|
|
|
|
সস্ত্রীক খুন হলেন ডিভিসি-র ইঞ্জিনিয়ার, ধৃত জোড়া দম্পতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাঁচি ও রঘুনাথপুর |
ঘরের ভিতরে রক্তের দাগ লেগে থাকা জামা দেখে পুলিশের প্রথম সন্দেহ হয়েছিল আবাসনের কেয়ারটেকারকে। আর সেই সন্দেহ থেকেই শেষ পর্যন্ত পুলিশ কিনারা করল ঝাড়খণ্ডের বোকারোয় ডিভিসি-র পদস্থ আধিকারিক ও তাঁর স্ত্রীকে খুনের ঘটনার। নিহত আধিকারিকের মোবাইল ফোনের টাওয়ার অনুসরণ করে পুলিশ পুরুলিয়া থেকে ধরল ওই কেয়ারটেকার ও তার স্ত্রী এবং তাদের পরিচিত এক দম্পতিকে। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে ধৃতেরা অপরাধ কবুল করেছে।
বোকারো শহরে ডিভিসি কলোনির ‘এমসি ব্লক’-এর একটি ফ্ল্যাটে স্ত্রী বন্দনা (৩৫) ও দুই ছেলেকে নিয়ে থাকতেন চন্দ্রপুরা তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অজয় সিংহ (৪৫)। তাঁরা বিহারের গয়ার বাসিন্দা। বুধবার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও অজয় অফিসে না যাওয়ায় সহকর্মীরা তাঁকে ফোন করেন। অজয় ফোন তোলেননি। অজয়ের বাড়িতেই চলে যান সহকর্মীরা। ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। ডাকাডাকি করেও সাড়া না মেলায় প্রতিবেশীরা দরজা ভাঙেন। দেখা যায়, শোওয়ার ঘরে অজয় আর রান্নাঘরে বন্দনার রক্তাক্ত দেহ পড়ে। গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন। আলমারি ভাঙা। গয়নার বাস্ক থেকে সোনা-হিরের গয়না উধাও।
প্রতিবেশীরা জানান, তাঁরা অজয়-বন্দনাকে তাঁদের দুই ছেলেকে প্রতিদিনের মতো বুধবার সকালেও স্কুলে পাঠাতে দেখেছেন। তার পরে কোনও এক সময়ে ওই দম্পতিকে খুন করা হয় বলে পুলিশের ধারণা। পুলিশ শোওয়ার ঘর থেকে একটি রক্তমাখা লোহার রড উদ্ধার করে। ওই ব্লকের কেয়ারটেকার বাবলু সিংহের ঘরে গিয়ে পুলিশ দেখে পাখি হাওয়া।
নেই নিহতদের ফ্ল্যাটের পরিচারিকা, বাবলুর স্ত্রী সীমাও। ঘরে পড়ে রক্ত লাগা জামা।
বৃহস্পতিবার বোকারোর পুলিশ সুপার কুলদীপ দ্বিবেদী বলেন, “বন্দনা সব সময় দামি গয়না পড়ে থাকতেন। আলমারিও খোলা থাকত। এ সব দেখেই বাবলু ও সীমার মনে লোভ হয়। তারা ফ্ল্যাটের মালিক আর মালকিনকে খুনের ছক কষে। এই কাজে সাহায্যের জন্য ডেকে নেওয়া হয় রাহুল সিংহ আর তার স্ত্রী ভারতীকে।” তাঁর দাবি, জেরার মুখে ধৃতেরা জানিয়েছে, প্রথমে মাথায় রডের বাড়ি মেরে আর পরে গলা কেটে অজয়-বন্দনাকে খুন করেছিল বাবলু ও রাহুল। সীমা আর ভারতী গয়না-টাকা সরিয়েছিল। ধৃতদের থেকে তিনটি এটিএম কার্ড, নিহতদের মোবাইল ফোন, বেশ কিছু সোনা ও হিরের গয়না ও হাজার দু’য়েক নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
চুরি করা ওই মোবাইলই ধরিয়ে দেয় ওই চার জনকে। মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে পুলিশ জানতে পারে, বাবলু আর সীমা লুকিয়ে রঘুনাথপুর এলাকায়। চন্দ্রপুরা ও পিঁড়রজোড়া থানার পুলিশ যৌথ তদন্তে আসে পুরুলিয়া শহরে। প রাহুলের বাড়ি পুরুলিয়ারই আড়শা থানার বড়াম গ্রামে।
|
|
|
|
|
|