ছাত্র জীবনে চরম অর্থকষ্টকে পাথেয় করে বেড়ে ওঠা তাঁর। মায়ের উৎসাহকে মূলধন করে কষ্টে পেরিয়েছেন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রতিটি ধাপ। শিক্ষান্তে পেশা হিসেবে বেছে নেন শিক্ষকতা। মানুষ গড়ার তাগিদে। বছর সাতেক আগে স্কুল থেকে
|
ধীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস |
প্রধান শিক্ষক হিসেবে অবসর নেওয়ার পরও ভুলে যাননি দুঃস্থ পড়ুয়াদের দৈনন্দিন আর্থিক প্রতিবন্ধকতার কথা। তাই বৃহস্পতিবার শিক্ষক দিবসে কৃষ্ণনগরের পাকুড়গাছি বিসিএসজি বিদ্যামন্দিরের
অবসরপ্রাপ্ত মাস্টারমশাই ধীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে এক লক্ষ টাকা তুলে দিলেন। তাঁর ইচ্ছা এই টাকা স্কুলের দুঃস্থ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের এগিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যয় হোক। ধীরেন্দ্রনাথবাবুর ইচ্ছা মেনে স্কুল কর্তৃপক্ষ দানের টাকা থেকে প্রাপ্ত বাৎসরিক সুদের অর্থ ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির একজন করে অভাবী-মেধাবী পড়ুয়ার হাতে তুলে দেবেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোজ বিশ্বাস বলেন, “পিছিয়ে পড়া এলাকায় আমাদের স্কুল। প্রান্তিক ঘরের ছেলেমেয়েরা এখানে পড়াশুনা করে। ধীরেন্দ্রনাথবাবুর দানের টাকা দুঃস্থ-মেধাবীদের পড়াশুনার খরচ জোগাতে সহায়ক হবে।”
আদতে চাকদহের তাতলা গ্রামের বাসিন্দা ধীরেন্দ্রনাথবাবু অভাবের তাড়নায় কৃষ্ণনগরে মামার বাড়িতে চলে আসেন। গৃহশিক্ষকতা করে ছাত্র জীবনে লেখাপড়ার খরচ চালিয়েছেন তিনি। নবদ্বীপের বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পর ১৯৭১ সালে শিবপুর জনকল্যাণ সংঘ স্কুলে সহ শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। বছর পনেরো সেখানে চাকরি করার পর পাকুড়গাছি হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। জীবনের চড়াই-উতরাই উজিয়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরও মায়ের শেখানো শিক্ষা ভুলে যাননি বীরেন্দ্রনাথবাবু। কৃষ্ণনগরের চুনুরিপাড়ার বাড়িতে বসে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে তিনি বললেন, “বরাবর মা বলতেন, অভাবী পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াতে। তাই তাঁর কথা রাখতেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।” |