ইস্কন
বিদেশি ভক্তকে কোপ, অভিযুক্ত মঠেরই দেশি ভক্ত
মার্কিন নাগরিক রিকার্ডো অ্যান্টনিও অ্যালেরেস ইস্কনের শিষ্যত্ব গ্রহণের পরে সাধু মহারাজ নাম নিয়ে পাকাপাকি ভাবে মায়াপুরেই থেকে যাবেন বলে স্থির করেছিলেন। স্থানীয় গৌরনগরে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটও কিনেছিলেন রিকার্ডো। শুক্রবার রাতে জনা চারেক দুষ্কৃতী সেই ফ্ল্যাটে ঢুকেই তাঁকে খুনের চেষ্টা করে।
তবে, তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই চার ভাড়াটে খুনিকে ‘কাজে’ লাগিয়েছিলেন ইস্কনেরই অন্য এক ভক্ত, মহাবন্ধু ওরফে মানিক মণ্ডল। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। গুরুতর আহত রিকার্ডোকে ভর্তি করানো হয়েছে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে।
গ্রেফতার করা হয়েছে চার ভাড়াটে খুনিকেও। পুলিশ জানিয়েছে ধৃত সুশান্ত রায়, বলরাম অধিকারী, বিভাস বিশ্বাস বনগাঁর বাসিন্দা। পুলিশের জেরায় তারা কবুল করেছে রিকার্ডোকে খুন করতেই তারা ওই ফ্ল্যাটে চড়াও হয়েছিল।
নদিয়ার পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমন মিশ্র বলেন, “ইস্কনের ওই দুই ভক্তের মধ্যে টাকা পয়সা নিয়ে একটা গন্ডগোল চলছিল বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। তার জেরেই ওই ঘটনা। চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যে গাড়িতে ওই দুষ্কৃতীরা এসেছিল, সেই গাড়ির চালক-সহ গাড়িটিকেও আটক করা হয়েছে।”
ইস্কনের জনসংযোগ আধিকারিক রমেশ দাস বলেন, “আক্রান্ত ও অভিযুক্ত দু’জনেই গৃহী শিষ্য। ওঁরা মূল মন্দিরে থাকেন না। শুনেছি টাকা পয়সা লেনদেন সংক্রান্ত ব্যাপারে ওঁদের মধ্যে একটা গোলমাল চলছিল। তার জেরেই এই দূর্ভাগ্যজনক পরিণতি। প্রকৃত অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আমরাও দাবি করছি।”
আমেরিকা থেকে আসার পরে সাধু মহারাজ নামে ওই ইস্কন-ভক্ত গৌরনগরে একটি ভাড়া বাড়িতে উঠেছিলেন। পরে মহাবন্ধু দাস নামে অন্য ওই ভক্তের কাছে একটি ফ্ল্যাট কেনেন। সেই ফ্ল্যাটের দাম নিয়েই মহাবন্ধুর সঙ্গে তার মনোমালিন্যের সূত্রপাত। সেই বিবাদে ইতি টানতেই শেষ পর্যন্ত ভাড়াটে খুনিদের সাহায্য নিয়েছিলেন মহাবন্ধু, এমনই সন্দেহ পুলিশের। ধৃত দুষ্কৃতী সুশান্তও পুলিশের জেরায় কবুল করেছে এ কথা। সুশান্ত এ দিন হাসপাতালে বসে জানায়, “ওই বিদেশি ভক্ত নব্বই লক্ষ টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। কিন্তু মাত্র দশ লক্ষ টাকা দেওয়ার পর বাকি টাকা দিচ্ছিলেন না। সেই টাকা আদায়ের জন্যই আমাদের মায়াপুরে আনা হয়েছিল।” সেই মতো সাধু মহারাজ গোটা ‘অপারেশনের’ দায়িত্ব দেন তাঁর পরিচিত বনগাঁর এক দুষ্কৃতী বিভাস বিশ্বাসকে। অন্যদের সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার বিকেলে বিভাস মায়াপুর আসে।
সাধু মহারাজ বলেন, “রাত ন’টা নাগাদ মহাবন্ধু আমার ঘরে এসে জানায় যে, কয়েকজন আমার সঙ্গে দেখা করতে চায়। আমি আসতে বলি। সাড়ে ন’টা নাগাদ বেলের শব্দে দরজা খুলে দিই। জনা পাঁচেক যুবক ঘরে ঢুকে আমার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ধারাল অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি কোপাতে থাকে। আমি চিৎকার করতে থাকি। কোনওরকমে তাদের হাত ছাড়িয়ে পালিয়ে যাই।”
সাধু মহারাজের চিৎকারে ছুটে আসেন আসাপাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা। তাঁদের হাতে ঘটনাস্থলেই ধরা পড়ে যায় অভিযুক্ত সুশান্ত রায় ও বলরাম অধিকারী। তাদের জেরা করে শুক্রবার রাতেই ধরা হয় মহাবন্ধু দাস ও বিভাস বিশ্বাসকে। তবে ‘জনতার শাসনে’ জখম হয়েছে ধৃতেরাও। তাদের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.