নিজেদের মধ্যে মারামারি করছিলেন দুই ভাই। ঠেকাতে গিয়ে ঘুষি খেয়ে দাঁত হারালেন এক পুলিশ অফিসার।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হেয়ার স্ট্রিট থানার এজরা স্ট্রিটে। কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারকে মারধরের অভিযোগে দুই ভাই অভিষেক সিংহ এবং অমৃতেশ সিংহকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের বাড়ি রিষড়ায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, আহত পুলিশ অফিসারের নাম শুভজিৎ ঘোষ। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছিল শনিবার?
পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ এক ব্যক্তি ফোন করেন লালবাজারের ১০০ নম্বরে। তিনি জানান, ৩২ নম্বর এজরা স্ট্রিটের এক ব্যবসায়ীর অফিসে খুব গোলমাল হচ্ছে। ওই ব্যবসায়ীর দুই ছেলে নিজেদের মধ্যে মারপিট করছে বলে ওই ব্যক্তি পুলিশকে জানান। এর পরেই লালবাজারের কন্ট্রোল রুম থেকে হেয়ার স্ট্রিট থানায় যোগাযোগ করে পুরো বিষয়টি জানানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনার কথা শুনে এক জন কনস্টেবলকে সঙ্গে নিয়ে এজরা স্ট্রিটের ওই ব্যবসায়ীর অফিসে যান থানার ডিউটি অফিসার শুভজিৎ ঘোষ। ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনি দেখেন, টাকাপয়সা সংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে বৈদ্যুতিন সামগ্রীর ব্যবসায়ী সুনীল সিংহের দুই ছেলে অভিষেক ও অমৃতেশ নিজেদের মধ্যে মারামারি করছেন।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, বাবা সুনীল সিংহের কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায়ের জন্য শনিবার সন্ধ্যায় ওই অফিসে যান অভিষেক। চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন তিনি। ওই সময়ে সুনীলবাবুর সঙ্গে তাঁর ছোট ছেলে অমৃতেশও সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে পুলিশ জানায়।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিষেকের আচরণের প্রতিবাদ করেন অমৃতেশ। তিনি ভাইকে বাধা দিলে দুই ভাইয়ের মারামারি শুরু হয়ে যায়। সেই সময়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন হেয়ার স্ট্রিট থানার সাব ইনস্পেক্টর শুভজিৎ ঘোষ ও এক পুলিশ কনস্টেবল। তদন্তকারীদের দাবি, সুনীল সিংহের কাছ থেকে পুরো ঘটনা জানতে পেরে তিন জনকে তাঁর সঙ্গে থানায় যেতে বলেন ওই পুলিশ অফিসার। অভিযোগ, থানায় যেতে হবে শুনেই শুভজিৎকে আক্রমণ করেন দুই ভাই। অভিষেকের ঘুষিতে ভেঙে যায় ওই সাব ইনস্পেক্টরের দাঁত। খবর যায় হেয়ার স্ট্রিট থানায়। থানা থেকে পাঠানো হয় আরও পুলিশ। এর মধ্যেই পালিয়ে যান অভিষেক। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অমৃতেশকে গ্রেফতার করে। রবিবার ভোরে রিষড়ার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিষেককে।
সুনীল পুলিশকে জানিয়েছেন, চাহিদা মতো টাকা না দিলেই তাঁর উপরে অত্যাচার চালাতেন অভিষেক। আগেও এজরা স্ট্রিটের অফিসে ঢুকে তিনি জোর করে টাকা নিয়ে গিয়েছেন। তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, আগেও হুগলি জেলা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন অভিষেক। |