খবরটা আগেই ছড়িয়েছিল। সোমবার সকাল থেকে তাই বোলপুর আদালত চত্বর ছিল ভিড়ে ঠাসা। তবে গ্রাহক বা এজেন্টের তুলনায় সারদা-কাণ্ডে অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে দেখতে বেশি ভিড় ছিল। এ দিনই কাকদ্বীপ এসিজেএম আদালতে হাজিরা থাকায় সুদীপ্ত অবশ্য বোলপুর আদালতে অনুপস্থিতই রইলেন। গত পয়লা মে সারদা সংস্থার কর্ণধার এবং সহযোগীদের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ-সহ একাধিক অভিযোগ বোলপুর থানায় করেছিলেন রতনপুরের বাসিন্দা সন্তোষ মুখোপাধ্যায়। এ দিন ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁদের আদালতে নিয়ে আসা হয়। |
বোলপুর আদালতে দেবযানী।—নিজস্ব চিত্র। |
সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ সশস্ত্র পুলিশের কড়া প্রহরায় বোলপুরে এসিজেএম আদালতে পৌঁছন বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থা সারদা-র ওই দুই কর্তা। ঘণ্টা তিনেক অপেক্ষার পরে দুপুর দেড়টা নাগাদ দু’জনকেই বোলপুরের এসিজেএমের এজলাসে হাজির করানো হয়। অভিযুক্তেরা এবং আইনজীবীরা ছাড়া পুলিশ কাউকেই এজলাসে ঢুকতে দেয়নি। তবে সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, দুই অভিযুক্তের পক্ষেই এ দিন আদালতে কোনও আইনজীবী খাড়া হননি। এসিজেএম পীযূষ ঘোষ ধৃতদের এ নিয়ে প্রশ্ন করলে দেবযানী বিচারকের কাছে দাবি করেন, এ দিন যে তাঁকে বোলপুর আদালতে হাজির করানো হবে, তা তিনি জানতেন না। পরের বার কলকাতা থেকে তিনি আইনজীবী নিয়ে আসবেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন। আর এক অভিযুক্ত মনোজ আবার আদালতকে জানান, আইনজীবী দেওয়ার মতো তাঁর আর্থিক জোর নেই। বিচারকের নির্দেশে ঠিক হয়, ‘লিগাল এইড প্যানেল’ থেকে আইনজীবী পলাশচন্দ্র দাস অভিযুক্ত মনোজকুমার নাগেলকে আইনী সহায়তা দেওয়ার কাজ করবেন।
দুই অভিযুক্তের অপরাধ জামিন অযোগ্য দাবি করে দেবযানী ও মনোজের জামিনের আবেদনে আপত্তির কথা জানান সরকারি আইনজীবী ফিরোজকুমার পাল। এর পরেই বিচারক দুই অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ করে ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আদালতে নিয়ে আসতে যেমন অসুবিধা না হলেও দুই অভিযুক্তকে আদালত কক্ষ থেকে বের করে নিয়ে যেতে পুলিশকে যথেষ্ট নাকাল হতে হয়। উপচে পড়া ভিড় সামলাতে পুলিশ ব্যারিকেড করে ধৃতদের ফিরিয়ে নিয়ে যায়। অবশ্য তারই মধ্যে জনতার ভিড় থেকে নানা মন্তব্য ধেয়ে আসছিল দেবযানীর প্রতি। কেউ কেউ তো তাঁকে ‘সারদা রানি’ বলতেও ছাড়েননি। তবে বর্ধমান সংশোধনাগারে ফেরার পথে অভিযোগ সম্পর্কে প্রশ্ন করতেই অভিযুক্ত দেবযানী অস্পষ্ট গলায় জবাব দেন, “আমি অসুস্থ।” পরে মনোজের আইনিজীবী পলাশবাবু বলেন, “আমার মক্কেলের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বিগত চার মাস ধরেই তদন্তে পুলিশকে সব রকমের সাহায্য করছেন। সমস্ত কাগজ পত্র খতিয়ে দেখে বিচারকের কাছে তাঁর জামিনের আবেদন করব।” আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর ধৃতদের ফের আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। |
সভাধিপতির শপথ গ্রহণ
নিজস্ব সংবাদদাতা • সিউড়ি |
উত্সবের মেজাজে সোমবার জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসাবে শপথ নিলেন তৃণমূলের বিকাশ রায়চৌধুরী। শপথ পাঠ করিয়েছেন জেলা পরিষদের এগজিকিউটিভ অফিসার তথা এডিএম বিধান রায়। শপথ নিলেন ২৪ জন তৃণমূল ও ২ জন কংগ্রেস সদস্য। সিপিএমের নির্বাচিত সদস্যেরা এ দিন হাজির হননি। |
দ্বন্দ্ব ভুলে এক মঞ্চে অনুব্রত মণ্ডল ও আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়রা। জেলা পরিষদে শপথ গ্রহণের পরে
সিউড়ির একটি স্কুল প্রাঙ্গণে
জয়ী দলীয় সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লোকজন।—নিজস্ব চিত্র। |
উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরোধী বলে পরিচিত নানুরের বিধায়ক গদাধর হাজরা, সিউড়ির বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষ এবং রামপুরহাটের বিধায়ক অশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে অবশ্য অনুব্রত ও মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি। শপথ গ্রহণের পরে জেলা স্কুল প্রাঙ্গণে একটি সভা হয়। ওই সভায় জেলা সভাপতি ও মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। |