উৎসবের মরসুমে বাগডোগরার টুপিতে জুড়তে চলেছে আরও একটি পালক। সেখান থেকে অক্টোবরেই আন্তর্জাতিক উড়ান চালু করতে চলেছে স্পাইসজেট। ওই বিমান সংস্থা সূত্রের খবর, বাগডোগরা থেকে নিয়মিতই কাঠমান্ডুতে উড়ান চালাতে চায় তারা।
বাগডোগরা থেকে এখন একমাত্র আন্তর্জাতিক উড়ান চালায় ভুটানের ড্রুক সংস্থা। সেই বিমান সপ্তাহে দু’দিন ভুটানের পারো থেকে বাগডোগরা ঘুরে ব্যাঙ্কক যায়। আবার বাগডোগরা হয়ে যায় পারো। বিদেশি রুটে ওড়ার জন্য এ বার স্পাইসজেটকেও পাচ্ছে বাগডোগরা। ওই বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান চালানোর জন্য স্পাইসজেটের আবেদন সোমবার মঞ্জুর করেছে বিমান মন্ত্রক। ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)-এর প্রধান অরুণ মিশ্র জানান, বাগডোগরা থেকে কাঠমান্ডু উড়ান চালানোর জন্য স্পাইসজেটকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে।
বাগডোগরা থেকে উড়ানের সংখ্যা বৃদ্ধির পিছনে বিমানের জ্বালানিতে কর মকুবের ভূমিকা আছে বলেও মনে করছেন অনেকে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া মনোভাবের জন্য পাহাড় ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে আসছে। এই অবস্থায় বাগডোগরা থেকে আরও উড়ান চালু করতে আগ্রহী রাজ্য। তা পাহাড়ের পর্যটন ক্ষেত্রে বিশেষ সাহায্য করবে। সেই জন্যই বাগডোগরা থেকে প্রাপ্য বিমান জ্বালানির কর সম্প্রতি পুরোপুরি মকুব করেছে রাজ্য। ফলে বাগডোগরায় জ্বালানি বিক্রিও বেড়েছে। |
বাগডোগরায় রাতেও বিমান ওঠানামা চালু করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন মমতা। স্পাইসজেট কয়েক দিন আগেই ডিজিসিএ-কে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, ১ অক্টোবর থেকে তারা বাগডোগরায় রাতে উড়ান চালাবে। এখন বাগডোগরায় দুপুরে একটি উড়ান চালায় তারা। এ বার সন্ধ্যাতেও একটি বিমান উড়বে। দুপুর ও সন্ধ্যার দু’টি দৈনিক উড়ান ছাড়াও সকালে আরও একটি উড়ান চালু করবে স্পাইসজেট। ভোরে বেঙ্গালুরু থেকে একটি বিমান কলকাতা হয়ে বাগডোগরা যাবে। সেটিই চালানো হবে কাঠমান্ডু রুটে। বাগডোগরা থেকে দৈনিক উড়ান চালানোর কথা ঘোষণা করেছে ইন্ডিগো বিমান সংস্থাও। এখন তারা ওই রুটে উড়ান চালায় না।
বাগডোগরায় এখন সপ্তাহে মাত্র দু’দিন আন্তর্জাতিক উড়ান চলে। তাই সেখানে অভিবাসন ও শুল্ক দফতরের অফিসারদের নিয়োগ করা হয়েছিল অস্থায়ী ভাবে। নেপাল সীমান্তে পানিট্যাঙ্কি থেকে শুল্ক অফিসারেরা বাগডোগরায় এসে কাজ করে ফিরে যান। অভিবাসন অফিসারেরাও অন্য জায়গা থেকে আসেন। বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কল্যাণকিশোর ভৌমিক জানান, এখানেও এ বার পাকাপাকি ভাবে অভিবাসন ও শুল্ক অফিসার নিয়োগের নির্দেশ এসেছে।
বাগডোগরা-কাঠমান্ডু উড়ান সম্পর্কে কী বলছে ভ্রমণ সংস্থা?
কলকাতায় বসে ট্রাভেল এজেন্ট ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (টাফি)-র চেয়ারম্যান অনিল পাঞ্জাবি বলেন, “কলকাতা থেকে কাঠমান্ডুতে সপ্তাহে চারটি উড়ান চালায় এয়ার ইন্ডিয়া। এ বার পর্যটকেরা উত্তরবঙ্গ বা সিকিম ঘোরার সময়ে কাঠমান্ডুকেও প্যাকেজে জুড়ে নিতে পারবেন। উত্তরবঙ্গে বা সিকিমে চার দিন কাটিয়ে সেখান থেকে কাঠমান্ডু পৌঁছে তিন দিন কাটিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ানে কলকাতায় ফিরে আসতে পারবেন তাঁরা। তা ছাড়া উত্তরবঙ্গের স্থানীয় পর্যটক ও ব্যবসায়ীরা তো আছেনই।”
নতুন উড়ানের খবরে উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ী মহলের প্রতিনিধি, সিআইআই-এর ডেপুটি ডিরেক্টর লক্ষ্মী লিম্বু কৌশল উচ্ছ্বসিত। তাঁর কথায়, বৌদ্ধ পর্যটকদের খুব সুবিধা হবে। কাঠমান্ডু থেকে তাঁরা গ্যাংটক যাতায়াত করতে পারবেন। এই উড়ান ব্যবসায়ীদের পক্ষেও খুবই উপযোগী হবে। তাঁরা নেপালের সঙ্গে আরও বেশি ব্যবসা বাড়াতে পারবেন। কৌশল বলেন, “দার্জিলিং ও শিলিগুড়িতে শিক্ষার মান খুব ভাল। এ বার নেপাল থেকে ছাত্রছাত্রীরাও পড়তে আসতে পারবেন।” |