শিক্ষার আঙিনায় অরাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের আবেদন রেখে আজ শুক্রবার সিঙ্গুরে নতুন কলেজের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। উদ্বোধন করবেন উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
কলেজের অধ্যক্ষ জয়ন্ত চৌধুরী বলেন,“আমরা চাইছি বেথুন, রামকৃষ্ণ মিশন কলেজগুলির আদলে এখানে ছাত্রদের সংগঠন থাক, কিন্তু তা অরাজৈনিক হোক। ইতিমধ্যেই আমি ছাত্র সংগঠনগুলির কাছে আবেদন রেখেছি। আমি আনন্দিত সংগঠনের প্রতিনিধিরা আমার আবেদনে সাড়া দিয়ে তাঁরা তাঁদের নিজস্ব পতাকা সরিয়ে নিয়েছেন।” কলেজ কর্তৃপক্ষ চাইলেও ছাত্র সংগঠনগুলি কার্যক্ষেত্রে ঠিক কতটা সাড়া দেবে সেই প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। এসএফআইয়ের জেলা নেতা রাজদীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন,“কর্তৃপক্ষের তরফে দলীয় ঝান্ডা সরিয়ে নিতে অনুরোধ করা হয়েছিল। অন্য সংগঠন সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে সরিয়ে নিয়েছে। আমরাও সরিয়ে নিই।”
সিঙ্গুরে একটি কলেজের দাবি দীর্ঘ দিনের। চলতি বছরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধনেখালির মহেশ্বরপুরে একটি সভায় সিঙ্গুরে কলেজের জন্য জমি দেখার নির্দেশ দেন জেলার মন্ত্রী বেচারাম মান্নাকে। সিঙ্গুরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেস লাগোয়া এলাকায় সরকারি জমিতে কলেজ বাড়ি তৈরি হয়েছে। |
তার মধ্যেই সিঙ্গুর স্টেশন-লাগোয়া মহামায়া হাইস্কুলের কয়েকটি ঘর নিয়ে কলেজ চালু হয়ে গিয়েছে। সিঙ্গুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে জয়ন্ত চৌধুরী যোগ দেন। কলেজ সূত্রের খবর, আপাতত পাঁচটি বিষয়ের অনার্স নিয়ে প্রতিটির জন্য ২৫ জন করে ছাত্রছাত্রী ভর্তির অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্র ভর্তির কাজ হয়ে গিয়েছে।
কলেজ কতটা রাজনীতিমুক্ত রাখা যাবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েইছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য আশাবাদী। অধ্যক্ষ বলেন, “আমার স্বপ্ন কলেজে সংগঠন থাকবে, তবে তা অরাজনৈতিক। প্রকৃত শিক্ষার অঙ্গন হয়ে উঠুক আমাদের কলেজ। তবে আমরা কিন্তু রাজনীতির বিরুদ্ধে নই।” তাঁর বক্তব্য, ছাত্রেরা রাজনীতি করুন কলেজ চৌহদ্দির বাইরে। ছাত্র রাজনীতি নিয়ে বরং সেমিনার হোক কলেজে।
ইদানিং রাজ্য জুড়ে কলেজগুলিতে নানা অশান্তি চলছে। এই আবহে অভিভাবকেরা-সহ অনেক ছাত্রছাত্রীরাই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহমত হবেন। কিন্তু শেষ বিচারে রাজ্যের ছাত্রসংগঠনগুলির প্রতিনিধিরা কলেজ কর্তৃপক্ষের আবেদন ঠিক কী ভাবে নেন? এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের পদক্ষেপই বা কী হয়? তা অবশ্য সময়ই বলবে। |