রাষ্ট্রপতি পুরস্কারে পরিচয় বদল ভূগোল দিদিমণির
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি |
আচমকাই বদলে গিয়েছে চন্দ্রপুরার স্কুলের ‘ভূগোল দিদিমণি’র পরিচয়। বোকারোর বাসিন্দা, আত্মীয়-বন্ধুদের সবার কাছে এখন তিনি রাষ্ট্রপতির পুরস্কার পাওয়া দেশের সেরা শিক্ষিকা!
শিক্ষক দিবসে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের হাত থেকে পদক নেওয়ার পর অনেকটাই সময় কেটে গিয়েছে। কিন্তু বিস্ময় কাটতেই চাইছে না গোপা মুখোপাধ্যায়ের। হাতের নাগালে দেখেছেন দেশের সর্বোচ্চ পদে থাকা মানুষটিকে। তাঁর সঙ্গে বাংলায় কুশল বিনিময় করেছেন— এ সব যেন স্বপ্নের মতো লাগছে গোপাদেবীর।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা খুবই অল্প সময়ের জন্য। কিন্তু ওই মুহূর্তটাই সারা জীবনের ‘সম্পদ’ করে রাখতে চাইছেন বোকারোর কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের চন্দ্রপুরা শাখার ‘ভূগোল দিদিমণি’। বছর দশেক ধরে চন্দ্রপুরায় এটাই ছিল তাঁর পরিচয়। হঠাৎই তা বদলেছে।
কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের বিবেচনায় এ বছর দেশের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়গুলির মধ্যে ‘সেরা শিক্ষিকা’ হিসেবে মনোনীত হয়েছেন গোপাদেবী। শিক্ষক দিবসে নয়াদিল্লির বিজ্ঞান-ভবনে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে জাতীয় পুরস্কার নিয়েছেন তিনি।
|
রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার নিচ্ছেন গোপাদেবী। |
গোপাদেবীর কথায়, “তাঁকে এতদিন টেলিভিশনেই দেখতাম। পুরস্কার নিতে মঞ্চে ওঠার পর বাংলায় আমার কুশল জানতে চাইলেন রাষ্ট্রপতি। উত্তর দিলাম। বিশ্বাসই হচ্ছে না আমি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলেছি। আশপাশে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা দাঁড়িয়ে!”
কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, দীর্ঘ কর্মজীবনের ধারাবাহিকতার উপর ভিত্তি করে কোনও শিক্ষককে জাতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার ফলাফল, তাদের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকার ব্যবহার-নজর রাখা হয় সে সবের দিকে। খেয়াল রাখা হয় তাঁদের সামাজিক কাজকর্মে জড়িত থাকার বিষয়টিও।
চাকরি-জীবনের অনেকটা পেরিয়ে এসেছেন গোপাদেবী। ২৬ বছর আগে বর্ধমানের পানাগড়ের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। অনেক জায়গা ঘুরে গত দশ বছর রয়েছেন চন্দ্রপুরায়। শিক্ষকতার পাশাপাশি স্থানীয় পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখিও করেন।
তাঁর কথায়, “পেশাগত জীবনকে পারিবারিক জীবন থেকে বরাবর আলাদা রেখেছি। স্কুলেই সিলেবাসের সবকিছু পড়ানোর চেষ্টা করি। পড়ুয়াদের রেজাল্টও ভালো হয়। বাড়ির সময়টা আমার নিজের। তা-ই প্রাইভেট টিউশন কখনই করি না।” |
|