বই থেকে ব্যাগ। পেন থেকে ডায়েরি। ঘড়ি থেকে লেদার পার্স। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তালিকাটা ক্রমশ দীর্ঘতর হয়েছে। এইসব উপহার সামগ্রী কেনার জন্য পোড়ামাতলা বাজার রোডে ভিড় সামাল দিতে শেষমেশ আসরে নামতে হয় পুলিশকে! শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দিনভর নবদ্বীপ মেতে ছিল উপহার কেনাকাটায়। রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিনে ব্যবসায়ীদের প্রতি লক্ষ্মীদেবী যে এত সদয় হতে পারে তা ভাবতেও পারেননি তাঁরা।
বাজারে ভিড়টা দানা বাঁধতে শুরু করেছিল বুধবার থেকেই। বৃহস্পতিবার সেটা চরম আকার নেয়। শিক্ষক দিবসের দিন গৃহশিক্ষকদের উপহার দেওয়ার জন্য ভিড়ের এই বহর দেখে অবাক ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই। বিকিকিনির শেষে ব্যবসায়ীরা হাসি মুখে জানাচ্ছেন, নবদ্বীপে উপহার কেনার দিন আরও একটা বাড়ল।
স্থানীয় বই বিক্রেতা পরিমল পাল বলেন, “ এরকম মফস্সলে চেতন ভগত কিংবা আর কে নারায়ণনের মতো লেখকের বই বিকিয়েছে অবাক করার মতো।” |
ব্যবসায়ী অশোক চক্রবর্তীর কথায়, “দশ টাকা থেকে আড়াইশো টাকার দামের পেন কিংবা ত্রিশ টাকা থেকে দু’শো টাকা দামের মধ্যে ডায়েরি বিক্রি হয়েছে। নববর্ষ, ভ্যালেন্টাইন ডে, রাখীবন্ধন- এই তিনটি দিনেই সাধারণত উপহার বিক্রি হয়। কিন্তু শিক্ষক দিবসেও যে এমন বিক্রি হবে ভাবিনি।”
উপহার সামগ্রী বিক্রেতা দেবব্রত সাহা বলছেন, “ এ তো দেখছি উপহার-বিস্ফোরণ! দল বেঁধে ছেলে মেয়েরা এসে গড়ে ৭০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকার উপহার কিনেছে। আগের শিক্ষক দিবসগুলোর তুলনায় এবার দোকানে অনেক বেশি বিক্রি হয়েছে।”
যাঁদের জন্য এত উপহার কেনার ধুম সেই শিক্ষকরা ছাত্রদের খাইয়ে দিয়েছেন। মেনুতে ছিল এগরোল, আইসক্রিম, চাউমিন, কাজু বরফি। সঙ্গে মিষ্টিমুখ তো ছিলই। পূর্বস্থলীর প্রত্যন্ত গ্রাম বগপুর। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার কাকভোরে নবদ্বীপে এসে সকলের আগে স্যারকে ফুলের তোড়া উপহার দিয়েছে নবম শ্রেণির দুই পড়ুয়া প্রদীপ দেবনাথ ও সুমন বিশ্বাস। জয়ের আনন্দ তাদের চোখে মুখে। তবে দিনের শেষে ব্যবসায়ীদের একটা আক্ষেপ, “আগে জানলে আরও বেশি উপহার সামগ্রী মজুত রাখতাম! পরের বার থেকে এই ভুল আর করছি না।” |