উৎসবের রাত বিদ্যুৎহীন, দুর্ভোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট |
কৌশিকী অমাবস্যার রাতে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অন্ধকারে ডুবে রইল তারাপীঠ। বুধবার রাতে যার জেরে দুর্ভোগে পড়লেন তারাপীঠে পুজো দিতে আসা লক্ষাধিক পুণ্যার্থী। যত্রতত্র হুকিংয়ের চাপেই ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা হয়েছে বলে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির দাবি। যদিও বিদ্যুৎ বিভাগের গাফিলতিকেই দায়ী করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ৯টার দিকে লোডশেডিং হয়ে এলাকায় অন্ধকার নেমে আসে। জেনারেটরের বিকল্প ব্যবস্থা থাকায় কোনও কোনও হটেল, লজে তেমন সমস্যা হয়নি। তবে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই সমস্যায় পড়েন। জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকায় আলো নেভেনি তারাপীঠ মন্দিরেও। তবে মন্দির যাওয়ার দু’ প্রান্তের রাস্তা, শ্মশান এলাকায় কোনও আলো ছিল না। ভিড়ে ঠাসা ওই সব এলাকায় ব্যাপক সমস্যায় পড়েন পুণ্যার্থী, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা। ওই সময় প্রায় অন্ধকার তারাপীঠে দ্বারকা সেতুর উপর যানজট সামালাতে পুলিশ-প্রশাসনকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। শেষমেশ রাত ১১টার পরে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়। তারাপীঠ তারামাতা মন্দির সেবা সমিতির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে তারাপীঠ মন্দিরে আসা পুণ্যার্থীরা চরম নাকালের মধ্যে পড়েন। তাঁদের সুরক্ষার জন্য মন্দির কমিটি যথেষ্ট তৎপর থাকায় কোনও অঘটন ঘটেনি।” |
শুক্রবার তারাপীঠে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র |
এ দিকে কৌশিকী অমাবস্যা ঘিরে তারাপীঠে যে বাড়তি বিদ্যুৎ লাগবে, বিদ্যুৎ দফতর তা নিয়ে ওয়াকিবহল ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা গুরুশরণ চট্টোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, ওই কারণে গত দশদিন ধরে এলাকায় যেখানে যেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় ত্রুটি ধরে পড়েছে, তা দফতর মেরামত করেছে। তবুও বুধবার রাতের বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য বিদ্যুৎ দফতরের একাংশের কর্মীর গাফিলতিকেই গুরুশরণবাবু দাবি করেছেন। তাঁরই সুরে আগামী দিনে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য বিদ্যুৎ কর্মীদের আরও বেশি সক্রিয় হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তারাময়বাবুও।
যদিও গাফিলতির অভিযোগ মানেননি পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির রামপুরহাট মহকুমার বিভাগীয় আধিকারিক নারায়ণচন্দ্র রায়। তিনি জানিয়েছেন, তারাপীঠে রামপুরহাট থানার মনসুবা মোড় লাগোয়া সাব স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এমনি দিনে ওই এলাকায় যে পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়, উৎসব উপলক্ষে তার থেকেও বেশি সরবরাহ করা হয়েছে। তবু বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে তারাপীঠে বিদ্যুৎ সরবরাহের তুলনায় বিদ্যুতের চাহিদা প্রচুর ছিল বলে তাঁর দাবি। ওই আধিকারিকের অভিযোগ, “এ রকম অবস্থায় দাঁড়িয়েও ওই এলাকায় যে যেমন পেরেছে, চাহিদা পূরণের জন্য অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছে। ফলে সরবরাহ ব্যবস্থায় চাপ পড়েছে। ওই চাপের কারণেই রামপুরহাট থানার বড়শাল গ্রামে বিদ্যুৎবাহী তার ছিঁড়ে যায়। ফলে লোডশেডিং হয়।” পরে ওই সংযোগ জোড়ার পাশাপাশি ময়ূরেশ্বর থানার বীরচন্দ্রপুর ফিডার থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো হয় বলে তিনি জানিয়েছেন। |