পড়ে থাকা জমিতে গড়া হবে ‘এডুকেশনাল হাব’ |
অরুণ মুখোপাধ্যায় • সিউড়ি |
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিভিন্ন জনসভায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিল্পের জন্য ‘জমি-ব্যাঙ্ক’ গড়ে তোলার কথা বলে থাকেন। এ বার শিক্ষার জন্য ‘জমি-ব্যাঙ্ক’ গড়ে তোলার অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে বীরভূম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। সংসদ সভাপতির দাবি, রাজ্যে এমন উদ্যোগ এই প্রথম।
সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ৩২টি সার্কেলে প্রায় ২,৪০০টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। ওই স্কুলগুলির (বিশেষত গ্রামাঞ্চলের স্কুলের) হাতে থাকা বহু জমি বহু বছর ধরে অব্যবহৃত হয়েই পড়ে রয়েছে। ওই জমিগুলিকেই চিহ্নিত করা হয়েছে। সংসদের হিসেব অনুযায়ী যার মোট পরিমাণ প্রায় ৫০০ একর। সংসদ ওই জমিগুলিকে শিক্ষা-ব্যবস্থার সঙ্গে জুড়তে চলেছে। যার জন্য বীরভূমের ১৯টি ব্লকে অন্তত একটি করে এডুকেশনাল হাব গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। সেখানে থাকবে শিক্ষা সংক্রান্ত নানা অনুষঙ্গ। সংসদের বর্তমান সভাপতি রাজা ঘোষের দাবি, “সভাপতি হওয়ার পরে গত দু’ বছর ধরে আমি ওই অব্যবহৃত জমিগুলি চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করি। কয়েকটি স্কুলে তো ৮-১০ বিঘা পর্যন্ত জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ওই বিপুল পরিমাণ জমি আমরা এ বার উপযুক্ত কাজেই লাগাবো।” |
কাজে লাগানো হবে এমনই সব অব্যবহৃত জমিকে। সিউড়ি
২ ব্লকের গোবরা প্রাথমিক স্কুলে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
সংসদের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলি ৩০০ একর মতো জমি ব্যবহার করে। কিন্তু হাতে থাকা বাকি জমিগুলিকে এতদিন কোনও কাজেই লাগানো হয়নি। অথচ ওই ৫০০ একর জমিতে প্রয়োজনের নিরিখে অনেক কিছুই করা যেতে পারে। ইতিমধ্যেই ওই অব্যবহৃত জমিগুলি চিহ্নিত করে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে একটি রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে চূড়ান্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরেই তা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে। রাজাবাবু বলেন, “অব্যবহৃত জমিতে সরকারি বা বেসরকারি অথবা যৌথ উদ্যোগে ‘এডুকেশনাল হাব’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে ল্যাবরেটরি, গ্রন্থাগার, গবেষণাকেন্দ্র প্রভৃতি থাকবে। তবে তা ব্যবহার করার সুযোগ কেবল মাত্র প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারাই নয়, এলাকার হাইস্কুলে পড়া ছাত্রছাত্রীদেরও মিলবে।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সংগঠন। তার জেলা সাধারণ সম্পাদক অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়ের মত, “জমিগুলিতে শিক্ষা বিষয়ক বহু রকমের কাজকর্ম করা যাবে। সংসদ এই পরিকল্পনা করে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ করল।” আপাতত পুরোটাই প্রস্তাব আকারে রয়েছে। তবে রাজ্য সরকারের অনুমতি মিললেই দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংসদ সভাপতি। |