রেললাইনের পাশ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় এক যুবককে উদ্ধার করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের কাটোয়া-আজিমগঞ্জ শাখার মালিহাটি স্টেশনের কাছে ঘটনাটি ঘটেছে। তাঁরাই ওই যুবককে মঙ্গলবার সকালে ভর্তি করে দেন মুর্শিদাবাদের সালার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। যদিও ওই যুবক জালাল শেখকে (২৬) পরে স্থানান্তরিত করা হয় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে। তিনি সালারের চিকিৎসকদের কাছে অভিযোগ করেছেন, সোমবার রাতে আজিমগঞ্জগামী ট্রেন থেকে তাঁকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জালাল শেখ মাথায় গুরুতর চোট পেয়েছেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জালাল শেখের বাড়ি সালার স্টেশন লাগোয়া হামিদহাটি পিলকুণ্ডি গ্রামে। তাঁর বাবা অসুস্থ হয়ে সালার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি আছেন। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে দাঁড়িয়ে জালালের দাদা জয়নাল শেখ অভিযোগ করেন, “ভাই সোমবার রাতে সালার স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম পেরিয়ে বাড়ি ফিরছিল। তখন কয়েক জন আজিমগঞ্জগামী ট্রেনে তুলে দেয়। তারপর ফাঁকা ট্রেনে মারধর করে মালিহাটি স্টেশনের পর চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেয়।” রাতভর লাইনের পাশেই জালাল পড়ে ছিল বলে দাবি করেন তিনি। |
মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ ও কাটোয়া জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সালার থানা বা জিআরপি-র সালার ফাঁড়িতে কোনও অভিযোগ নেই। ট্রেনের গার্ডরাও কাটোয়া বা আজিমগঞ্জে কোনও রিপোর্ট করেননি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, জালালকে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কেন ফেলে দেওয়া হয় তাকে, সে ব্যাপারে পুলিশ কিছু জানাতে পারেনি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া-আজিমগঞ্জ লাইনে জালাল পকেটমার হিসেবে পরিচিত। সালারের জিআরপি ফাঁড়ি ও সালার থানায় জালালের বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
যদিও পুলিশের এই দাবি মানতে নারাজ জালালের পরিবার। তাঁরা দাবি করেন, গত বছর ফাল্গুন মাসে পিরতলায় কমিটি তৈরি নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তাতে জড়িয়ে যায় জালাল। তাঁদের আরও দাবি, সোমবার বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোকজনেরা জালালকে একা পেয়ে স্টেশন থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ট্রেন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে। জয়নাল শেখের দাবি, “ভাই সুস্থ হয়ে ওঠার পরেই লিখিত অভিযোগ করা হবে। তবে সালার ব্লক হাসপাতালের চিকিৎসক ও ফাঁড়ির পুলিশকে ভাই বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছে।” কাটোয়া জিআরপি-র ওসি তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।” |