চোলি কে সামনে ক্যায়া হ্যায়
ফিনফিনে কালো শিফন শরীরে মুড়ে করিনা কপূর যেদিন কালো আর রানি বর্ডারের ব্রা-কাট ব্লাউজে নিজের উন্মাদনাকে ‘হিরোইন’ ছবিতে উজাড় করে দিয়েছিলেন সে দিন থেকেই চোলিকে পিছে নয়, একেবারে খুল্লামখুল্লাই চোলির জমানা শুরু।
এই স্রোতে বাদ যাচ্ছেন না পুজোর হুজুগে বাঙালিনীরাও।
“দুর্গাপুজোর চার দিনে আটটা শাড়ির জন্যে এমন কতগুলো ব্লাউজ বানিয়েছি যা যে কোনও শাড়ির সঙ্গেই যাবে। শাড়ি আপাতত কেনা হয়নি আমার, কিন্তু ব্লাউজ রেডি,” বলছেন এক বিখ্যাত হোটেলের এইচ আর ম্যানেজার অমৃতা দত্ত। বড় বড় শপিং মল থেকে শহরের নামকরা ব্লাউজের দোকান থেকে শহরতলিতেও ছড়িয়ে গিয়েছে চটকদার ব্লাউজের সম্ভার। দর্জির কাছে গিয়ে ডিজাইন দেখিয়ে ব্লাউজ বানানোর সময় না থাকলেও অসুবিধে নেই। এই সব বিপণিই জোগান দিচ্ছে লাস্যময় সব ব্লাউজ। হল্টার থেকে চোলি কাটের ব্লাউজ, তার সঙ্গে বাহারি ফ্যাব্রিকের বুনোটে শুধু শাড়িই নয় যে কোনও নারীর ইমেজকেই আকর্ষণীয় করে তোলে বলেই মনে করছেন আধুনিকারা।
“আমি তো বলব ব্লাউজ একটা বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছে। শাড়ির চেয়ে আমাদের দোকানে এখন ব্লাউজের বিক্রি অনেক বেশি। আর এমন সব ব্লাউজের চাহিদা বাড়ছে যার দাম শাড়ির দামের সমান বা কখনও তার চেয়েও বেশি,” বলছেন দক্ষিণাপণের এক বিখ্যাত শাড়ি দোকানের কত্রী নীলাঞ্জনা সরকার। চড়া দামের ব্লাউজের চাহিদার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানালেন তাদের ব্লাউজগুলো এমন মাপে তৈরি করা হচ্ছে যা পরলে অন্তর্বাস পরার প্রয়োজন থাকে না। ব্লাউজগুলোর প্রত্যেকটাতেই এক ধরনের প্যাডিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে যে যার শরীরের মাপ অনুযায়ী ব্লাউজেই কাপ সাইজ পেয়ে যাচ্ছেন। খুব ভাল ফিটিংও দেওয়া হচ্ছে। নীলাঞ্জনার মতে ব্লাউজের কাপড় কেনা, দর্জিকে তাগাদা দেওয়ার একটানা ঝক্কি এড়াতে এই ব্লাউজের চাহিদা দিনকে দিন বেড়েই চলবে।
কাপস্ লাগানো ব্লাউজ আজ আর কেবল ফ্যাশন নয়, এটাকে প্রয়োজনীয়তা বা ইউটিলিটির জায়গা থেকেই দেখতে হবে। এ বারের পুজোয় একটু সাহস নিয়ে জর্জেট, ক্রেপ বা বিডসের কাজ করা ফিনফিনে শাড়ির সঙ্গে ছোট ঝুলের শ্রাগ বা বুলেরো পরুন। ভিতরে ইনার বা বিকিনি পরে এই স্টাইল ক্যারি করতে পারলে পুজোর চারদিন শুধুই আপনার। এমনটাই মনে করছেন ফ্যাশন ডিজাইনার অভিষেক দত্ত। অন্য দিকে দক্ষিণ কলকাতার এক বিখ্যাত দোকানের কর্ণধার রুমি বিশ্বাস জানালেন, এ বছরের পুজোয় হ্যান্ড প্রিন্টেড মধুবনী ব্লাউজের চাহিদা এতটাই বেশি যে তাঁরা জোগান দিয়ে উঠতে পারছেন না।
