হাওড়া শহরে পানীয় জল সরবরাহের সমস্যা নিয়ে প্রকাশ্যেই বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়লেন মেয়র এবং মন্ত্রী। মঙ্গলবার দুপুরে, পদ্মপুকুর জলপ্রকল্প চত্বরে। এর জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জলপ্রকল্পের সংরক্ষিত এলাকার পরিবেশ।
পদ্মপুকুর জলপ্রকল্প থেকে জল সরবরাহ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই অন্তর্ঘাতের অভিযোগ করছিলেন হাওড়ার মেয়র, সিপিএমের মমতা জায়সবাল। এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ জলপ্রকল্প পরিদর্শনে যান রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। কিন্তু মন্ত্রী পৌঁছনোর আগেই জল বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্তা ও মেয়র পারিষদদের নিয়ে পৌঁছন মমতাদেবী।
মন্ত্রী পৌঁছলে মেয়র প্রকাশ্যেই অভিযোগ করেন, জল সরবরাহের কাজে প্রকল্পের কর্মীরা অন্তর্ঘাত করছেন। এই অভিযোগ শুনে মন্ত্রীর পাশে থাকা তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। উভয় পক্ষে তুমুল বাদানুবাদ চলে। হাওড়া পুরসভার বিরোধী দলনেতা, তৃণমূলের অরুণ রায়চৌধুরী দাবি তোলেন প্রকল্পের জলের নমুনা ঘটনাস্থলেই পরীক্ষা করা হোক। |
দলীয় কর্মীদের শান্ত করে অরূপবাবু মেয়রের কাছে জানতে চান, অন্তর্ঘাতের পরেও একই ঠিকাদার জলপ্রকল্পের দায়িত্বে থাকেন কী করে? কোনও স্পষ্ট উত্তর মেয়র দিতে পারেননি। এর পরেই মেয়র এবং জল বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন অরূপবাবু।
পুরসভার বিরোধী দলনেতা বলেন, “এই প্রকল্পে জল তোলা ও তা শোধনের পদ্ধতিতে গলদ আছে। তাও লাইসেন্স বাতিল না করে একই ঠিকাদারকে দায়িত্বে রাখা হয়েছে। অবিলম্বে ওই ঠিকাদারের লাইসেন্স বাতিল করা হোক।” হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের কর্মী ইউনিয়ন দীর্ঘ দিন সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর অধীনে ছিল। রাজ্যে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরে কর্মী ইউনিয়নের ক্ষমতায় আসে তৃণমূল সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন।
মেয়রের সঙ্গে বৈঠকের পরে কৃষি বিপণনমন্ত্রী বলেন, “পানীয় জল সরবরাহের ক্ষেত্রে কোনও আপস হবে না। প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণে কোনও অন্তর্ঘাত হলে বর্তমান ঠিকাদারের লাইসেন্স বাতিল করতেই হবে পুরসভাকে।”
মেয়র আরও অভিযোগ করেন, মন্ত্রীর নেতৃত্বে কয়েকশো তৃণমূল কর্মী জলপ্রকল্পের সংরক্ষিত এলাকায় ঢুকে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করেন। তাঁর কথায়, “একটি সংরক্ষিত এলাকায় এ কাজ করা যায় না। সামনেই হাওড়ার পুরভোট। তার আগে পনীয় জল নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে।”
পদ্মপুকুর জলপ্রকল্প নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাঝে মধ্যেই জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ট্যাঙ্কগুলির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। বহু সময়ে ঘোলা জল আসে। বাসিন্দাদের সমস্যার কী ভাবে মিটবে, তার কোনও উত্তর মেয়র বা মন্ত্রী কেউই দিতে পারেননি। |