আত্মহত্যায় প্ররোচনার তদন্তে গাফিলতি, নালিশ
কটি প্রভাবশালী মহলের চাপে দেশবন্ধুপাড়ার এক তরুণী বধূকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলার তদন্তে পুলিশ গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ করলেন মৃতার বাড়ির লোকজন। তাই যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই আর্ট স্কুলের কর্ণধার সোমেশ ঘোষকে যাতে পুলিশ গ্রেফতার করে, সে জন্য বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের দ্বারস্থ হন মৃতার স্বামী সহ পরিবারের সকলে। মন্ত্রী তাঁদের উপস্থিতিতে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামনকে ফোনে নির্দেশ দেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে। অভিযুক্তের পক্ষে আইনজীবীর দাবি, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে তাঁর মক্কেল সোমেশকে। এ দিকে মৃতার পরিবারের পাল্টা অভিযোগ, মৃত্যুর দু’দিন পরে সোমেশবাবু ফোন করিয়ে টাকা পয়সা দিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার প্রস্তাব দেন। সোমেশবাবুদের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, মৃতার পরিবারই টাকার দাবি করেছিলেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “ওঁরা আমার কাছে এসেছিল। আমি পুলিশ কমিশনারকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে বলেছি।”
এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্তও। মেয়র বলেন, “সোমেশের ওই সংস্থায় এর আগেও এই ধরণের গণ্ডগোল হয়েছিল বলে শুনেছিলাম। আমি বাইরে রয়েছি। ফিরেই পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।” বিষয়টি নিয়ে মৃতার স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ একটি আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশমনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন বলেন, “অভিযুক্ত পলাতক। তাঁকে পাওয়া মাত্রই গ্রেফতার করা হবে।”
পুলিশ মৃতার যে সুইসাইড নোট পেয়েছে তা থেকে জানা গিয়েছে, তরুণী বধূ হরেন মুখোপাধ্যায় রোডের ওই অফিসে কাজ করতেন। সেখানেই একাধিকবার তাঁকে সোমেশবাবু শারীরিক হেনস্থা করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। তাঁকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। তাতে সাড়া না দিয়ে ওই বধূ সোমেশবাবুর স্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়ে দেন বলে চিঠিতে লিখেছেন। সেখান থেকেই সমস্যার সূত্রপাত।
এর পর থেকেই সোমেশবাবু তাঁকে বিভিন্ন সময়ে ফোন করে হুমকি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে মেরে ফেলা এমনকী মা ও দিদিকে নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করেন বলেও অভিযোগ। তাঁর স্বামীর অভিযোগ, “ক্রমাগত হুমকিতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন আমার স্ত্রী। গত শনিবার প্রথম বাড়িতে সমস্ত কিছু আমাকে জানান তিনি। ওই সময়ে দেশবন্ধুপাড়ায় বাবার বাড়িতে ছিলেন তিনি। সেখান থেকেই লেক টাউনে ফোন করে বিস্তারিত জানান তিনি। সেদিনই প্রথম বিষয়টি জানতে পারি।” তাঁর স্বামী গিয়ে আশ্বাস দেন কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে দেবেন বলে। তারপরেও আশ্বস্ত হতে পারেননি ওই বধূ। ওই দিনই রাতে কোনও এক সময়ে নিজের ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি। তাঁর ঘর থেকে উদ্ধার হয় ১৩ পাতার ওই সুইসাইড নোটটি। মৃতার দিদি বলেন, “ন্যায় বিচারের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পর্যন্ত যাব। তবু এ ধরণের ঘটনা যেন কারও সঙ্গে না ঘটে সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করব।” এ দিকে সোমেশবাবুর আইনজীবী অখিল বিশ্বাস বলেন, “আমার মক্কেল নির্দোষ। তাঁদের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা না পেয়ে তাঁরা এখন মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে।” সোমেশবাবু বহুদিন শিলিগুড়িতে দুটি সংস্থা চালান। একটি হিলকার্ট রোডে নীলাদ্রীশিখর ভবনে এবং অপরটি হরেন মুখোপাধ্যায় রোডে। পাশাপাশি একটি পাক্ষিক সংবাদপত্র চালানো সহ বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে তিনি যুক্ত। সুইসাইড নোটে সোমেশের সঙ্গে এক বাম নেতার ঘনিষ্ঠতার কথাও উল্লেখ করা রয়েছে। যাঁর নাম করে সোমেশ ওই বধূকে ভয় দেখাতেন বলেও অভিযোগ।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.