উৎসব, অনুষ্ঠানহীন ভাদ্র মাসেও সব্জির বাজারে ক্রেতাদের ক্রমশ ‘প্রবেশ নিষেধ’ হচ্ছে। শাক-সব্জির দাম প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বাজারে গিয়ে ক্রেতা দেখছেন, একশো টাকার দাম যেন একটু একটু করে নেমে যাচ্ছে। তাই ক্রেতার সংখ্যা কমছে। বিপদে পড়েছেন নবদ্বীপ মঠ-মন্দির কর্তৃপক্ষ।
অসময়ে কেন সব্জির এহেন মূল্যবৃদ্ধি? উত্তরে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব্জিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তপনকুমার মাইতি বলেন, “মূল্যবৃ্দ্ধির অন্যতম বড় কারণ এবারের অকার্যকরী ও অনিয়মিত বর্ষা। সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় মরসুমি শাক সব্জি সেভাবে চাষ করতে পারেননি চাষিরা। পরে যখন সব্জি মাঠে তৈরি হল তখন অতিবর্ষণে সেই সব্জি পচে নষ্ট হল। যার পরিণতি এই মূল্যবৃদ্ধি।” ভাদ্র মাসের শেষে পটল ৩০-৩৫ টাকা, বেগুন ৩৫-৪০ টাকা, কখনও তা ৬০ টাকাতেও বিকোচ্ছে। ঝিঙে, ঢ্যাঁড়স, পেঁপে, লাউ একচেটিয়া ২০ টাকা। বাজারে সবথেকে সস্তার সব্জি কুমড়োও এখন ২০ টাকা।
নবদ্বীপ বাজারের সব্জি বিক্রেতা নূর মহম্মদ সেখ বলেন, “চাষির ঘরে মাল নেই। এ জন্য দাম বাড়ছে। তেমনি আমরা যখন আড়ত থেকে সব্জি কিনি আমাদের ওজনে যে ‘ঢলতা’ দেওয়া হয় তা একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাধারণত মণ প্রতি এক কেজি ঢলতা দেওয়ার চল আছে। অথচ এখন সেসব কিছুই দেওয়া হচ্ছে না।” ঢলতা অর্থাৎ ওজনে কিছু বেশি দেওয়ার কারণে বাজারের খুচরো বিক্রেতারা নিজেরা বিক্রির দাম কিছুটা কমাতে বা বাড়াতে পারতেন। কিন্তু এখন সে সুযোগ না থাকায় সব্জি বাজারেও প্রায় ‘ফিক্সড রেট’।
নবদ্বীপের এক মঠের প্রধান বিবেকবন্ধু ব্রহ্মচারী বলেন, “মঠে বহিরাগতদের নিয়মিত প্রসাদ দেওয়া হয়। চোদ্দো পদের এক একটি প্রসাদের জন্য নব্বই টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু অগ্নিমূল্যের এই বাজারে এই টাকায় কুলোচ্ছে না। জানি না আর কত দিন প্রসাদের এই দাম রাখতে পারব।” |