টাকা না-পেয়ে গাছে কোপ তোলাবাজদের
তোলা না পেয়ে শ্রমিক সরবরাহকারী ঠিকাদারের সেগুন ও নিমগাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে এলাকার কিছু যুবকের নামে। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট শহর লাগোয়া ভাটপাড়ার খিদিরপুর এলাকার ঘটনা। এই ঘটনায় দু’জন তৃণমূল সমর্থকের নাম জড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। পর পর দুদিন রাতের অন্ধকারে অন্তত ৪০টি নিম ও সেগুন গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন স্থানীয় বাসিন্দা ওই ব্যক্তি কার্তিক হালদার। তিনি অভিযোগ করেন, “এলাকার কতিপয় যুবক ২ লক্ষ টাকা দাবি করে তা দিতে অস্বীকার করলে গত রবিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বাগানের ৩০ থেকে ৪০টি নিম ও সেগুন গাছ কেটে ফেলে তারা। টাকা না দিলে আরও গাছ কেটে বাড়িতে হামলা করবে বলে অভিযুক্তরা হুমকি দেয়” পরদিন, সোমবার তিনি বালুরঘাট থানায় ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। পুলিশ কোনও তদন্তেই যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। কার্তিকবাবু বলেন, “গত বুধবার রাতে ফের বাগানে ঢুকে একদল দুষ্কৃতী বেশ কিছু গাছ কেটে ফেলে যায়। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা না হওয়ায় পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হই।” বালুরঘাটে পুলিশ সুপার না থাকায় কার্তিকবাবুর অভিযোগপত্রটি এসপি অফিসে জমা দেন।
অন্তত ৪০টি গাছ এ ভাবে নষ্ট করা হয়েছে। বালুরঘাট লাগোয়া
ভাটপাড়া এলাকায় রাজকুমার মোদকের তোলা ছবি।
পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বালুরঘাটের বাইরে আছি। বিষয়টি দেখছি।” বালুরঘাট থানার আইসি বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “পুলিশ এলাকায় তদন্তে যায়। তদন্তে কার্তিকবাবু এলাকায় একটি বেদী নির্মাণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তা পালন না করায় স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর বিবাদের শুরু। তাঁরাই ক্ষিপ্ত হয়ে গাছ কেটেছে কি না, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” ডিএসপি (সদর) উত্তম ঘোষ এদিন বলেন, “তদন্তে ২ লক্ষ টাকা তোলাবাজির দাবির অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি।” এদিন এলাকায় পুলিশ গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে বলে ডিএসপি জানিয়েছেন। এলাকার ভাটপাড়া অঞ্চলের তৃণমূল প্রধান লগিন দাস বলেন, “কার্তিকবাবু কর্মসূত্রে মুম্বইতে থাকেন। সেখান থেকে টাকা রোজগার করে খিদিরপুরের বাড়িতে গাছ লাগিয়েছেন। পঞ্চায়েত ভোটের সময় তিনি তৃণমূলের হয়ে প্রচার করেছেন। ফলে ঘটনায় দলের কোনও বিষয় নেই। দুর্গামন্দিরের বেদী তৈরি নিয়ে পাড়ার একটি ক্লাবের ছেলেদের সঙ্গে তাঁর বিবাদ। গাছ কাটার ঘটনা তীব্র নিন্দা করছি।” এদিন পঞ্চায়েত প্রধান লগিন দাস এলাকায় গিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। প্রধানের বক্তব্য, “গাছ কাটার বিরুদ্ধে কার্তিকবাবুকে বনদফতরে অভিযোগ করতে বলেছি।” অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে তিনি আইসির সঙ্গে কথা বলবেন জানিয়েছেন। বালুরঘাটের খিদিরপুর এলাকায় প্রায় ৫ বিঘা জমির উপর কার্তিকবাবু দেড় বছর আগে প্রায় ৪,০০০ সেগুন ও নিমের গাছ লাগান। তিনি বলেন, “মুম্বইয়ের এরোলিতে পরিবার নিয়ে থেকে বড় বড় নির্মাণ সংস্থার হয়ে মালপত্র ও শ্রমিক জোগানের ঠিকাদারি করি।” গত ১২ বছর ধরে তিনি ও তার পরিবার ওই কাজ করে বালুরঘাটের বাড়িতে মাঝেমধ্যে এসে জমি কিনে ওই বাগান তৈরি করেন। ৩ কাঠার উপর বাড়িতে তাঁর বৃদ্ধা মা ও এক ভাইপো থাকেন। লাগোয়া ৫বিঘা জমিতে তার দুই মেয়ে ও এক ছেলের ভবিয্যতের কথা ভেবেই গাছ লাগান বলে তিনি জানিয়েছেন। এদিন এলাকায় গেলে পেশায় মুদির দোকানি অভিযুক্তদের একজন বাদল দেব বলেন, “পাড়ার ছেলেদের দাবি মেনে কার্তিকবাবু বেদী নির্মাণ করে দেবেন বলে কথা দেন। তারপরে কী হয়েছে, জানা নেই। অথচ ২ লক্ষ টাকা তোলা না পেয়ে গাছ কাটার মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।” তার বক্তব্য, “আমি ওই ঘটনায় জড়িত থাকলে পাড়ায় থেকে দোকানদারি করতাম না। আমি চাই প্রকৃত দোষীদের পুলিশ গ্রেফতার করুক।” ক্লাবের সম্পাদক তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা অমিত উপাধ্যায় বলেন, “ওই বেদি তৈরি নিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে কার্তিকবাবু ঝগড়া হয়। তবে গাছ কাটার ঘটনায় তৃণমূল জড়িত নয়।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.