|
|
|
|
রক্তদান থেকে বৃক্ষরোপণে রঙিন অনুষ্ঠান |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
শিক্ষক দিবস পালন। তবে একটু অন্য ভাবে। বৃহস্পতিবার জেলার নানা প্রান্তে এমনই অন্য কর্মসূচি দেখা গেল। কোথাও স্কুলে রক্তদান শিবিরে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে রক্ত দিলেন শিক্ষকেরা, কোথাও হল বৃক্ষরোপণ। শিক্ষকদের ভূমিকায় ছাত্রছাত্রীদের দেখা গেল বেশ কিছু স্কুলে। ছিল আলোচনাসভাও।
শিক্ষক দিবস উপলক্ষে রক্তদান শিবির হয় শালবনির মৌপাল দেশপ্রাণ বিদ্যাপীঠে। রক্তদাতা ৪০ জনের মধ্যে ৩২ জন পড়ুয়া এবং ৮ জন শিক্ষক। স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এই আয়োজন। শিবিরের উদ্বোধন করেন সদর দক্ষিণ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অরুণাভ প্রহরাজ। |
|
শিক্ষক দিবসে মেদিনীপুর শহরের বিভিন্ন স্কুলের
প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকাদের সংবর্ধনা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসূনকুমার পড়িয়া বলেন, “এক বোতল রক্তের জন্য অনেকে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ান। রোগীরা চরম সমস্যায় পড়েন। আমাদের সকলেরই একটা সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। শিক্ষক দিবসে আমরা তাই রক্তদান শিবির করার সিদ্ধান্ত নিই।” বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হয় কেশিয়াড়ির সুন্দরাড় হাইস্কুলে। সঙ্গে আলোচনাসভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আলোচনাসভায় সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণণের জীবন ও দর্শন বিষয়ে আলোকপাত করেন শিক্ষকরা। প্রধান শিক্ষক পরমেশ্বর প্রামাণিকের কথায়, “আমাদের স্কুলে দিনটি একটু অন্য ভাবেই উদ্যাপন করা হয়েছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সবুজকে বাঁচিয়ে রাখা দরকার। সবুজ বাড়লে আমাদের চারপাশের পরিবেশ আরও সুন্দর হবে। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ারই চেষ্টা করেছি।” বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমি, মেদিনীপুর (সদর) চুয়াডাঙা হাইস্কুলে এ দিন ছাত্রছাত্রীরাই ছিল শিক্ষক-শিক্ষিকার ভূমিকায়। চুয়াডাঙা হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র হিরাজ সাহু, একাদশ শ্রেণির সঙ্গীতা ঘোষ, ষষ্ঠ শ্রেণির সাজিদা খাতুনরা সহপাঠীদের পড়িয়েছে। স্কুল শুরু এবং শেষের ঘন্টাও বাজিয়েছে ছাত্ররা। বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন শিক্ষকরা। ছিল মিষ্টিমুখের আয়োজন। চুয়াডাঙা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নিখিলরঞ্জন মান্না এবং গঙ্গাধর অ্যাকাদেমির প্রধান শিক্ষক ননীগোপাল শীট দু’জনেই বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের এমন উদ্যোগে আমরা সকলে খুশি।”
শিক্ষক দিবসে মাল্টিজিমের উদ্বোধন হয়েছে শালবনির ভাদুতলা বিবেকানন্দ হাইস্কুলে। যুব কল্যাণ দফতরের অর্থ সাহায্যে নির্মিত এই মাল্টিজিমের নামকরণ করা হয়েছে ঋষি অরবিন্দের নামে। প্রধান শিক্ষক অমিতেশ চৌধুরী বলছেন, “এর ফলে ছাত্রছাত্রীরাই উপকৃত হবে।” হুমগড় চাঁদাবিলা হাইস্কুলে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে প্রাক্তন শিক্ষকদের সংবর্ধিত করা হয়। মেদিনীপুর সদরের কেশবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ দিন নবনির্বাচিত প্রধান, উপপ্রধান, পঞ্চায়েত সদস্যকে সংবর্ধিত করা হয়। অনুষ্ঠানের নামকরণ করা হয়েছিল ‘নবোদয় পরিচয়’। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাধনকুমার দে বলেন, “নবনির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যদের এখন প্রচুর কাজ। তাঁদের উৎসাহিত করতেই আমাদের এই কর্মসূচি।” মেদিনীপুর টাউন স্কুলে (বালিকা) এ দিন নতুন শ্রেণিকক্ষের উদ্বোধন হয়। উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, বিধায়ক মৃগেন মাইতি।
নানা কর্মসূচি হয়েছে বিভিন্ন কলেজ ও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়েও। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি, নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি-সহ নানা সংগঠন দিনটি পালন করে। শিক্ষক দিবসে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল মেদিনীপুর শহর তৃণমূল কংগ্রেসও। শহরের ফিল্ম সোসাইটি হলে শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের সংবর্ধিত করা হয়। উপস্থিত ছিলেন মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি, দলের শহর সভাপতি সুকুমার পড়্যা প্রমুখ। শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বুধবার মেদিনীপুরে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয় শিক্ষক কল্যাণ সংস্থা। |
|
|
|
|
|