পাঁচ বছরে ওরাং রাজীব গাঁধী জাতীয় উদ্যানে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে ১৭টি। একই সময়ে ওই উদ্যানে মৃত্যু হয়েছে ১০টি বাঘের। যার মধ্যে অন্তত ৫টি বাঘ মরেছে বিষপ্রয়োগে।
উদ্যান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওরাং-এর বাঘদের বিষপ্রয়োগে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানোই এখন তাঁদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কার্যত ছোট পরিসরে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ওরাং-এ সরকারি অতিথিশালার সামনেই বাঘ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। গবাদি পশু শিকার করতে বাঘ হানা দিচ্ছে আশপাশের গ্রামেও। পোষ্যদের বাঁচাতে এ বছরই মাংসে বিষ মিশিয়ে তিনটি বাঘকে গ্রামবাসীরা মেরে ফেলেছে বলে অভিযোগ।
এ বছরের বাঘ সুমারির তথ্য অনুযায়ী, অসমের ক্ষুদ্রতম জাতীয় উদ্যানে বাঘের সংখ্যা বর্তমানে ২৪। ওরাং কর্তৃপক্ষের দাবি, বাঘ-বসতির ঘনত্বের হিসাবে ওরাং-ই এখন দেশে প্রথম স্থানে রয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের তীরে দরং ও শোণিতপুর জেলায় বিস্তৃত ওই জাতীয় উদ্যানের আয়তন ৭৮.৮১ বর্গ কিলোমিটার। ২০০৮ সালে সেখানে স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরার সাহায্যে বাঘ-সুমারি শুরু হয়। ওই বছর ৭টি বাঘের সন্ধান মিলেছিল। ২০১১ সালে বাঘ-বসতির ঘনত্বের হিসাবে ওরাং ছিল দেশের দ্বিতীয় স্থানে।
বন দফতর সূত্রে খবর, প্রতি ১০০ বর্গ কিলোমিটারে বাঘের সংখ্যার উপরই ওই ঘনত্ব নির্ভর করে। ২০১১ সালে দেশের মধ্যে ঘনত্বের নিরিখে প্রথম করবেট জাতীয় উদ্যানে তা ছিল ১৭.৮৩। ওরাং-এ ছিল ১৭.৬৮। বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে ২৫.২৪ হয়েছে। এ বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ক্যামেরায় ধরা পড়া ২৪টি রয়্যাল বেঙ্গলের মধ্যে ৩টি পুরুষ, ১৬টি স্ত্রী ও চারটি শাবক। অন্যটির লিঙ্গ নির্ধারণ সম্ভব হয়নি।
ডিএফও সুশীল দায়লা জানান, স্বল্প পরিসরে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সে গুলি খাদ্যের সন্ধানে জঙ্গল থেকে বের হচ্ছে। সম্প্রতি ‘ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেসন অথরিটি’ (এনটিসিএ) কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা ওই উদ্যানে গিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়ানোর আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন। দায়লা বলেন, “ওই প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ওরাংকে কাজিরাঙা ব্যাঘ্র প্রকল্পের শাখা ক্ষেত্র হিসাবে গণ্য করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা ওরাংকে স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্র্যাঘ্র প্রকল্প ঘোষণা করার অনুরোধ জানিয়েছি।” এনটিসিএ-র তরফে ওই উদ্যানে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই সংস্থাটি জানিয়েছে, কোনও অরণ্যকে ‘ব্যাঘ্র প্রকল্প’ হিসাবে ঘোষণা করতে হলে সেটির আয়তন কমপক্ষে ১৫০ বর্গ কিলোমিটার হতে হবে। ওরাং-এর আয়তন তার চেয়ে কম হওয়ায়, বাঘের ঘনত্ব বেশি থাকা সত্ত্বেও এখনই ওরাংকে ‘স্বাধীন ব্যাঘ্র প্রকল্প’ হিসেবে ঘোষণা করা সম্ভব নয়। |