বিয়েতে রাজি ছিল না বছর তেইশের মেয়েটি। ‘শাস্তি’ দিতে তাই ওই তরুণীর মুখে অ্যাসিড ছুঁড়ল তাঁর পড়শি ‘প্রেমিক’। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই তরুণীকে ভর্তি করা হয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তাঁর মুখের একটি অংশ পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ঝলসে গিয়েছে হাতও। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তরুণীর একটি চোখও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
মুর্শিদাবাদ জেলার ভগবানগোলার নিচু বাজার এলাকার ওই ঘটনার পরেই পটল মণ্ডল নামে ওই প্রেমিক-প্রবর পলাতক। পুলিশ তার খোঁজে আশপাশের গ্রামেও তল্লাশি শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।
কিন্তু ওই যুবক অ্যাসিড পেল কী করে?
অ্যাসিড-আক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যেই দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশ পালনে প্রতিটি রাজ্যকে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ওই নির্দেশে জানানো হয়েছে, সরকারের অনুমোদিত কোনও কাউন্টার ছাড়া অ্যাসিড বিক্রি করা যাবে না। শুধু তাই নয়, যাঁকে অ্যাসিড বিক্রি করা হচ্ছে, তাঁর ঠিকানা ও চেহারার বিবরণ এবং অ্যাসিড কেনার কারণও যেন বিক্রেতা লিখে রাখেন বলেও ওই নির্দেশে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট গত ১৮ জুলাইয়ের ওই নির্দেশে জানিয়েছে, কোনও দোকানদারের কাছে অ্যাসিড বিক্রির পরে ক্রেতার নাম বা বিবরণ পাওয়া না গেলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।
তা সত্ত্বেও যে এ ব্যাপারে বিশেষ সচেতনতা ফেরেনি, ভগবানগোলার ঘটনায় তা স্পষ্ট। মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর এ ব্যাপারে বলেন, “শুক্রবার সন্ধ্যার ওই ঘটনায় অভিযুক্তের নাম পটল মণ্ডল। তবে তাকে এখনও ধরা যায়নি।” কিন্তু অ্যাসিড সে পেল কী করে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে সে ব্যাপারে অবশ্য পুলিশের তদন্তে বাড়তি কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
পুলিশ জানায়, বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় ওই তরুণী ফিরে এসেছিল বাপের বাড়িতে। সেখানেই পড়শি যুবক বছর কুড়ির পটলের সঙ্গে তার সম্পর্কও গড়ে উঠেছিল। তবে এখনই বিয়েতে রাজি ছিল না ওই তরুণী। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ওই মহিলা বলেন, “আমি ওই যুবককে জানিয়ে দিয়েছিলাম এখনই বিয়ে করতে রাজি নই। তা নিয়েই চাপ দিচ্ছিল সে। মাস কয়েক ধরে আমি তাকে এড়িয়েও চলছিলাম। সেই রাগে সে আমার মুখে অ্যাসিড ছুঁড়ে পালিয়ে গেল সে।” |