থামার লক্ষণ নেই, বেড়েই চলেছে পদ্মার জল। ফলে মুর্শিদাবাদের পদ্মার অববাহিকায় বৃহস্পতিবার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সুতি, রঘুনাথগঞ্জ, লালগোলা, ভগবানগোলা, রানিতলা, ইসলামপুর, রানিনগর ও জলঙ্গি-সহ জেলার মোট ১০টি থানার নতুন নতুন এলাকা এ দিন প্লাবিত হয়েছে। বন্যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নদী ভাঙনও।
সেচ দফতরের বহরমপুর বিভাগের এক্সজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার স্বপন সাহা বলেন, “বেলডাঙা ও রেজিনগরে ভাগীরথীর এবং হরিহরপাড়া ও ইসলামপুরে ভৈরবে ভাঙন শুরু হয়েছে। ফলে ১৫-২০টি বাড়ি স্থানান্তরিত করা হয়েছে। অনেক কৃষি জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। ইসলামপুরের চক দিয়াড়পুর ও হড়হড়িয়া বাগানপাড়ায় এবং হরিহরপাড়ার মোহনেরপাড়ায় ভৈরব নদের পাড় ভাঙছে। ভাঙন রোধে প্রকল্প তৈরি করে তা অনুমোদনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।”
সেচ দফতর সূত্রে খবর, বুধবারের থেকে বৃহস্পতিবার পদ্মার জল বেড়েছে ২৬ সেন্টিমিটার। ফলে বাগমারি খাল দিয়ে পদ্মার জল ঢুকে প্লাবিত হয়েছে সুতির অমরপুর, পারাইপুর, শোভারঘাট, সরলা প্রভৃতি গ্রামের প্রায় ৭ হাজার একর জমির ফসল। গ্রামে অবশ্য জল ঢোকেনি। সুতি-১ ব্লকের বিডিও দীপঙ্কর রায় এ দিন বন্যাপ্লাবিত এলাকা ঘুরে এসে বলেন, “গ্রামের দু’পাশের জমি জলমগ্ন হওয়ায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কোনও কোনও এলাকায় সপ্তাহ খানেক ধরে ফসল জলমগ্ন থাকায় থাকায় সেখান থেকে এই মরশুমের ফসল মিলবে না।” |
পদ্মার জল বাড়ায় নির্মলচর-সহ রানিতলার আখরিগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের পুরোটাই ও লাগোয়া খড়িবোনা গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে জানান ভগবানগোলা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি রিয়াজুদ্দিন শেখ। তিনি বলেন, “সপ্তাহ দুয়েক থেকে নির্মলচর-সহ গোটা আখরিগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতে ও লাগোয়া খড়িবোনা গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু এলাকায় জলের কবলে। ফলে অনেক জমির ধান, পাট, ভুট্টা ও পটল-সহ যাবতীয় সব্জী চাষ পচে গিয়েছে।”
এ দিন ভগবানগোলার বিধায়ক চাঁদ মহম্মদ, সহ সভাপতি রিয়াজুদ্দিন শেখ এবং বিডিও কৌশিক মুখোপাধ্যাকে সঙ্গে নিয়ে বানভাসি নির্মলচরে যান লালবাগের ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক তারক মল্লিক। তিনি বলেন, “ভগবানগোলা-১ ব্লকের বন্যার্তদের ৬০০ তারপলিন এবং ৩০ কুইন্টাল খাদ্যদ্রব্য দেওয়া হয়েছে। আরও এক হাজার তারপলিন এবং ৭০ কুইন্টাল খাদ্যদ্রব্য বরাদ্দ করা হয়েছে।” ডোমকল মহকুমার রানিনগর-২ ব্লকের উত্তরচর মাঝারদিয়াড় ও দক্ষিণচর মাঝারদিয়াড়, মহাদেবপুর, শিবপুর, বাথানপাড়া এবং জলঙ্গি ব্লকের উদয়নগর খণ্ড ও চর চরাশপুর গ্রাম গুলি নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। ডোমকলের মহকুমাশাসক পুষ্পেন্দু মিত্র বলেন, “৩টি ব্লকের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রতিটি ব্লকের জন্য ৪০০ তারপলিন, ৬ কুইন্টাল চাল, ওষুধ ও বস্ত্র দেওয়া হয়েছে। ৫ হাজার জলও বিলি করা হয়েছে।” |