|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
অপুষ্ট নৈশভোজ অভিধান |
বইপোকা |
অতি দীর্ঘ বিরহের পরে সম্প্রতি এক ঘোর বর্ষণের দ্বিপ্রহরে মার্জারীর সাক্ষাৎ পাইলাম। এই গগনচুম্বী দ্রব্যমূল্যের দিনে মৎস্যবাজারের দিকে আর পা বাড়াইতে সাহস হয় না। সুতরাং সেই দ্বিপ্রহরের পাতে মার্জারীর লুব্ধ হইবার কিছু ছিল না। তথাপি মার্জারী ঘরে আসিল, দ্বিপ্রাহরিক সুখনিদ্রাটি ভাঙাইল এবং ফ্যাঁচ হাস্য-সহযোগে মন্তব্য করিল, বাপু হে তোমরা যেমন খাদ্যপ্রসঙ্গে আমাদিগকে অবজ্ঞা কর তেমনই ইংরাজগণ তোমাদিগের নোলা-প্রসঙ্গে যথেষ্ট উদাসীন। আমার বরাদ্দ দুগ্ধে তুমি প্রসন্নর দ্বিগুণ জল মিশ্রিত কর। ওই দেখ, বিদেশির নৈশভোজের অভিধানে তোমাদিগের পদ-বিষয়ে কী জলমিশ্রিত তথ্য! শুধাইলাম কী রকম? মার্জারী জন অ্যাটো রচিত দ্য ডিনার্স ডিকশনারি: ওয়র্ড অরিজিনস অব ফুড অ্যান্ড ড্রিঙ্ক (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস) গ্রন্থটির উল্লেখ করিল। দুগ্ধ ও মৎস্যেই তাহার রুচি বলিয়া জানিতাম। কিন্তু সে যে প্রকারে গ্রন্থটি হইতে ‘বিরিয়ানি’, ‘সামোসা’ ইত্যাদির তথ্য-ভুল ধরিতে থাকিল তাহাতে বুঝিলাম তাহার রুচি পরিবর্তমান। ‘বিরিয়ানি’-র কথায় কেন পাঁঠার কথা নাই, সামোসা-য় আলু কেন থাকিবে না, ‘শিঙাড়া’ কেন অনুপস্থিত, বিস্তর অভিযোগ মার্জারীর। যত বুঝাইতে যাই যে ইহা বিশ্বের খাদ্যাভিধান, সূক্ষ্ম ত্রুটি থাকিতেই পারে, তত সে হাসিতে হাসিতে বলে, তুমি নহ, তোমার মস্তিষ্কের ঔপনিবেশিক ভূতটি এই কুযুক্তি দিতেছে। হার মানিলাম। কিছুকাল ধরিয়া যে অভিধানটির সহিত আমার রসনা স্বপ্নসম্ভোগ চালাইতেছে তাহাতে এই বিষয়গুলি দায়সারা না হইয়া কিঞ্চিৎ তথ্যপুষ্ট হইলে মন্দ কী! মার্জারীর পরামর্শে জনকে পত্র পাঠাইব, স্থির করিয়াছি। |
|
|
|
|
|