙ্গলবার ছিল সভাধিপতি, সহ - সভাধিপতি নির্বাচন। তার আগে জেলা পরিষদের ৬৭ জন সদস্য শপথবাক্য পাঠ করেন। জেলা পরিষদের সভাঘরে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) পাপিয়া ঘোষ রায়চৌধুরী, জেলা পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক শম্পা হাজরা প্রমুখ। অতিরিক্ত জেলাশাসক নির্বাচিত সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করান। সভাধিপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর উন্নয়নমূলক কাজে সকলের সহযোগিতা চান উত্তরাদেবী। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে রাজ্য জুড়ে উন্নয়নমূলক কাজকর্ম চলছে। আমি মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নকে সার্থক করার চেষ্টা করব। কাজের ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা চাই।” জেলা পরিষদের ৬৭ জন সদস্যের মধ্যে তৃণমূলের ৬৪ জন, সিপিএমের ২ জন এবং কংগ্রেসের ১ জন। সকলেই এ দিন শপথ নেন। |
|
জেলা পরিষদের সামনে নতুন সভাধিপতি উত্তরা সিংহ। |
পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিপুল জয় উদ্যাপন করতে মঙ্গলবারই মেদিনীপুর কলেজ মাঠে সভা করেছে তৃণমূল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়, রাজ্যের দুই মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র এবং সুকুমার হাঁসদা। ছিলেন দলের জেলা চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক মৃগেন মাইতি, জেলা সভাপতি দীনেন রায় প্রমুখ। সভায় মুকুলবাবু বলেন, “পশ্চিম মেদিনীপুরে আমরা বিপুল জয় পেয়েছি। এই জয়ের ব্যাখ্যা কী? আগে মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পারতেন না। এ বার তা হয়নি। গভীর রাত পর্যন্ত বুথের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে মানুষ ভোট দিয়েছেন। তাই এই জয়।” সভা থেকে কংগ্রেস -সিপিএমের কড়া সমালোচনা করে মুকুলবাবু বলেন, “কংগ্রেস -সিপিএম ময়দানে নেই। সন্ধ্যায় টিভি খুললে শুধু ওদের দেখা যায়। ভারতবর্ষের মাটিতে কংগ্রেস এখন অপ্রাসঙ্গিক। এত দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার আগে কেন্দ্রে কখনও আসেনি।”
এ দিন সকালে মেদিনীপুর শহরে এক পদযাত্রা করে তৃণমূল। দলের জেলা পরিষদ সদস্যদের নিয়ে পদযাত্রা শুরু হয়। ছিলেন দলের জেলা সভাপতি দীনেনবাবু, দুই কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্ ঘোষ এবং নির্মল ঘোষ। ছিল রণপা, ধামসা মাদল। সবুজ পাড় সাদা শাড়ি পরিহিততা মহিলারা গঙ্গাজলের ঘট নিয়ে পদযাত্রায় সামিল হন। পরে পদযাত্রা জেলা পরিষদ চত্বরের সামনে এসে পৌঁছয়। জেলা পরিষদ চত্বরের সামনে গঙ্গাজল ঢালা হয়। দলের এক জেলা নেতার কথায়, “আসলে দিনটিকে আমরা স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছিলাম। তাই অভিনব কিছু করার চেষ্টা করেছি। গঙ্গাজল পবিত্র।” |
|
শহরে তৃণমূলের শোভাযাত্রা। |
এই কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি সিপিএম। এ দিনই কৃষকসভার এক কর্মসূচিতে যোগ দিতে মেদিনীপুরে এসেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নারায়ণগড়ের বিধায়ক সূর্যকান্ত মিশ্র। সূর্যকান্তবাবু নিজে এক সময় জেলা পরিষদের সভাধিপতি ছিলেন। তাঁর মন্তব্য, “গঙ্গা থেকে জল আনতে হল? কেন, কংসাবতীতে কী জল ছিল না? মেদিনীপুরে কী জলের অভাব ! ” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের কটাক্ষ, “জেলা পরিষদকে যারা (তৃণমূল) দূষিত করবে, তারাই আগে শুদ্ধ হল ! ভালই তো ! ”
কলেজ মাঠের সভাস্থলে এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুরের দুই ছবি তুলে ধরা হয়। ২০১১ সালে পালাবদলের আগে জেলার কী পরিস্থিতি ছিল, বিশেষ করে জঙ্গলমহলের এবং পালাবদলের পরে জেলার কী পরিস্থিতি হয়েছে, তার কিছু ছবি ফ্লেক্সের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। পালাবদলের আগের ছবিগুলোর মধ্যে ছিল মাওবাদী সন্ত্রাস, খুন প্রভৃতি। এককথায় হিংসা। পালাবদলের পরের ছবিগুলোর মধ্যে ছিল সুবর্ণরেখা সেতু, আইটিআই নির্মাণ প্রভৃতি এককথায় উন্নয়ন। এ দিন দুপুরে বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির মধ্যে সভাও কিছুটা বিঘ্নিত হয়। |
—নিজস্ব চিত্র। |
|
|
|
|
|