হাওড়ার ধূলাগড়ে যৌথ উদ্যোগে গড়ে ওঠা ট্রাক টার্মিনালের জমির চুক্তি বাতিল করল রাজ্য সরকার। পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র শনিবার এ খবর জানিয়ে বলেন, “ওই জমি সরকার ফেরত নিয়ে নেবে। বাম আমলে ওই খাস জমি কী ভাবে এক জন বেসরকারি অংশীদারকে দেওয়া হয়েছিল, সেই প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখতে আমরা তদন্ত কমিশন গঠন করছি।”
২০০০ সালে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম (ডব্লিউটিআইডিসিএল) যৌথ উদ্যোগে ওই ট্রাক টার্মিনাল তৈরি করে। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “জমির ঊর্ধ্বসীমা আইন ভেঙে ৪২ একরের মতো খাস জমি চুক্তির ভিত্তিতে ওই সংস্থাকে দেওয়া হয়। কিন্তু কত টাকায় ওই জমি দেওয়া হয়েছিল, চুক্তির শর্ত কী ছিল, তার কোনও নথি পরিবহণ দফতরে নেই। শুক্রবার বোর্ড মিটিংয়ের পরে চুক্তি বাতিলের সুপারিশ করে ডব্লিউটিআইডিসিএল।” পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “ওই সুপারিশের ভিত্তিতেই ট্রাক টার্মিনালের জমি চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।”
যে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে রাজ্য ট্রাক টার্মিনাল গড়ে তুলেছিল, তার অংশীদার রতন চৌধুরী অবশ্য দাবি করেছেন, স্বচ্ছ ভাবেই জমি হস্তান্তর হয়েছিল। তাঁর বক্তব্য, “২০০০ সালে আমরা ধুলাগড়ে ২৪ একর জমি কিনেছিলাম। এখন সরকার কী করে ওই জমি ফেরত নেবে?” সেই সময় জমির দাম কত পড়েছিল? এ প্রশ্নের সরাসরি জবাব এড়িয়ে রতনবাবু বলেন, “আমি অসমে আছি। এখনই টাকার কথা বলতে পারছিনা। তবে চুক্তিতে সরকারকে ১১ শতাংশ অংশীদারি দেওয়ার কথা ছিল। সরকার তা মনে করলে নিতে পারে।” পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, “এ সংক্রান্ত সমস্ত নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরকারের কী প্রাপ্য ছিল, আদৌ তা পাওয়া গিয়েছে কি না, সে সবই দেখা হচ্ছে।”
তার আগেই অবশ্য ওই চুক্তির শর্ত খতিয়ে দেখতে কলকাতার একটি সলিসিটর ফার্মকে নিয়োগ করেছিল পরিবহণ দফতর। এ দিন মদনবাবু বলেন, “ওই সংস্থা জানিয়েছে, ধূলাগড়ে জমির উর্ধ্বসীমা আইন ভঙ্গ করা হয়েছে। কাগজে-কলমে যৌথ উদ্যোগ বলা হলেও, সমস্ত সুবিধা বেসরকারি অংশীদারই ভোগ করছে।” পরিবহণমন্ত্রী জানান, ‘ট্রান্সপোর্ট হাব’-এর নামে রাজারহাটে ২৮৩ একর জমি হায়দরাবাদের একটি সংস্থাকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে উল্টোডাঙায় উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের জমিও অন্যের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। |