|
|
|
|
ভার্চুয়াল ডাইজিন খেতে বলছেন কিউ |
যাঁদের ‘তাসের দেশ’ হজম হয়নি তাঁদের জন্য কিউ-য়ের প্রেসক্রিপশন। পড়লেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত |
রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে পরীক্ষা করার পর এখন কি কলকাতাতে থাকতে গেলে আপনার ভিসা লাগছে? না, একেবারেই তা হয়নি তো। ঠিক যেমন ছিল তেমনই আছে।
কী মনে হচ্ছে, লোকের কেমন লাগল? কিছু সংখ্যক মানুষ আছেন যাঁদের কাছে কিউ-এর সবই গিমিক... আমার তো কাজটাও এটাই করা। পরীক্ষা করতে অনেক বছর লেগেছে। তাই ফলটাও তক্ষুনি পাব না সেটা জানতাম। অধিকাংশ লোক পছন্দ করেছে কাজটা। কিছু লোক পছন্দ করেনি। কারও হয়তো একটা জিনিস পছন্দ হয়নি। কারও পুরোটাই পছন্দ হয়নি। যে সমালোচকেরা খুব কষ্ট পেয়েছেন ফিল্মটা দেখে আমার ইচ্ছে করছে তাঁদের একটা করে চকোলেট দিতে। কষ্ট সহ্য করার জন্য। এ ছাড়া যাঁদের হজম হয়নি তাঁদের জন্য আমার তরফ থেকে কিছু ভার্চুয়াল ডাইজিন রইল। তবে এটাও ঠিক যে সব কিছুই কনটেক্সচুয়াল। আমাদের পশ্চিমবঙ্গে এক ধরনের শিল্প-কেন্দ্রিক কাজ হয়। সেখানে পৃথিবীতে অন্য ধরনের কাজ হচ্ছে। আমার ধারণা পশ্চিমবঙ্গের কাজের মানটা বিশ্ব মানের থেকে অনেকটাই নীচে। কেউ যদি পশ্চিমবঙ্গের কাজের নিরিখে আমাদের কাজটা দেখেন, তা হলে তাঁর দুঃখ পাওয়া অবধারিত।
|
কিউ।
ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল। |
এত দিন আন্ডারগ্রাউন্ড ফিল্ম মেকার ছিলেন তাই অসুবিধা ছিল না। যেই হল-এ ছবি রিলিজ করলেন অমনি কি অনেকের প্রতিযোগী হয়ে গেলেন? আমি এ সবে থাকি না। কারও চিন্তা করার কিছু নেই। সত্যি যদি সে রকম হয়, কিউ এখনও আন্ডারগ্রাউন্ড ফিল্ম মেকারই আছে। আমি তো আবার একটা ডকুমেন্টারি বানাচ্ছি। শাড়ি নিয়ে সেই কবে থেকে কাজ করছি। সেটা শেষ করব।
নির্লিপ্ত হয়ে গেলেন কী করে? জানেন যে আপনার খেলাটা বিদেশি মার্কেটে, তাই এখানে কে কী বলল, তাতে কিছুই এসে যায় না... এটা খেলা নয়। সিরিয়াস ব্যাপার। বিদেশে এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে বসলেই সব কিছু বিক্রি হয়ে যায়। এটা একটা ডেভেলপমেন্ট ওরিয়েন্টেড কাজ যা বুঝতে লোকের অসুবিধা হচ্ছে।
প্রসেনজিতের সঙ্গে ফিল্মটা হচ্ছে? ওটার ডেভেলপমেন্ট চলছে।
উনি ‘তাসের দেশ’ দেখেছেন? প্রিমিয়ারের সময় দেশে ছিলেন না। তার পর জানি না।
কেউ কেউ জিজ্ঞেস করেছেন কিউ-এর কাছে বিপ্লব মানেই কি যৌনতা? বিপ্লবের মূলে যৌনতা আছে বলে আমার মনে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে যাঁরা সুড়সুড়ি খাওয়ার জন্য ফিল্মটা দেখতে গিয়েছেন তাঁদের হতাশ হতে হয়েছে।
