তদন্ত শেষের আগেই সিদ্ধান্ত, বিতর্কে এ বার স্বাস্থ্য দফতর
দন্ত শেষ হওয়ার আগেই সিদ্ধান্ত ঘোষণার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না সরকার। এ বার স্বাস্থ্য দফতর। এখনও তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়েনি। তার আগেই স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়ে দিলেন, বি সি রায় হাসপাতালে পরপর শিশুমৃত্যুর ঘটনায় তাঁদের কোনও গাফিলতি নেই।
তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আজ, সোমবার জমা পড়ার কথা। স্বাস্থ্যকর্তাদের আরও দাবি, বি সি রায় হাসপাতালের উপরে সাধারণ মানুষের আস্থা বেড়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বি সি রায় হাসপাতালের খুব নামডাক। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে এখানে রোগী আসে। কিন্তু একদম শেষ মুহূর্তে ওই শিশুদের নিয়ে আসার জন্য বহু ক্ষেত্রেই কিছু করার থাকে না।” চিকিৎসকদের দাবি, হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নতির জন্য তাঁরা কিছু পরিকল্পনা নিয়েছেন।
ইতিমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। স্বভাবতই স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতালের অধ্যক্ষা মালা ভট্টাচার্য জানান, অগস্ট ও সেপ্টেম্বর তাঁদের কাছে ‘কালো মাস’ বলে পরিচিত। সেপ্টেম্বর মাসকে তাঁরা ‘ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর’ বলে থাকেন। মালাদেবী বলেন, “এই সময়ে আবহাওয়ার কারণে সংক্রমণের হার খুব বেশি হয়। বহু শিশুই ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়। সদ্যোজাতদেরও নানা সমস্যা হয়। আমরা প্রতিবছরই তাই এই সময়টায় ভয়ে থাকি। একেবারে শেষ মুহূর্তে অনেক শিশু আসায় আমরা তাদের বাঁচাতে পারিনি।”
শিশু-চিকিৎসক সুব্রত চক্রবর্তী জানান, এই সময়ে শিশুদের অসুস্থতা ও মৃত্যুর হার বাড়ে। তবে এই নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো ঠিক নয়। একেবারে শেষ মুহূর্তে ওই শিশুদের না এনে আগে আনলে ভাল চিকিৎসার সুযোগ মেলে। স্বাস্থ্যকর্তারা জানান ,গত এক বছরে বি সি রায়ে ক্রিটিক্যাল কেয়ার বেড বেড়েছে ৪৫টি। সেই কারণে চলতি বছরে অনেক বেশি গুরুতর অসুস্থ শিশু ভর্তি হচ্ছে। ক্রিটিক্যাল বেড বাড়ায় স্বাভাবিক ভাবে বেড়েছে মৃত্যুর হারও।
শিশুমৃত্যুর ঘটনায় তাঁদের গাফিলতি নেই বলে স্বাস্থ্যকর্তারা দাবি করলেও বেশ কিছু ব্যবস্থা তাঁরা নিচ্ছেন বলে খবর। ত্রিদিববাবু জানান, দুই শিশু-চিকিৎসক তাপস সোম ও গোবিন্দ দাসকে নিয়ে মেন্টর গ্রুপ হয়েছে। আট জন ডাক্তার বাড়ানো হবে বলেও জানান স্বাস্থ্যকর্তারা। বাড়ানো হবে নার্সের সংখ্যাও। কিছু দিন আগে এক শিশুর বাবা অভিযোগ করেন, ঠিক সময়ে ওষুধ না মেলায় তাঁর সন্তান মারা গিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে হাসপাতাল চত্বরে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানও খোলা হবে বলে জানা গিয়েছে।
হাসপাতালে পরিকাঠামো ও লোকবলের উন্নতির পরেও এত শিশুমৃত্যুর ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। রবিবার সূর্যবাবু বলেন, “আমি নিজে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলাম। আমাদের সময়েও এমন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছিল। সমস্যাটা জানি বলে বেশি কিছু বলতে চাই না। কিন্তু সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ওই হাসপাতালে নবজাতকদের চিকিৎসায় বিশেষ ইউনিট হয়েছিল। পরিকাঠামো আধুনিকীকরণে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় টাকা দিয়েছিলেন। চিকিৎসকও বাড়ানো হয়েছিল। পরিকাঠামো ও লোকবল বাড়ার পরেও কী ভাবে এমন ঘটছে, জানি না।” প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, শিশু চিকিৎসায় যাঁরা ভাল কাজ করছিলেন, নতুন ইউনিট গড়তে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন, তাঁরাই বর্তমান সরকারের চক্ষুশূল। সূর্যবাবুর কথায়, “কারও কারও রেজিস্ট্রেশন পর্যন্ত কাউন্সিল থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সরকারের মনোভাবের জন্য বহু চিকিৎসক ঠিক মতো কাজ করতে পারছেন না।” এ দিন রাজা বসন্ত রায় রোডে কেরলের ওনম উৎসবে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন বি সি রায় হাসপাতালের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, “রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি খারাপ নয়। আমরা অনেক ভাল কাজও করেছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.