এক পশলা বৃষ্টিতেই রাস্তার অস্তিত্ব মালুম হওয়া দুষ্কর। চেনা রাস্তা অচেনার চেহারা নেয়। করিমপুর-বহরমপুর রাজ্য সড়কের একাংশে উঠে গিয়েছে পিচের আস্তরণ। খানাখন্দে ভরপুর ওই রাস্তায় দিন দশেক ধরে বাস চলছে না। বাসমালিকদের সোজা কথা, এমন এবড়ো-খেবড়ো রাস্তায় বাস চালানো সম্ভব নয়।
করিমপুর-বহরমপুর রাজ্য সড়কের দৈর্ঘ্য ৫১ কিলোমিটার। রাস্তার বেশিরভাগ অংশই মসৃণ থাকলেও মাঝের চার কিলোমিটারের অবস্থা বেহাল। ওইটুকুর ধাক্কা সামাল দিতে না পেরে বাস মালিকরা বাসের চাকা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে যাত্রীদের নাজেহাল অবস্থা। বহরমপুর যাওয়ার বিকল্প রাস্তা অবশ্য রয়েছে। কিন্তু তার জন্য ডোমকল-জলঙ্গি ঘুরে পাক্কা ৭৫ কিলোমিটার পেরোতে হয়। যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়াও গুনতে হয়। ২৮ টাকার পরিবর্তে ৪৪ টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে তাঁদের। বেশ কিছুদিন ধরে বাড়তি গাঁটের কড়ি খসিয়ে জলঙ্গি-ডোমকল ঘুরে বহরমপুর যেতে হওয়ায় দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ নিত্যযাত্রীরা। করিমপুরের বাসিন্দা নিমাই মণ্ডল বলেন, “নানা কাজে প্রায়ই বহরমপুর যেতে হয়। আগে মেরেকেটে দু’ঘণ্টার মধ্যে পোঁছে যেতাম। কিন্তু নতিডাঙা এলাকায় রাস্তা খারাপ হওয়ায় বাস বন্ধের জন্য ঘুরপথে বহরমপুরে যেতে প্রায় তিনঘণ্টা সময় লাগছে। তার উপর আছে অতিরিক্ত ভাড়ার বোঝা।” |
যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা জেনেশুনেও বাস মালিকরা নিরুপায়। করিমপুর বাস মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক চিন্ময় বিশ্বাস বলেন, “ওই রুটে প্রতিদিন কুড়িটা করে বাস চলত। যাত্রীও হত ভাল। কিন্তু রাস্তার একাংশ খারাপ হওয়ার দরুন আমরা বাধ্য হয়ে বাস বন্ধ রেখেছি।” এলাকাবাসীর দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই ওই রাস্তা যাতায়াতের অযোগ্য। একটু বৃষ্টিতেই সোঁতার চেহারা নেয় রাজ্য সড়কের নতিডাঙা এলাকা। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান কংগ্রেসের রেজাউল শেখের রসিকতা, “বর্ষাকালে এই রাস্তায় ভাল মাছ চাষ হবে!” এতদিন ধরে এই হতশ্রী রাস্তা সারানোর ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের তেমন হেলদোল নেই। করিমপুর-২ এর বিডিও তাপস মিত্র বলেন, “দিন কয়েক ওই রাস্তায় বাসও চলছে না। কিন্তু ব্লক প্রশাসনের পক্ষে অতটা রাস্তা সারানো অসম্ভব। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।” কিন্তু কতদিনে জেলা প্রশাসন হাত লাগাবে রাস্তা সারানোর কাজে? জানা নেই ভুক্তভোগীদের। আপাতত অতিরিক্ত পথ উজিয়ে বেশি টাকা খরচ করে বহরমপুরে যাওয়াই দস্তুর নিত্যযাত্রীদের। |