কিছু মানুষ তো বলছেন আপনার ছবি হল-এ কেউ দেখছে না... সত্যি বলছি আমার এ সব সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। জানার ইচ্ছেও নেই। ওই সব লোকাল, পেটি জিনিসের মধ্যে তো সময় নষ্ট করা উচিত নয়। এই সব স্পেকুলেশন নিয়ে কেন সময় নষ্ট করব? এটা কি স্টক মার্কেট নাকি? স্টক মার্কেট আর আর্ট মার্কেট একদম আলাদা। আর্ট মার্কেটের অর্থনীতিটাও আলাদা। নেটওয়ার্কিংটাও আলাদা। আমরা তো চেষ্টা করব কী কী জায়গা থেকে সাপোর্ট পেতে পারি সেটা দেখার। সেই জায়গাতে দাঁড়িয়ে পরীক্ষা করাটা তো দরকার। বিভিন্ন জিনিস নিয়ে পরীক্ষা। আমি কোনও ইগো নিয়ে কাজ করছি না। এই তো শুনলাম পরিচালক মৈনাক ভৌমিক নাকি আপনাদের কাগজে কী সব বলেছে। আমি বীরভূমে ছিলাম। পড়িনি এখনও। কিন্তু যেটুকু শুনলাম তা থেকে মনে হয়েছে যে সবাই মেন পয়েন্টটাই মিস করছে। ‘তাসের দেশ’য়ের মতো একটা ছবি রিলিজ করল এ ভাবে বলেই হাউজফুল হতে হবে তার তো মানে নেই। যে কোনও ব্যবসা যখন শুরু হয় তখন তার প্রথম দিন থেকেই বিশাল একটা খদ্দের থাকে না। আমরা অল্টারনেটিভ ফান্ডিং আর ইকনমিক্স নিয়ে ভেবেছি। ‘গান্ডু’র থেকে অনেক বড় আর্ট ফিল্ম হল ‘তাসের দেশ’। আমরা একটা আর্ট মার্কেটের জিনিসকে পাবলিক ডোমেন-এ নিয়ে এসেছি। সেটা করার পর তা নিয়ে প্রতিযোগিতা কেন করব? ফিল্মটা বানিয়ে কেউ তো টাকা লস করেছে বলে শুনিনি।
তাই নাকি? শুনলাম আপনারা লিখেছেন যে ফিল্মটা নাকি মুখ থুবড়ে পড়েছে! মুখ থুবড়ে মানে কী? যখন আমার এমন অবস্থা যে আপনি ফোন করছেন আর আমি ফোনটা ধরতে পারছি না কারণ আমি গলায় দড়ি দিয়েছি। তা তো হয়নি। দু’টো লোক আর সাতটা মাছি তো ছিল না হল-এ। ডিস্ট্রিবিউটর পয়সা পেয়েছে। ট্রেডের কোনও অসুবিধা হয়নি। দেখুন আমরা গা* নই। এটা তো ঠিক যে বহু লোক ফিল্মটা বড় পরদায় দেখেছে। যে যা ইচ্ছে বলে গেলেই বুদ্ধিমান লোকেরা তা বিশ্বাস করবে তা কিন্তু নয়। আমরা ভাবি যে অধিকাংশ লোক বোকা। কিন্তু সেটা সত্যি নয়। তাই লোককে বলতে দিন। কথাগুলোর মধ্যে কতটা সত্যি তা বুদ্ধিমানরা বুঝতে পারবেন। আমি উত্তর কেন দেব? আমি তো এসব শুনে মজা পাই। তবে সেগুলো শেয়ার করি না। কারণ আমার মজাটাও নিজের কাছে, খারাপ লাগাটাও।
এ রকম তো বলা হচ্ছে যে ‘তাসের দেশ’য়ের জন্য আপনি নাকি দেড় কোটি টাকা নিয়ে মাত্র পঞ্চাশ লক্ষ দিয়ে ফিল্মটা বানালেন? এটাও বলা হচ্ছে? আমরা সরকারের ফান্ডিংয়ে ফিল্ম বানিয়েছি। সেখানে প্রতি বছর অডিট হয়। চালাকি করা ওখানে অত সহজ নয়। ‘ওভারডোজ’ বলে যে কোম্পানিটা আছে সেখানে আমরা সাত বছর মাইনে না নিয়ে কাজ করেছি। এখনও আমরা সাবসিডাইজড ভাবেই কাজ করি। আসলে সবাই তো এটা বোঝেন না। তাঁদের কাছে এ সব পরিষ্কার হবে না। তাঁরা কী করে বুঝবেন যে পয়সার বাইরেও কিছু আছে?
আর কোনও দিন রবীন্দ্রনাথের কোনও গল্প/ নাটক নিয়ে ফিল্ম বানাবেন? মাথা খারাপ! রবীন্দ্ররচনা নিয়ে ফিল্ম বানাব না। কিন্তু মানুষ রবীন্দ্রনাথ আমার ছবিতে হয়তো আসতেই পারেন।
|
|
|
|
|
|
|