|
|
|
|
এসজেডিএ দুর্নীতি |
তিন জনকে গ্রেফতারের আবেদন অন্য ২ মামলায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
বর্ষাকালে ভরেছে জলাশয়। পাট ডোবানোর কাজ চলছে বালুরঘাটে। ছবি: অমিত মোহান্ত।
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতিতে অন্য আরও দু’টি মামলায় দুই ঠিকাদার সংস্থার ৩ জন কর্ণধারকে গ্রেফতারের আবেদন জানানো হল আদালতে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন একটি ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার শঙ্কর পাল এবং নিউ ইন্ডিয়ার কর্ণধার অজয় মৈত্র ও তাপস বসু। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে আবেদন জানান সরকারি আইনজীবী সুদীপ রায় বাসুনিয়া। তবে এই আবেদনের বিরোধিতা করেন অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবীরা। অন্য দিকে আগে যে সমস্ত মামলায় ইউরেকা ট্রেডার্স ব্যুরোর কর্ণধার অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর ছেলে দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে সে ক্ষেত্রে তাদের জামিনের আবেদন খারিজ করেছে আদালত। অজয়বাবু এবং তাপসবাবুর জামিনের আবেদনও এ দিন খারিজ করেছে আদালত।
মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে আর্থিক দুর্নীতিতে শঙ্করবাবুকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বাগডোগরায় এবং মালবাজারে বৈদ্যুতিক চুল্লির বসানোর কাজে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে এ বার তাকে গ্রেফতারের আবেদন জানানো হয়েছে। অজয় মৈত্র এবং তাপস বসুকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানের কাজে দুর্নীতির অভিযোগে। ওই মামলায় তাদের জামিনের জন্য আবেদন করা হলে এ দিন তা খারিজ করে দেয় আদালত। পাশাপাশি মালবাজারে বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরির ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে অজয় মৈত্র এবং তাপস বসুকে গ্রেফতারের আবেদন করা হয়েছে। ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা কাণ্ডে ধৃত সুব্রত দত্তকে এ দিন আদালতে আনা হয়েছিল। তবে এ ক্ষেত্রে মূল মামলা জেলা আদালতে চলে যাওয়ায় এ দিন ওই মামলার শুনানি হয়নি।
শঙ্করবাবুর আইনজীবী অখিল বিশ্বাসের দাবি, বাগডোগরায় বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরির কাজে শঙ্করবাবু জড়িত নন। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ধৃত বাস্তুকার মৃগাঙ্কমৌলি সরকারকে জমি কেনার ব্যাপারে তিনি সাহায্য করেছিল বলে শঙ্করবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ। ওই কাজ সম্পূর্ণ না হলেও, এমনকী যে যন্ত্রাংশ আনা হয়েছে বলে খাতায়কলমে দেখানো হচ্ছে বাস্তবে তা কেনা না হলেও বরাত পাওয়া সংস্থা ইউরেকা ট্রেডার্স ব্যুরোকে কয়েক কোটি টাকা মিটিয়ে দেয় এসজেডিএ। ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার এবং এসজেডিএ বাস্তুকার এবং আধিকারিকদের একাংশের যোগসাজশে তা হয় বলে অভিযোগ। এর পর গত ৮ ডিসেম্বর ইউরেকা ট্রেডার্স ব্যুরোর থেকে শঙ্কর পালের লেকটাউনের একটি ব্যাঙ্কের শাখায় এক কোটি টাকা জমা করা হয়। তা ছাড়া শঙ্করবাবুর বাড়িতে বসেই মৃগাঙ্কবাবুর জমি কেনার জন্য আনন্দ গোয়েল নামে এক ব্যক্তিকে ১ কোটি ৯১ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে নিকাশি তৈরি, বাগডোগরা, মালবাজার এবং ময়নাগুড়ি শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরি নিয়ে পুলিশে দুর্নীতির অভিযোগ জানায় এসজেডিএ কর্তৃপক্ষ। পরে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার মান ও বরাত পাওয়া প্রক্রিয়া নিয়ে আলাদা অভিযোগ হয়েছে। ওই সমস্ত মামলায় ইতিমধ্যে এসজেডিএ বাস্তুকার মৃগাঙ্কমৌলি সরকার, সপ্তর্ষি পাল, প্রবীণ কুমারকে গ্রেফতার করা হয়। ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার এবং কর্মী মিলিয়ে আরও ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ এসজেডিএ’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, এসজেডিএ বোর্ডের ৩ জন সদস্য মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকার, প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা, জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের সভাপতি চন্দন ভৌমিককে জেরা করে। দুই দফায় জেরা করা হয় এসজেডিএ’র প্রাক্তন সিইও তথা বর্তমানে মালদহের জেলাশাসক গোদালা কিরণ কুমারকে। তাঁকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ কমিশনারের তরফে ডিজি’র কাছেও অনুমতি চাওয়া হয়েছে। |
|
|
|
|
|