ভিন্ রাজ্যে বিক্রি করে দিতে পারেন নিজের দিদিমা। এই আশঙ্কায় মামার বাড়ি থেকে পালিয়ে আসা এক তরুণীকে ট্রেনের মধ্যে অসহায় ভাবে কাঁদতে দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন আর এক তরুণী। যিনি পেশায় সরকারি হাসপাতালের নার্স। পালিয়ে আসা ওই তরুণীকে নিয়ে দিনভর হয়রানি হলেও তাঁকে একা ছেড়ে দেননি তিনি। প্রথমে পুলিশি সাহায্য না পেলেও পরে ওই নার্সের চাপেই পুলিশ ওই তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার হাওড়ার রামরাজাতলার ঘটনা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতের ডিউটি সেরে এ দিন ডাউন মেদিনীপুর লোকালে রামরাজাতলার বাড়িতে ফিরছিলেন উলুবেড়িয়া হাসপাতালের নার্স স্বাগতা মাইতি। মহিলা কামরায় বছর আঠেরোর এক তরুণীকে কাঁদতে দেখে এগিয়ে যান বছর পঁচিশের স্বাগতা। কথা বলে জানতে পারেন ওই তরুণীর মামার বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের সবং থানার কোকতিপুর গ্রামে। বাবা-মা তাঁকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় মামার বাড়িতেই থাকতেন তিনি। কিন্তু তাঁর দিদিমা তাঁকে উত্তরপ্রদেশে বিক্রি করার জন্য চেষ্টা করছেন জানতে পেরে পাশের বাড়ির এক মহিলার দেওয়া ১১০ টাকা নিয়ে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছেন বলে স্বাগতাকে জানান ওই তরুণী।
স্বাগতা বলেন, “ওকে দেখে খুব মায়া হয়েছিল। কেউ সাহায্য করছেন না দেখে আমিই এগিয়ে যাই। তা না হলে ওর অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারত আজ।” স্বাগতা জানান, রামরাজাতলা স্টেশনে নেমে জগাছা থানায় যান তাঁরা। তাঁর অভিযোগ, প্রথমে ব্যাপারটি রেল পুলিশের আওতায় বলে আমল দেয়নি জগাছা থানার পুলিশ। ব্যাপারটি এলাকায় রটে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই অবশ্য পুলিশ এসে তাঁদের রামরাজাতলা স্টেশন থেকে জগাছা থানায় নিয়ে যায়।
হাওড়ার ডিসি (সদর) নিশাত পারভেজ বলেন, “ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁকে আদৌ বিক্রি করার চেষ্টা করা হয়েছিল কি না, আমরা খতিয়ে দেখছি। আপাতত ওই তরুণীকে একটি হোমে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” |