অবসরের পরে পাঁচ বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কাছে বহু আবেদনেও গ্র্যাচুইটি মেলেনি বলে অভিযোগ ভদ্রেশ্বরের ভিক্টোরিয়া জুটমিলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী করুণাময় দাসের। অভাবের সংসারে সঙ্কট বাড়িয়েছে স্ত্রীর জটিল অসুখ। তাঁর চিকিৎসার জন্য ওই টাকার দাবি নিয়ে অগস্টের গোড়ায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। অগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে হাইকোর্ট করুণাময়বাবুকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই সময়সীমা না পেরোলেও এখনও টাকা ফেরত পাননি ওই মিল-শ্রমিক। এ দিকে, তাঁর স্ত্রীর চিকিৎসা প্রায় বন্ধ হওয়ার জোগাড়।
হাইকোর্ট টাকা ফেরতের নির্দেশ কার্যকর করার দায়িত্ব দিয়েছে হুগলির জেলাশাসক মনমীত নন্দাকে। তিনি ইতিমধ্যেই ওই মিল-শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলেছেন। জেলাশাসক বলেন, “দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” জুটমিলের পদস্থ কর্তা প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, “ওই শ্রমিক আবেদন করলেই তাঁর প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়া হবে। তিনি সম্ভবত আমাদের কাছে টাকার জন্য আসেননি।”
কিন্তু করুণাময়বাবুর অভিযোগ, “অবসরের পরে একাধিকবার মিল কর্তৃপক্ষের কাছে গ্র্যাচুইটির টাকার জন্য আবেদন করেছি। সুদ সমেত ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকারও বেশি পাওয়ার কথা। চন্দননগর আইনি সহায়তা কেন্দ্রের পরামর্শে আদালতে চাই। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও টাকা পেলাম না!”
ওই জুটমিলের ‘উইভিং’ বিভাগে কাজ করতেন করুণাময়বাবু। ২০০৮ সালে অবসর নেন। একমাত্র ছেলে স্নাতক হলেও এখনও কোনও কাজ পাননি। করুণাময়বাবু অবসর নেওয়ার পরেই তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণাদেবী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
চন্দননগরের আইনি সহায়তা কেন্দ্রের কর্তা তথা সমাজসেবী বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, “বহু ক্ষেত্রেই মিল-মালিকদের থেকে গরিব শ্রমিকেরা তাঁদের প্রাপ্য পান না। এ ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত করুণাময়বাবু হাইকোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে টাকা না পেলে আমরা ফের আদালতের শরণাপন্ন হব।” |