আড়াইশো পড়ুয়ার স্কুল চলছে দেড়খানা ঘরেই
য়েক’শো ছাত্রছাত্রী, তিন শিক্ষক আর দেড়খানা ঘর। গত দু’বছর ধরে পুরসভার কমিউনিটি সেন্টারে এভাবেই চলছে স্কুলটি। স্কুলের নিজস্ব ভবন নির্মাণও দু’বছর আগেই শুরু হয়েছে, তবে তা শেষ হবে কবে হবে জানেন না কেউই।
আসানসোল পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁদমারি এলাকার কাজী নজরুল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এভাবে গাদাগাদি করে পড়াশোনা করতে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছে পড়ুয়ারা। শিক্ষকদের অভিযোগ, এ অবস্থায় ঠিকমতো পড়াতে পারছেন না তাঁরা। স্কুল ভবন নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করার আর্জি জানিয়ে প্রশাসনের কাছে বারবার গিয়েছেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।
কমিউনিটি সেন্টারের ঘরে ক্লাস করে বেরোচ্ছে পড়ুয়ারা।
বহু দিন থেকেই আসানসোল পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁদমারি শ্রীনগর এলাকায় সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি হিন্দি, উর্দু প্রাথমিক বিদ্যালয় তৈরির দাবি উঠছিল। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তরফে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর এই স্কুলটি অনুমোদন পায়। তার কিছু দিন পর থেকেই ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। সাময়িক পঠনপাঠন চালানোর জন্য আসানসোল পুরসভার স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারের দেড়খানা ঘর দেওয়া হয়। স্কুল সূত্রেই জানা গিয়েছে, মাসকয়েক পরেই পাশাপাশি এডিডিএ-র জমিতে স্কুলবাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়। পুরসভার শিক্ষা দফতর অর্থও অনুমোদন করে। কিন্তু এর পরে বছর ঘুরে গেলেও ভবনটি এখনও অসম্পূর্ণ, তিনটি ঘরের খাঁচা নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল কাদের জানান, স্কুলে প্রায় ২৫০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। সাকুল্যে শিক্ষক আছেন তিন জন। ওই দেড়খানা ঘর একেবারেই যথেষ্ট নয়। তিনি বলেন, “সমস্যার কথা স্কুল পরিদর্শক-সহ সবাইকে জানিয়েছি। আশা করি দ্রুত কিছু ব্যবস্থা হবে।” ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারাও। স্থানীয় এক অভিভাবক সাজিদ আনসারি জানান, তাঁরা অনেকদিন ধরেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দাবি জানাচ্ছিলেন। সেই দাবি মিটেছে। কিন্তু স্কুলভবন নির্মাণের কাজ অত্যন্ত ধীরে চলায় ছাত্রছাত্রীদের অস্থায়ী ঘরে বসতে হচ্ছে। সেখানে শিক্ষা গ্রহণের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই বলেও তাঁর অভিযোগ।
নির্মীয়মাণ স্কুল ভবন।
স্কুলে গিয়েও দেখা যায়, গাদাগাদি করে বসে রয়েছে পড়ুয়ারা। ঠিকমতো বইখাতা রাখারও জায়গা নেই। জানা গেল, দিনের পর দিনে এভাবে বসে অনেক ছাত্রছাত্রী অসুস্থও হয়ে পড়ছে। শিক্ষকদের জিজ্ঞেস করা হলে তাঁরা বললেন, “কী আর বলব। নিজেরাই দেখে নিন।” কয়েকদিন আগে স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকেরা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে সমস্যা সমাধানের আর্জি নিয়ে যান। কিন্তু আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই মেলেনি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান দেবাশিস নাগ জানান, অনুমোদন পাওয়ার পরে পুরসভার এক কমিউনিটি সেন্টারে স্কুলটির পঠনপাঠন শুরু হওয়ার খবর তিনি জানেন। ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ায় কথাও জানেন। কিন্তু সেটি যে শেষ হয়নি তা তাঁর জানা নেই। দেবাশিসবাবু বলেন, “পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে পঠনপাঠন বিঘ্নিত হওয়ারই কথা। স্কুল পরিদর্শককে পাঠিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হচ্ছে। দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করব।” স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভবনটি শেষ করতে আরও চার লক্ষ টাকা লাগবে। অর্থের অভাবেই কাজ আটকে রয়েছে। আসানসোল শিক্ষা চক্রের পরিদর্শক উত্তম মণ্ডল জানান, শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের নির্দেশে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন।

—নিজস্ব চিত্র।

কাজী নজরুল প্রাইমারি
• অনুমোদন পায় ২০১১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর।
• ক্লাস শুরু কমিউনিটি সেন্টারে।
• শিক্ষকের সংখ্যা তিন।
• এডিডিএ-র জমিতে স্কুলের ভবন নির্মাণ শুরু হয় কয়েক মাস পরে।
• তিনটি ঘরের খাঁচা নিয়ে এখনও অসম্পূর্ণ দাঁড়িয়ে ভবন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.