এক টুকরো ছলাকলা
হেপ লুক: ব্যাকলেস চোলি স্টাইলের ব্লাউজে খোলা পিঠ বাঁধ ভাঙা লুক-রাত পার্টির জন্য।
কর্প লুক: কলার স্টাইলের ব্লাউজ এক ধরনের কর্পোরেট লুক তৈরি হয়। দেখতে দুর্দান্ত স্মার্ট।
হল্টারনেক: মূলত ফিতে বা কেতাবি দড়িকে বক্ষবন্ধনী হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
সিঙ্গল শোল্ডার: এক কাঁধ উন্মুক্ত। যাঁদের কাঁধের অংশটি চওড়া তাঁরা এ ধরনের ব্লাউজ ব্যবহার করতে পারেন।
স্ট্রিংড্ব্যাক স্টাইল: একটি ফিতের মাধ্যমে পিঠের বাঁধন দিয়ে এই ব্লাউজটি তৈরি হয়।
টিউব চোলি: কাঁধ বা হাতা থাকে না। জিপারের জায়গায় রঙিন পুঁতি ব্যবহার করা হয় নাটকীয় লুকের জন্যে।
একরঙা যে কোনও ধরনের শাড়ির সঙ্গে এই ব্লাউজ চলতে পারে। এ ছাড়াও নজর কাড়ছে সুচিত্রা সেনের স্টাইলে পিছনে পান শেপের সামনে বোট নেকের ব্লাউজ। সব্যসাচীর দৌলতেও থ্রি কোয়ার্টার হাতার চল এখন খুব বেশি। সেই কথা মাথায় রেখে নেট ছাড়াই হ্যান্ডলুমের ট্রান্সপারেন্ট থ্রি কোয়ার্টার ব্লাউজের কাট এবার পুজো মাতাবে বলে রুমি মনে করছেন।
খাদির নরম বুনোটের ব্লাউজ এথনিক লুকের জন্যে খুব-ই মানানসই। তার সঙ্গে স্লিভ কাটা ডিপ নেকে যদি একটু লেসের হাল্কা ফ্রিল জুড়ে দেওয়া যায় তা হলে তো কথাই নেই। খাদি আর লেসের ফিউশন ছাড়া ছাপা বা ব্লকের বোল্ড প্রিন্টের বোটনেক ব্লাউজ চলতে পারে। একরঙা শিফনের সঙ্গে এই বোটনেক ব্লাউজ সান্ধ্য আসরে চমক আনবেই।
হ্যান্ডলুমের শাড়ির সঙ্গে আজকাল কন্ট্রাস্ট ছাপা শর্ট স্লিভ পিঠ কাটা ফিতে দেওয়া ব্লাউজের কদর দিন দিন বাড়ছে। অফিস থেকে আড্ডা যে কোনও ক্ষেত্রেই তা মানানসই। দিনক্ষণ বিচার করে সেজে নিন একেক ধরনের সিম্পল অথচ স্টানিং কাট-এ। এই সব জানা গেল বিভিন্ন ফ্যাশন ডিজাইনের সঙ্গে কথা বলে।
সুন্দর নকশাদার ব্লাউজ পরা মায়াবিনীরা যে কোনও পুরুষের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে তাঁরা মোহাবিষ্ট হবেনই।
আর তখন সেই গানটা পাল্টে দিয়ে হয়তো গাইতে হবে ‘চোলি কে সামনে ক্যায়া হ্যায়’... পিছে নয়!
শ্রীমতী মাধুরী নেনে কি শুনছেন?
বিকিনি স্টাইল: এই ব্লাইজে ফিতের বন্ধনেই বাজি মাৎ।
বর্ণনা: ডিজাইনার শুচিস্মিতা দাশগুপ্ত



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.