তেইশ বছরের পেশাদার ডাবলস জীবনে ৯৪ জন পার্টনার নিয়ে কোর্টে নেমেছেন। কিন্তু তিনটে যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ডাবলস খেতাবের তিনটেই এসেছে আলাদা চেক পার্টনার নিয়ে। যার শেষটা এল রবিবার আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে রাদেক স্টেপানেকের সঙ্গে। রহস্যটা কী? প্রশ্নটা শুনেই লিয়েন্ডার পেজ মজা করে বলে দেন, “আসলে চেক পার্টনার মানেই চেক মেট।”
সেমিফাইনাল আর ফাইনালে পরপর বিশ্বের এক আর দু’নম্বর জুটিকে হারিয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব পাওয়ার পর ৪০ বছর বয়সি চ্যাম্পিয়ন প্রথমে বলা নিজের কথাটাই আরও স্পষ্ট করে দেন, “ডাবলসে ভাল খেলতে হলে আমি একটা কথাই বলব সবাইকে, ভাল পার্টনার বাছো ভাই আগে। আমার ডাবলস পার্টনারের সঙ্গে শুধু কোর্টের মধ্যেই নয়, কোর্টের বাইরেও অদ্ভূত একটা রসায়ন রয়েছে। সেটাই সফল হওয়ার মন্ত্র।” পার্টনার রাদেকের মুখেও লিয়েন্ডারের কথারই প্রতিফলন। “চোটের জন্য বেশ কিছু দিন কোর্টের বাইরে ছিলাম। কত দিনে সুস্থ হয়ে কোর্টে ফিরতে পারব বুঝতে পারছিলাম না। কিন্তু জানতাম লিয়েন্ডার আমার সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছে। আবার কোর্টে নামার অপেক্ষায় আছে। জানতাম ও সব সময় পাশে থাকবে। এই ভরসাটা স্পেশ্যাল। শুধু কোর্টে নয়, কোর্টের বাইরে আমাদের এই বন্ধুত্বটাই আসল এই ট্রফি জেতার পিছনে।” |
ফ্লাশিং মেডোয় চেক সঙ্গীকে নিয়ে লিয়েন্ডার। ছবি: এএফপি |
গত মরশুমে লি-রাদেক জুটি শুরুটা করেছিলেন অস্ট্রেলীয়া ওপেন জিতে। সেটাই ছিল ডাবলসে লিয়েন্ডারের কেরিয়ার গ্র্যান্ড স্ল্যাম। কিন্তু হেরে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ফাইনালে। এ মরসুমে শুরুটা তেমন হয়নি। উল্টে অস্ট্রেলীয় ওপেনের পরেই রাদেকের পিঠের চোটের সমস্যা বাড়ে। এতটাই যে, পিঠে জটিল অস্ত্রোপচার করাতে হয়। এত দ্রুত সুস্থ হয়ে কোর্টে নামতে পারবেন পঁয়ত্রিশের চেক প্লেয়ার, সেটা অনেকেই ভাবেননি। কিন্তু লিয়েন্ডার কখনও হাল ছাড়েননি। রাদেকের পাশে ছিলেন। এই হাল না ছাড়া মনোভাবই তো চল্লিশের তরুণকে এখনও টেনিসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে সাফল্য দিয়ে চলেছে। যে সাফল্য দেখার পর সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ঝড় ওঠে, “৪০ এর লিয়েন্ডার যদি পারেন, তা হলে অন্যরা পারবে না কেন?”
তবে ২০১৩ ইউএস ওপেন ডাবলসের খেতাবি লড়াইয়ের ‘বটমলাইন’ বোধহয় লিয়েন্ডারদের প্রতিদ্বন্দ্বী জুটির অন্যতম আলেকজান্দার পেয়া-র একটা মন্তব্য-ই। দ্বিতীয় সেটের মাঝখানে যাঁর সামান্য পেশির টানের জন্য মিনিটকয়েক ম্যাচ থামাতে হয়েছিল। কোর্টেই তিনি ফিজিওর শুশ্রূষা নিয়ে ফের খেলতে নামেন এবং ম্যাচ শেষ করেন। লিয়েন্ডারকে ম্যাচের পর আলাদা করে তাঁকে কিছু বলতেও দেখা যায়। সেই পেয়া বলে দিয়েছেন, “আমাদের চলতি মরসুমটা দুর্দান্ত গিয়েছে সন্দেহ নেই। গত দু’সপ্তাহও দারুণ গেল। অনেক চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে ইউএস ওপেন ফাইনাল খেললাম। কিন্তু চূড়ান্ত লড়াইয়ে এমন একটা জুটির কাছে হারলাম যাদের কাছে হারের মধ্যে কোনও লজ্জা নেই।”
|
পিভি সিন্ধু
অভিনন্দন লিয়েন্ডার পেজ। ১৪তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব জিতলে। ১৯৯৬ অলিম্পিকে ব্রোঞ্জও জিতেছিলে। আর ৪০ বছরেও তুমি বিশ্বমানের। |
মহেশ ভূপতি
চল্লিশ বছর বয়স এলপি। সত্যিই। খেলা দেখে মনে হল কুড়ি। উদ্বুদ্ধ করার মতো খেললে... |
|