ডেঙ্গি নিয়ে কাজিয়া শিলিগুড়িতে
ডেঙ্গি প্রতিরোধে ব্লিচিং ছড়াচ্ছেন মন্ত্রী থেকে বাম কাউন্সিলররা। অথচ স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ মেনে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে মশার লাভা মারতে যে তেল স্প্রে করার কথা সেই কাজ ঠিক মতো শুরুই হয়নি। ফুলের টব, পুরনো টায়ার, ফেলে দেওয়া নারকেলের খোলায় যাতে জল জমে না থাকে সে ব্যাপারে বাসিন্দাদের সচেতন করা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সে ব্যাপারে পুরসভা বা কেউ তৎপর নন বলে অভিযোগ। পুরসভাকে দোষারোপ করে শনিবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং বাম কাউন্সিলর জয় চক্রবর্তীর ‘ব্লিচিং ছড়ানো’ নিয়ে ‘লোক দেখাতে নাটক করা হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র এবং তাঁর দলের নেতৃত্ব। পাল্টা তৃণমূলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে পুরসভার ভূমিকা নিয়েও। বামেদের অভিযোগ, নাটক কারা করছেন মানুষ তা ভালই বুঝতে পারছেন। ক্ষমতার লোভে কংগ্রেস এবং তৃণমূল একে অপরকে দুষছেন। আর তার জন্য বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
শিলিগুড়ির ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের লিম্বু বস্তিতে জমে থাকা জলে
ব্লিচিং ছড়াচ্ছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব।
এ দিন ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে লিম্বু বস্তি এলাকায় গিয়ে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর কাজ করে এসজেডিএ। সম্প্রতি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে সেখানে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়। খোদ মন্ত্রী হাতে করে ব্লিচিং ছড়ান। মন্ত্রী যাওয়ার আগে অবশ্য এলাকার তৃণমূলের লোকজনেরা ওয়ার্ডে এক বার ব্লিচিং ছড়িয়েছেন। তার পর ফের তাঁরা ব্লিচিং ছড়াতে নামেন। একটিয়াশাল জুনিয়র হাই স্কুল চত্বরেও এ দিন ব্লিচিং ছড়ান মন্ত্রী। অথচ স্কুলের মাঠে অনেকটা জায়গায় জল জমে থাকলেও তা সরাতে কেউ ব্যবস্থা নেননি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
গৌতমবাবু বলেন, “এই পরিস্থিতিতে সকলের এগিয়ে আসা উচিত। সে জন্য এলাকা পরিষ্কার করতে নেমেছি। পুরসভা কোনও কাজ করেনি। সিপিএমের এই ওয়ার্ডে নিকাশি বেহাল। এ দিন এসজেডিএ’র তরফে ব্লিচিং ছড়ানো হয়েছে। রবিবার থেকে বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা জল সরানোর ব্যবস্থা করা হবে।” মশার লার্ভা মারতে তেল স্প্রে করার যে পরিকাঠামো দরকার পুরসভার তা রয়েছে। সে জন্য তাদেরই ওই কাজ করা দরকার বলে জানান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তিনি জানান, এসজেডিএ এ ধরনের কাজ করে না। কিন্তু পরিস্থিতির সামলাতে এগিয়ে আসতে হয়েছে। প্রয়োজনে কলকাতায় ফিরে তিনি পুর দফতরের ‘টিম’ পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন।
২৯ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম কাউন্সিলর জয় চক্রবর্তীর উদ্যোগে ব্লিচিং ছড়ানো হচ্ছে।
মেয়র বলেন, “পুরসভার তরফে সমস্ত ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে। ২০০ লিটার মশা মারার তেল আনা হয়েছে। তা স্প্রে করার কাজও শুরু হবে। তবে এলাকায় ব্লিচিং ছড়িয়ে, পুরসভাকে মিথ্যে দোষারোপ করে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী যা করছেন সেটা নাটক ছাড়া কিছু নয়।” স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রীমা ভট্টাচার্য শিলিগুড়িতে এ দিনও অভিযোগ করেন, পুরসভাকে সুডা এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য খাত থেকে মোটা টাকা দেওয়া হলেও তারা সচেতনতা প্রচারে এবং সঠিক তথ্য সংগ্রহের কাজ করেনি। মেয়রের দাবি, “স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী সবটা না জেনেই কথা বলেছেন।” কংগ্রেসের জেলা কমিটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জীবন মজুদারের দাবি, অতীতে বাম জমানায় শিলিগুড়িতে এক বার ডেঙ্গি মারাত্মক আকার নিয়েছিল। সে সময়ও গৌতমবাবু কাউন্সিলর ছিলেন। কিন্তু তখনও তাঁকে এ ভাবে উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি। এখন তিনি পুরসভার দোষ খুঁজতে যেটা করছেন তা নাটক ছাড়া কিছু নয়।”
নিজের ওয়ার্ডে এ দিন ব্লিচিং ছড়ান সিপিএম কাউন্সিলর জয় চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য দফতর ডেঙ্গি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ। পুরসভাও সঠিক ভূমিকা নেয়নি। এই অবস্থায় আমাদের সামর্থ্য মতো এ দিন ব্লিচিং ছড়ানো হয়।” একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য অভিজিৎ মজুমদার বলেন, “রাজনৈতিক কাজিয়ায় কংগ্রেস-তৃণমূল পরস্পরকে দুষছে।”

শনিবার ছবি দু’টি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.