|
|
|
|
সদ্যোজাতকে ‘মেরে’ নর্দমায় ফেলে ধৃত মা-সহ চার জন
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
হাওড়ার টি এল জায়সবাল হাসপাতালের পাশের একটি নর্দমায় রবিবার ভোরে এক তরুণীকে প্লাস্টিকে মোড়া কিছু ফেলতে দেখেই সন্দেহ হয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। রিকশা করে আসা ওই মেয়েটির সঙ্গে আরও কয়েক জনকেও দেখেছিলেন তাঁরা। বিষয়টি জানিয়ে এলাকাবাসীরা তখন পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে নর্দমা থেকে প্লাস্টিকে মোড়া সদ্যোজাত শিশুকন্যার দেহ উদ্ধার করে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানান, আগেই মৃত্যু হয়েছে শিশুটির।
হাওড়ার মালিপাঁচঘরা থানার ঘুসুড়ি-ধর্মতলা রোড এলাকার ওই বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ প্রথমে তরুণীর সঙ্গে আসা দুই রিকশাচালককে খুঁজে বার করে। তাঁদের কাছ থেকেই ওই তরুণীর হদিস পান তদন্তকারী অফিসারেরা। পটনার বাসিন্দা ওই তরুণী ততক্ষণে হাওড়া স্টেশনে চলে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে গিয়ে স্টেশনের টিকিট কাউন্টার থেকে ওই তরুণী, তার দিদি ও তাদের প্রতিবেশী এক দম্পতিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। খোঁজ চলছে তরুণীর প্রেমিকেরও।
পুলিশের অনুমান, অবিবাহিতা অবস্থায় ওই শিশুকন্যার জন্ম দিয়েছিল মেয়েটি। আত্মীয়-প্রতিবেশীদের প্রশ্নের কী জবাব দেবে, এ কথা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে সে। তার পরেই সে সন্তানকে হত্যা করে বলে পুলিশকে জানিয়েছে ওই তরুণী। হাওড়ার অতিরিক্ত ডিসি (নর্থ) রশিদ মুনির খান বলেন, “চার জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। যে যুবকের সঙ্গে তরুণীর ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল, তাঁরও খোঁজ চলছে।” শহর-লাগোয়া এলাকায় এই ঘটনা চমকপ্রদ বলে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তারা। নারী ও সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “পুলিশ পুরো বিষয়টিই জানে। তারা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত তরুণীর বাড়ি পটনায়। ঘুসুড়িতে দিদির কাছে থেকে পড়াশোনা করছিল সে। আঠেরো বছর বয়সী নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীর সঙ্গে স্থানীয় এক যুবকের পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা হয়। পুলিশের অনুমান, তার পরেই ওই তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পুলিশের দাবি, ওই তরুণী জানিয়েছে, রবিবার ভোরে এক শিশুকন্যার জন্ম দেয় সে। এর পরেই সে সদ্যোজাতকে নাইলনের দড়ি পেঁচিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ। খুনের পরে শিশুটির দেহ সাদা কাপড় ও প্লাস্টিকে মুড়ে দিদি এবং পড়শি এক দম্পতিকে সঙ্গে নিয়ে দু’টি রিকশা ভাড়া করে জায়সবাল হাসপাতাল এলাকায় যায়। সেখানকার একটি নর্দমায় শিশুটির দেহ ফেলে দিয়ে চলে যায় তারা। ঘটনাটি দেখে প্রাতর্ভ্রমণে বেরোনো কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দাই পুলিশে খবর দেন। |
|
|
|
|
|