বিনোদন দুর্গাপুরে দর্শক টানল প্রথম চলচ্চিত্র উৎসব
লকাতার পরে রাজ্যের অন্যতম বড় শহর দুর্গাপুর। শপিং মল থেকে ঝকঝকে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, কী নেই? কিন্তু এত দিন তার নিজের কোনও চলচ্চিত্র উৎসব ছিল না। সেই দুঃখ ঘোচাতে এ মুহূর্তে বাংলা ছবির সফলতম ও ব্যস্ততম নায়ক প্রসেনজিতের অভিনয় জীবনের ৩০ বছর পূর্তি উদ্যাপনকেই বেছে নিল প্রথম দুর্গাপুর চলচ্চিত্র উৎসব। প্রথম দিন প্রসেনজিৎকে দেখতে উপছে পড়েছিল ভিড়। তারপর ভিড়ে একটু ভাটা পড়লেও, মোটের উপর মানুষের আগ্রহ মন্দ নয় বলেই মনে করছেন উদ্যোক্তারা।
দুর্গাপুরে গত কয়েক বছরে নাটক এবং আরও নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। একটি চিত্রপ্রেমী সংগঠনও আছে। কিন্তু তেমন ভাবে চলচ্চিত্র উৎসব হত না। বহু আগে, যখন এমএএমসি কারখানা চালু ছিল তখন শুধু তাদের কর্মীদের জন্যই সংস্থার নিজস্ব প্রেক্ষাগৃহে ছবি দেখানো হত। সেখানে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার ছিল না। অথচ বর্ধমান বা শিলিগুড়ির মতো বহু শহরেরই নিজস্ব চলচ্চিত্রোৎসব রয়েছে। বাদ ছিল কেবল দুর্গাপুর।
সৃজনী প্রেক্ষাগৃহের পথে দর্শকেরা।— নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “এই শহর শুধু শিল্প-কারখানার নয়। দুর্গাপুরের সাংস্কৃতিক শিকড়ও বেশ গভীর। কাজেই এমন এক উৎসবের আয়োজন করতে পেরে আমরা খুশি।” তাঁর স্ত্রী অনিন্দিতাদেবী বলেন, “পুরসভার বোর্ড গঠনের পরেই নতুন কিছু করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করি। শান্তিনিকেতনের আদলে আমরা দোল উৎসব করেছিলাম। এখন চলচ্চিত্র উৎসবও করতে পেরে ভাল লাগছে। বিধানচন্দ্র রায়ের স্বপ্নের শহরকে আমরা আরও স্বপ্নমুখর করে তুলতে চাই।” অনিন্দিতা নিজেও ভোটে জিতে কাউন্সিলর হয়েছেন। অপূর্ববাবু এবং অনিন্দিতাদেবী, দু’জনেই ফিল্ম ফেস্টিভালে উৎসাহিত হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করে পুরসভা।
অন্য দিকে বেঙ্গলি ফিল্ম লাভার্স সোসাইটি তখন প্রসেনজিৎ-এর তিন দশক অভিনয় জীবনের পূর্তিতে কলকাতায় একটি ফিল্ম ফেস্টিভালের পর, জেলাগুলিতেও উৎসব করার সুযোগ খুঁজছিল। সোসাইটির সচিব জয়ন্ত ঘোষ বলেন, “পুরসভা আমাদের প্রশাসনিক সহায়তা দেয়। আর্থিক সহায়তার জন্য এগিয়ে আসে একটি বাংলা সিনেমা চ্যানেল। স্থানীয় একটি হোটেল আতিথেয়তার দায়িত্ব নেয়। এ ভাবেই আমরা শুরু করে দিই দুর্গাপুরের প্রথম ফিল্ম ফেস্টিভাল।” গত ৩১শে অগস্ট সিটি সেন্টারের সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে প্রসেনজিৎ নিজেই সেই উৎসবের সূচনা করেন। সঙ্গে ছিলেন টলিউডের এক ঝাঁক শিল্পী-পরিচালক। তার সাতটি ছবি নিয়ে এ বার হচ্ছে এই উৎসব।
এমন উৎসব আয়োজিত হওয়ায় খুশি শহরের চলচ্চিত্র প্রেমী নাগরিকেরা। তার মধ্যে সরকারি চাকুরে থেকে গৃহবধূ যেমন আছেন, কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও ভিড় করছেন। উৎসবে দেখানো হচ্ছে প্রসেনজিৎ অভিনীত স্বপ্নের দিন, ২২ শে শ্রাবণ, হাউস ফুল, চলো পাল্টাই, অপরাজিতা তুমি ও মনের মানুষ। ২২শে শ্রাবণ দেখে বেরিয়ে বি-জোনের রিমা ভুঁইয়া বললেন, “বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে কোনও দিন বর্ধমান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল দেখতে ছাড়িনি। বিয়ের পরে দুর্গাপুরে এসে সেটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এ বার এখানেও চলচ্চিত্র উৎসব হতে দেখে খুব ভাল লাগছে।”
পেশায় চিকিৎসক, নেশায় সাহিত্যিক শর্মিষ্ঠা দাসের মতে, এই উৎসব বহু দিনের খামতি মিটিয়ে দিল। দুর্গাপুরে বেশ কিছু নাট্যগোষ্ঠী নিয়মিত নাট্যচর্চা করে। এ বার ফিল্মের চর্চার সুযোগও তৈরি হল। কাল, বৃহস্পতিবার উৎসব শেষ হবে। তবে দুর্গাপুরের চলচ্চিত্র উৎসবও কি শেষ? “মেয়র বলেছেন, দুর্গাপুর চলচ্চিত্র উৎসব নিয়ে চিন্তা করতে,” বললেন জয়ন্তবাবু। “যদি তা করি, তা হলে নানা রকম ছবি থাকবে। এমন ধরনের উৎসবে উৎসাহ তৈরি করাও কিন্তু সময়ের ব্যাপার। এটা তারই সূচনা হল, বলতে পারেন।”

চলচ্চিত্র চন্দননগরে
চন্দননগরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আন্তজার্তিক মানের শিশু-কিশোর চলচ্চিত্র উৎসব। অগস্ট মাসের ৪টি রবিবার চন্দননগর ফরাসি মিউজিয়ামের অডিটোরিয়ামে ওই প্রদর্শনীর আয়োজন করে মানকুণ্ডু সৃষ্টি আর্ট অ্যাকাডেমি এবং নাটকীয় নামের দু’টি সংগঠন। কলকাতার ফরাসি তথ্যাগার আলিয়েজ ফ্রঁসোয়া দ্য বেঙ্গল সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার ফরাসি দূতাবাসের আধিকারিক গঁথিয়ে ক্র্যাঁ ও তাঁর স্ত্রী শার্লেন। ভারত, ফ্রান্স, বাংলাদেশ, ব্রাজিল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৮টি ছবি প্রদর্শিত হয়। এ দেশের ‘রানু’, ‘নন্দু কা রাজা’ এবং ‘গজ উকিলের হত্যা রহস্য’ দেখানো হয়। ২৫ তারিখে সমাপ্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চিত্রশিল্পী রণজিৎ পাল।


আসানসোল রবীন্দ্র ভবনে অনুষ্ঠিত হল মূকাভিনয়।

ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে অভিনেত্রী স্কারলেট জোহানসন। মঙ্গলবার। ছবি: রয়টার্স।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.