আলিপুরদুয়ার-বামনহাট প্যাসেঞ্জার ট্রেনে অবাধে কাঠ পাচার চলছে বলে অভিযোগ উঠছে। পরিবেশ প্রেমী নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দাবি, কাঠপাচার নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে ফল মেলেনি। রেল এবং বন দফতরের মধ্যে সমন্বয় না থাকাতেই অবাদে কাঠ পাচার চলছে বলে সংগঠনগুলির অভিযোগ।
আলিপুরদুয়ার বামনহাট রুটে দুটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন চলে। তার মধ্যে একটি ট্রেন শিলিগুড়ি পর্যন্ত প্রতিদিন চলাচল করে। দুটি ট্রেনের কামরার শৌচালয়, ছাদের ভেতরের অংশ থেকে যাত্রীদের সিটের নীচে শাল, সেগুন সহ দেদার দামি কাঠের লগ, পাটাতন পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। সিটের নীচে কাঠ গুঁজে রাখার কারণে যাত্রীদেরও ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। পরিবেশপ্রেমী মহল ও বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, আলিপুরদুয়ার কোটর্র্, রাজাভাতখাওয়া, কালচিনি, গারোপাড়া সহ ডুয়ার্সের বিভিন্ন স্টেশন এলাকা থেকে ট্রেনে কাঠ তোলা হয়। পাচারকারীরা কেউ ট্রেনে থাকে না। মোবাইলে যোগাযোগ করে দেওয়ানহাট, দিনহাটা কিংবা বামনহাট স্টেশনে কাঠের লগ নামিয়ে নেওয়া হয়। কাঠ পাচার নিয়ে রেল ও বন কর্তারা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও অবাধে পাচারের অভিযোগ নিয়ে পরষ্পরকে দোষারোপ করেছে।
কোচবিহারের ডিএফও কৌশিক সরকার বলেন, “গত একমাসে দুই দফায় তল্লাশ চালিয়ে ৩০ হাজারেরও বেশি মূল্যের কাঠ নানা ট্রেনের কামরা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।” বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “সাধারণ ভাবে যে কোনও যানবাহনে বেআইনি কাঠ উদ্ধার করা হলে, তা বাজেয়াপ্ত করা হয়। রেলের ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব নয় ঠিকই। তবে ওই প্রবণতা বন্ধে রেলের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে কড়া ব্যবস্থার কথা বলেছি। রেলের একাংশ আধিকারিকদেরও গাফিলতি রয়েছে।” উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ারের ডিআরএম বীরেন্দ্র কুমার বলেন, “কোনও রকম বেআইনি কারবার রেল দফতর বরদাস্ত করে না। বন দফতর চাইলে সবরকম সহযোগিতা করা হবে। জঙ্গল থেকে কাঠ কেটে বয়ে নিয়ে এসে ট্রেনে চাপানোর আগেই বন দফতর ব্যবস্থা নিতে পারে।” পরিবেশ প্রেমী সংগঠন ন্যাফের মুখপত্র অনিমেষ বসু বলেন, “কয়েক মাস আগেও রেল এবং বন কর্তাদের বোঝাপড়ায় ব্যাপক ধরপাকড় হয়েছিল। ফলে ট্রেনে কাঠ পাচার অনেকটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।” দিনহাটা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক জয়গোপাল ভৌমিক বলেন, “ওই প্রবণতা বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।” |