পার্ক একটা। সেখানে গণেশপুজো করতে চায় দু’টি সংগঠন। সেই নিয়েই লেগেছিল বিবাদ। তা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। কিন্তু বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট পুজোর পুর-অনুমোদন খারিজ করে দেওয়ায় ওই পার্কে পুজো করার অনুমতি আর থাকল না।
গণেশপুজো নিয়ে লড়াইয়ের এক দিকে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর ও ৭ নম্বর বরোর চেয়ারপার্সন সুস্মিতা ভট্টাচার্য। অন্য দিকে তৃণমূল নেতা অশোক শর্মা, যিনি দিন কয়েক আগেও বরো চেয়ারপার্সনের আপ্ত-সহায়ক ছিলেন। লড়াইয়ে এক ধাপ এগিয়ে ছিলেন কাউন্সিলর। পার্কে পুজোর পুর-অনুমোদনও বার করেন। সোমবার থেকে পুজো। প্যাণ্ডেলও সম্পূর্ণ। এর মধ্যেই পুর-অনুমোদন খারিজ করল আদালত।
কাউন্সিলরের সংগঠন ইতিমধ্যেই নিমন্ত্রণপত্র বিলি করেছে। অশোকবাবুর দাবি, ৮০ হাজার টাকা দিয়ে মূর্তির বরাত দিয়েছেন। হাইকোর্টের রায়ে কী হয়, তা দেখার জন্য কৌতূহলী স্থানীয় বাসিন্দারা।
পুর সূত্রের খবর, পার্ক স্ট্রিটের অ্যালেন পার্কে গত বছর গণেশপুজো করে অশোকবাবুর ঘনিষ্ঠ চৌরঙ্গি ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। ওই পুজোয় সুস্মিতাদেবীও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, এ বছর দু’পক্ষই ওই পার্কে আলাদা করে পুজো করার জন্য পুরসভায় আবেদন জানায়। পুরসভার এক অফিসার জানান, পুরসভার অনুমতি পায়
বিএনবি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন, সুস্মিতাদেবী যার আহ্বায়ক। |
অশোকবাবুর বক্তব্য, “এক মাস আগে চৌরঙ্গি ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সম্পাদক হিসেবে ওখানে পুজোর অনুমতি চেয়ে আবেদন জানাই। গত বার আমাদের সংগঠনের নামেই ওই পুজোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এরই মধ্যে খবর পাই, ওদেরকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, এর পরই পুর-অনুমোদনের পদ্ধতিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা করা হয়।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের আদালতে মামলাটি উঠলে বিচারপতি পুর-প্রশাসনের দেওয়া অনুমতি খারিজ করেন। বিচারপতি তাঁর রায়ে জানিয়েছেন, কেন একটি সমিতিকে অনুমতি না দিয়ে অপর দলকে দেওয়া হল, তার কোনও কারণ দর্শায়নি পুর-প্রশাসন। তাই সেই অনুমোদন খারিজ করা হয়েছে।
আদালতের রায়ের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এত সব হয়েছে জানি না তো! এই মাত্র সুস্মিতাদেবী আমাকে তাঁদের পুজোয় নিমন্ত্রণ করে গেলেন। পুজোর জন্য আবেদন জমা পড়েছিল। পুর-নিয়ম মেনেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে আদালত কোনও রায় দিয়ে থাকলে তা তো মানতেই হবে।” স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, আদালত পুর-অনুমোদন খারিজ করে দেওয়ার পরেও ওই পার্কে কী ভাবে পুজোর প্রস্তুতি চলছে? এ বিষয়ে সুস্মিতাদেবীকে ফোন করা হলে তিনি “এখন ব্যস্ত আছি” বলেই লাইনটি কেটে দেন। |