পাহাড় নিয়ে শঙ্কা
পর্যটনের প্রসার থমকে আন্দোলনে
কার্শিয়াং এবং কালিম্পঙের পর্যটন আবাসগুলি সংস্কারে ১৫ কোটি টাকা দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আন্দোলনে পাহাড়ের উন্নয়ন-ভবিষ্যৎ আপাতত থমকে। পাশাপাশি, বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে সরকার তরাই-ডুয়ার্স এবং পাহাড়ের উন্নয়নে মাস্টার প্ল্যানও করেছে। গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)-র সদস্যদের নিয়ে পর্যটন কর্তারা দার্জিলিঙে বসে সেই মাস্টার প্ল্যান খুঁটিয়ে দেখে অনুমোদনও করেন। কথা ছিল দ্রুত কাজ শুরুর। কিন্তু পাহাড়ের এই পরিস্থিতিতে তা নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়েছে সরকারের।
সম্প্রতি শিলিগুড়িতে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী পর্যটনকে পাহাড়ের আন্দোলন থেকে ছাড় দেওয়ার জন্য মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের কাছে আবেদন জানান। মন্ত্রীর কথায়, “পুজোর মরসুমের আগে পাহাড়ে ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। আমি বিমল গুরুঙ্গকে অনুরোধ করছি, পর্যটনকে ছাড় দিন। কাশ্মীরের মতো এলাকায় জঙ্গি সমস্যা, আন্দোলন-সহ নানা বিষয় রয়েছে। কিন্তু সেখানেও পর্যটনকে কেউ বিরক্ত করে না। আমার আশা, বিমল গুরুঙ্গের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।”
শুক্রবার শিলিগুড়িতে ছোট গাড়ির চালকদের ‘ট্যুরিজম ফ্রেন্ডলি’ প্রশিক্ষণের একটি শিবিরে যোগ দিতে এসেছিলেন পযর্টন মন্ত্রী। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ের বিষয়টি দেখছেন। আমাদের আশা দ্রুত সমস্যা মিটবে। পুজোয় পাহাড়ে দেশি, বিদেশি পর্যটকদের যাতে ঢল নামে তা মোর্চার দেখা দরকার। পাহাড়ের স্কুল বা শিক্ষার সঙ্গেও পর্যটন জড়িয়ে রয়েছে। বহু পরিবারের ছেলেমেয়েরা পাহাড়ে পড়াশুনো করে। সেই সূত্রে লোকজন আসেন। সেখানে স্কুল কলেজ বন্ধ ভাবাই যায় না। তা-ও ভাল মোর্চা শিক্ষাকে ছাড় দিয়েছে। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেছেন, “আমরা গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে অন্তিম লড়াইয়ে সামিল হয়েছি। সব সিদ্ধান্তই গোর্খাল্যান্ড জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটিতে আলোচনা করে নেওয়া হচ্ছে। বড় লক্ষ্যে পৌঁছতে কিছু ত্যাগ স্বীকার তো করতেই হবে।”
পর্যটন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পাহাড়ের তিন মহকুমায় সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মিলিয়ে প্রায় ২৪ কোটি টাকার আগাম বুকিং হয়েছিল। তার সিংহভাগই বাতিল হয়েছে। গাড়ির বুকিংও তলানিতে। যে ভাবে দেশি-বিদেশি বুকিং বাতিল হয়েছে, তা সবই পণ্ড হতে বসেছে বলে দফতরের কর্তাদের অনুমান। মন্ত্রী বলেন, “পাহাড়ের উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রী খুবই উৎসাহী। বিভিন্ন প্রকল্পের কাজও শুরু হয়েছে। লামাহাটায় কাজ হয়েছে। রোপওয়ে, কটেজ, গল্ফ কোর্ট, রিসর্ট, বাসিন্দাদের উন্নয়নে কিছু বাড়িতে হোম-স্টে-এর ব্যবস্থা হচ্ছিল। আন্দোলনে সব থমকে গিয়েছে।”
রাজ্যের পর্যটন সচিব বিক্রম সেন পাহাড়ের আন্দোলন নিয়ে চিন্তিত। তাঁর কথায়, রাজ্য সরকার জিটিএ-কে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। সেই টাকায় ৭-৮টি জায়গায় পুরনো লজ সংস্কার ও সাজানো, তিস্তার উপর প্যারাডাইভিং, রিভার র্যাফটিং করার কথা। ঘুম-দার্জিলিং রাস্তা চওড়া হওয়ার কথা। আন্দোলনে সবই আটকে গিয়েছে। পাহাড়ের মাস্টারপ্ল্যান তৈরি হয়ে পড়ে আছে। শুক্রবারে অনুষ্ঠানে চালকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ‘পর্যটক পুলিশ’-এর বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে বলে জানান বিক্রমবাবু। তিনি জানান, পর্যটক-পুলিশ তৈরির জন্য কলকাতা পুলিশের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.