এক দিনের শিক্ষকতা, স্বপ্নের প্রথম ধাপে তমসারা
রনে নীল পাড় সাদা শাড়ি। ঘড়ির দিকে তাঁকানোর ফাঁকে ক্লাসে ঢুকলেন ম্যাডাম। চক ডাস্টার টেবিলে রেখে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীর কাছ থেকে পাঠ্যবইটা চেয়ে নিয়ে চোখ বুলানো। তার পরে শুরু হয়ে গেল বাংলা ক্লাস। কখনও চেয়ারে বসে কখনও ক্লাসঘর ঘুরে পড়াতে লাগলেন। মাঝেমধ্যে দু চার জনকে যাচাই করে নিলেন প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়ে। একাদশ শ্রেণির ছাত্রী, দিদি থেকে আচমকা দিদিমণি বনে যাওয়া সাবিনা ইয়াসমিন সকলকে সামলালেন অভিজ্ঞ শিক্ষিকার মতো। অন্য ক্লাসঘরগুলিতে পর্যায়ক্রমে এ ভাবেই দশম শ্রেণির শেখর বর্মন। একাদশ শ্রেণির তমসা মজুমদার, বাবলি শর্মা। দ্বাদশ শ্রেণির রকি মিত্র, জিয়ানুর হোসেনদের মত নতুন স্যার ম্যাডামরা দিনভর পরপর ক্লাস নিলেন।
শিক্ষক দিবসে ক্লাস নিচ্ছে একাদশের ছাত্রী। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের
কলাবাগান হাইস্কুলে ছবিটি তুলেছেন হিমাংশুরঞ্জন দেব।
কেউ ছাত্রছাত্রীদের আরও মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিলেন। কেউ আবার বকলেন। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার শিক্ষক দিবসে এই ঘটনার সাক্ষী থাকল কোচবিহারের কলাবাগান হাইস্কুল। প্রধান শিক্ষক অরূপ সোম বলেন, “এক দিনের শিক্ষক-শিক্ষিকা হতে আগ্রহী কম নয়। কে কোন বিষয় পড়াতে চাইছে তা জানার পর দক্ষতা যাচাই করেই তালিকা করা হয়।” স্কুল পরিদর্শক, মাধ্যমিক মহাদেব শৈব বলেন, “এতে ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকতার পেশায় আসার বিষয়ে উৎসাহিত হবে। একদিনের এই অভিজ্ঞতা সবাই মনে রাখবে।” স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি ফি বছর শিক্ষক দিবস উদযাপনে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষকতার আগ্রহ বাড়াতে ছাত্র ছাত্রীরাই ক্লাস নিচ্ছেন। প্রায় দশ বছর ধরে এমনটাই চলছে। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ৫০ জনকে বাছাই করে ক্লাস নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। শিক্ষক উপল রক্ষিৎ বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষকতায় উৎসাহ বাড়াতেই আমরা এদিনের রুটিন তৈরি করে দিয়ে স্রেফ নজর রাখার কাজটা করি। বাকি সবটা পড়ুয়ারাই সামলায়।” নতুন ‘স্যার ম্যাডামদে’র পড়ানোর দক্ষতা দেখে খুশি পড়ুয়ারা। ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া বুসরা হক, নেহা বিনের কথায়, “দিদিদের দিদিমণি হতে দেখে দারুণ লেগেছে। আর একটু বড় হলে আমরাও একই ভাবে ক্লাস নিতে চাই।” সপ্তম শ্রেণির সুইটি পাল, শ্রবণা শর্মাদের বক্তব্য, “আমাদের তো মনেই হয়নি নতুন কেউ ক্লাস নিচ্ছে।” সব শুনে তৃপ্তি নতুন স্যার ম্যাডামদের। একাদশের ছাত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলল, “খুব টেনশনে ছিলাম। হাজার হোক প্রথম ক্লাস। এখন হালকা লাগছে। ভবিষ্যতে শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্নটা বেড়ে গেল।” আর এক জন বাবলি শর্মার কথায়, “ষষ্ঠ শ্রেণির ভূগোল বইটা ঝালিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম। দিদিমণি হয়ে কারও প্রশ্নের উত্তর না দিতে পারলে তো কেলেঙ্কারি হয়ে যেত।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.